asianbangla.com

    Subscribe to Updates

    Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.

    What's Hot

    রফিকুল টাওয়ার হ্যামলেটসের পাবলিক গভর্নর হিসেবে পুনঃনির্বাচিত

    October 18, 2024

    দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার প্রতিবাদে লন্ডনে ইআরআইয়ের মানববন্ধন

    October 1, 2024

    আইসিটি মন্ত্রণালয়ের বিসিসি এবং এটুআইসহ দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রকাশ করে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিল শিক্ষার্থীরা

    August 20, 2024
    Facebook Twitter Instagram
    Trending
    • রফিকুল টাওয়ার হ্যামলেটসের পাবলিক গভর্নর হিসেবে পুনঃনির্বাচিত
    • দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার প্রতিবাদে লন্ডনে ইআরআইয়ের মানববন্ধন
    • আইসিটি মন্ত্রণালয়ের বিসিসি এবং এটুআইসহ দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রকাশ করে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিল শিক্ষার্থীরা
    • করিডোর চুক্তি বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে ইআরআইয়ের বিক্ষোভ সমাবেশ
    • ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করতে প্রয়োজন দেশপ্রেমিকদের ঐক্যবদ্ধ লড়াই : ফাইট ফর রাইট ইন্টারন্যাশনাল 
    • লন্ডনে রাইটস অফ দ্যা পিপলস এর ভারতীয় হাইকিমশন ঘেরাও কর্মসূচি
    • লণ্ডনে জিবিএএইচআর এর ইন্ডিয়ান হাইকমিশন ঘেরাও ও বিক্ষোভ সমাবেশ
    • বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় গণমানুষকে সোচ্চার হতে হবে
    Facebook Twitter Instagram
    asianbangla.comasianbangla.com
    Demo
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • বিশ্ব
    • রাজনীতি
    • অর্থনীতি
    • কূটনীতি
    • খেলা
    • প্রযুক্তি
    • সংস্কৃতি
    • উচ্চশিক্ষা
    • প্রবাস
    • মানবাধিকার
    • মতামত
    • সারা বাংলা
      • ঢাকা
      • চট্টগ্রাম
      • রাজশাহী
      • খুলনা
      • বরিশাল
      • ময়মনসিংহ
      • রংপুর
      • সিলেট
    asianbangla.com
    Home»স্মৃতিচারন»বহুমাত্রিক শেখ মুজিব
    স্মৃতিচারন

    বহুমাত্রিক শেখ মুজিব

    By এশিয়ান বাংলাMarch 17, 2018Updated:March 17, 2018No Comments0 Views
    Facebook Twitter Pinterest LinkedIn WhatsApp Reddit Tumblr Email
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Pinterest Email

    প্রাক-নির্বাচনী প্রচারে বাংলাদেশ (তখন পূর্ব পাকিস্তান) উত্তাল। আওয়ামী লীগের প্রধান প্রচারক শেখ মুজিবুর রহমান। দেশের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে ছুটে যাচ্ছেন। কথা বলছেন, হুঙ্কার দিচ্ছেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে। সবাইকে এক হয়ে সামরিক সরকার এবং পশ্চিম পাকিস্তানি রুলিং, অলিগার্কের বিরুদ্ধে জনগণকে কঠিন একাত্মতার জন্য উৎসাহ দিচ্ছেন। কখনো গাড়ি বা কখনো স্টিমারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এমনি এক যাত্রায় আমরা গেলাম নদীমাতৃক বরিশালে। হাইস্পিড তাদের একখানা বড় লঞ্চ দিয়েছিল বিশেষভাবে এ যাত্রায়। আমরা দু’জন সাংবাদিক বঙ্গবন্ধুর কামরার পাশের কামরায় স্থান পেলাম আর শ’খানেক কর্মী লঞ্চের বিভিন্ন এলাকায় স্থান নিলো। ঢাকা থেকে বরিশাল পথে পথে মিটিং হতে থাকল। একপর্যায়ে আমরা শেখ সাহেবকে বললাম, খবর পাঠাতে হলে আমরা সব মিটিংয়ে হাজিরা দিতে পারব না। যেহেতু টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা শুধু বরিশালেই, তাই সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এর সমাধান শেখ সাহেব নিজেই করে দিলেন। তিনি বললেন, ‘তোদের সব সিটিংয়ে যাবার দরকার নেই।’ সে মতে আমাদের মিটিং ভেনুগুলোতে আর যেতে হলো না। শুধু বড় দু’টি বা তিনটি মিটিংয়ে আমরা উপস্থিত ছিলাম। বঙ্গবন্ধু আমায় ডেকে কোন মিটিংয়ে কোন বিষয়গুলো উত্থাপন করবেন ব্রিফ করলেন। সে মোতাবেক বরিশাল নিয়ে টেলিগ্রাম ফাইল করে আবার লঞ্চে ফিরে এসে বঙ্গবন্ধুকে খবর কী পাঠালাম তা দেখাতাম।

    সে দিন বরিশালে টেলিগ্রাম ফাইল করে লঞ্চে ফিরে দেখি শেখ সাহেবের একান্ত কর্মী, যাকে আমরা মুন্সি বলে জানতাম; তার ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে। হেসে জিজ্ঞেস করলামÑ ‘কী মুন্সি, ব্যাগ নিয়ে কোথায়?’ সে বলল, ‘আমি চলে যাবো। এসব আমার সহ্য হয় না।’ এ কথোপকথনের মধ্যে শেখ সাহেব এক মিটিং শেষ করে ফিরে এলেন। মুন্সি তাকে সালাম করে বলল, ‘আমি আর আপনার চাকরি করব না। আপনি আপনার পলিটিক্স নিয়ে থাকুন। আমি চললাম।’ শেখ সাহেব কারণ জিজ্ঞেস করলে সে একই কথা বলছিল। তখন বঙ্গবন্ধু তাকে ধরে নিজের কামরায় নিয়ে গেলেন। সাথে আমরা ক’জনও গেলাম।
    কারণ হিসেবে মুন্সি বলল, ‘ওরা বারবার আপনার খাবার খেয়ে নেয়। এবার স্যুটকেস ভেঙে আপনার খাবার খেয়ে নিয়েছে।’ ঘটনা হলো বেগম মুজিব মুন্সিকে বঙ্গবন্ধুর খাবারের ব্যাপারে বিশেষ সতর্ক থাকতে বলেছিলেন। মুন্সি খাবারের সামান্য অংশ চেখে তা ক্ষতিকর কি না পরখ করে স্যুটকেসে বা সংরক্ষিত জায়গায় রেখে পাহারা দিত যতক্ষণ না শেখ সাহেব খাচ্ছেন। এবার লঞ্চে একটা স্যুটকেস নিয়ে গিয়েছিল খাবার সংরক্ষণের জন্য। কিন্তু তা সগীর নামের একজনের নেতৃত্বে কর্মীরা খেয়ে নেয় সে স্যুটকেসের তালা ভেঙে।
    এ কথা শুনে শেখ সাহেব ভীষণ রেগে গেলেন। এমন ক্ষুব্ধ তাকে কখনো দেখিনি। সগীরকে ডেকে পাঠালেন। তারা কয়েকজন আসতেই তিনি ফেটে পড়লেন। তিনি তাদের উদ্দেশে বললেন, ‘এখনি যদি তোরা বাক্স ভাঙতে পারিস, তাহলে ক্ষমতায় গিয়ে কি দেশটাকে খেয়ে ফেলবি?’ সগীর পরে জাতীয় সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় তিনি আততায়ীর হাতে নিহত হন।
    শেখ সাহেব কর্মীদের অবাধ্য ব্যবহারে ক্ষিপ্ত হতেন। তবে তার এখানে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া আমাকে অবাক করে ফেলে। রাজনৈতিক কর্মীরা নিজেদের অবাধ্য ব্যবহার দিয়ে প্রায়ই নিজেদের এজেন্ডাকে লক্ষ্যচ্যুত করে ফেলে আর গণতান্ত্রিক প্রচেষ্টাকে দুর্বল করে দেয়। এ ব্যাপারে জন কিন তার বিখ্যাত বইয়ে ভায়োলেন্স অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসি সম্পর্কে অত্যন্ত চমৎকার বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আধুনিক গণতন্ত্রের সাথে সঙ্ঘাত একেবারে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে। দলের কর্মীরাই তার প্রধান বাহক। তবে নেতৃত্বের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ইঙ্গিত না পেলে তারা অবাধ্য হতে পারে না। বলা হয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বাধ্য হন দলীয় কর্মীদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণ সহ্য করতে।
    তবে শেখ সাহেব সাহসিকতার সাথে যেকোনো রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতেন। তার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বড় প্রতিপক্ষও হকচকিয়ে যেত। একটি ঘটনা মনে পড়ে। তা ১৯৬২ সালের দিকে। আমি ছুটিতে বাড়ি গেছি। অফিস থেকে জানানো হলো শেখ সাহেব রাজশাহীতে মিটিং করবেন তা কাভার করার জন্য। শহরের মাঝখানে ভুবন মোহন পার্কে মিটিং। গিয়ে দেখি ডজন দেড়েক শ্রোতা কেবল এসেছে। আর শেখ সাহেব তার সঙ্গীদের নিয়ে উঁচু পাকা বেদিতে বসে। একজন প্রারম্ভিক বক্তৃতা দিচ্ছেন। রাস্তার পাশের এক হোমিওপ্যাথির দোকানে বসলাম মিটিং শোনার জন্য। হঠাৎ শুনলাম বেশ শব্দ। ভুবন মোহন পার্কটা খুব ছোট। চার দিকে ইটের দেয়াল। শুধু দু’টি লোহার দরজা। শব্দটা আসছিল সামনের রাস্তা থেকে, সেখানে মুসলিম লীগের এক যুবকর্মী প্রায় ২০০ লোক নিয়ে শেখ সাহেবের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিল। উদ্দেশ্য সম্ভবত শেখ সাহেবের মিটিংটা পণ্ড করা অথবা বিঘœ ঘটানো। শেখ সাহেব মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে হাত গুটিয়ে তার ভরাট গলায় মুসলিম লীগ কর্মীদের উদ্দেশ করে কঠোরভাবে বললেন, ‘তোমরা শেখ মুজিবকে চেনো না?’ তাদের তিনি স্থান ত্যাগের কথা বলে যেন তিনি বেদি থেকে আসছেন এমনভাবে পা বাড়ালেন। আশ্চর্য, স্লোগানরত মুসলিম লীগ কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল। হোমিওপ্যাথ ডাক্তার ওয়াহাবের দোকানে বসে পুরো ঘটনা দেখে অবিশ্বাস্য মনে হলো। ২০০ লোক একজন মানুষের দৃঢ় বক্তব্যের কাছে ভীত হয়ে পড়ল। আসলে শেখ সাহেবের সাহসিকতা, সহমর্মিতা এবং সাংগঠনিক গুণের কথা ছিল সর্বজনবিদিত। হয়তো সে প্রত্যয়ই ওই গম্ভীর চ্যালেঞ্জের মধ্যে নিহিত ছিল, যা প্রতিপক্ষকে ভীত করে তুলেছিল।
    পাকিস্তানের রাজনীতিতে শেখ সাহেব আসেন নতুন গতিতে, যার প্রতিফলন পড়ে তার সব আন্দোলনেই। তার ছয় দফা দাবি ছিল এরই একটি। অনেকেই বলেন, এটা বেসিক প্রিন্সিপলস ধারণার উত্তরসূরি। তবে তিনি নির্বাচনের ছিলেন একনিষ্ঠ সমন্বয়কারী। যখন পাকিস্তানের সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান নির্বাচন দিলেন, শেখ সাহেব তার নানা অসঙ্গতি উল্লেখ করেও এতে যোগদান করলেন। তবে মওলানা ভাসানী এবং আরো কয়েকটি দল এ নির্বাচনে যোগ দেয়নি। মওলানা শুরু করলেন জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন আর শেখ সাহেব সেখানে সারা দেশ ঘুরে তুললেন বিশাল নির্বাচনী জোয়ার। সে যাত্রায় শেখ সাহেব যাচ্ছিলেন জামালপুর এলাকায় প্রচারাভিযানে আর মওলানা যাচ্ছিলেন উত্তরবঙ্গে জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন চালু করতে। তাদের মোটর বাহিনীর দেখা হলো এক সংযোগস্থলে। থামল তাদের মোটর শোভাযাত্রা। শেখ সাহেব নেমে এসে মওলানাকে সালাম করে বললেন, ‘হুজুর, নির্বাচনী প্রচারে যাচ্ছি।’ মওলানা তার জবাবে জানালেন, ‘যাও, দোয়া করি। তবে ওরা (পাকিস্তানিরা) তোমাকে ক্ষমতা দেবে না। তোমায় রক্তের ওপর দিয়ে হেঁটে ক্ষমতায় যেতে হবে।’
    মওলানার বক্তব্য ভবিষ্যদ্বাণীই হলো। বিশাল রক্তপাতের মধ্য দিয়েই স্বাধীনতা এলো এবং শেখ সাহেব ক্ষমতায় গেলেন।
    শেখ সাহেবের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আমার প্রায়ই আমেরিকার স্বাধীনতা ঘোষণার লেখক থমাস জেফারসনের কথা মনে পড়ে। তিনি ঘোষণাপত্রটি লিখতেন এবং সহযোগীদের পড়ে শোনাতেন আবার কাটাকাটি করতেন। তার পরও ঘোষণাপত্রটিতে একটি ইংরেজি ভুল পাওয়া গেল যখন কংগ্রেসে পাস করে প্রকাশ করা হলো। শব্দটি হলোÑ ইনঅ্যালিয়েনবল। ভুলে গৃহীত হলোÑ আনঅ্যালিয়েবল। সেটাই রেখে দেয়া হলো। জেফারসন ক্রুদ্ধ হলেন না, বললেন ওই ভুলটুকু থেকে যাক। হয়তো বা সবাইকে নিয়ে চলতে হলে ছোট-বড় ভুল নিয়েই চলতে হয়, তিনি ভেবে থাকবেন। তবে জেফারসন লিখিত এই ঘোষণাপত্রের প্রথম লাইনটি যেন বিশ্বের সব স্বাধীনতাকামী মানুষের আবহমানকালের মনের কথা। এখানে উল্লেখ করা হয়েছে সৃষ্টিকর্তার ওপর বিশ্বাসের প্রয়োজনীয়তা এবং প্রতিটি মানুষের জীবন, স্বাধীনতা ও সুখের অšে¦ষণ তাদের জন্ম অধিকার, যা কেউ কেড়ে নিতে পারে না। সবাই সমান এবং সবার সম্মতির পরিপ্রেক্ষিতেই কেউ শাসনের অধিকার পাবে। এর কোনো কিছুর বিচ্যুতি ঘটলে জনগণের অধিকার থাকবে সে সরকারকে তৎক্ষণাৎ অপসারণ করতে। কোনো অত্যাচারী কখনো শাসনের উপযুক্ত নয় এবং তাকে সে ক্ষমতাও দেয়া যাবে না।
    শেখ সাহেব কখনো মার্কিন স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে আলোচনা না করলেও তার বক্তব্যে প্রতিফলিত হয়েছে এ ঘোষণার প্রত্যয় ও সত্যগুলো। কখনো কখনো জনগণের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে তিনি তাদের আমার মানুষ বলতেন। ডেভিড ফ্রস্টের সাথে তার বিখ্যাত ইন্টারভিউতে তিনি আমার মানুষদের কথা বারবার বলাতে ফ্রস্ট এ কথাটি বিশেষভাবে ভাবতে ভোলেননি।
    তার বিখ্যাত উক্তিÑ ‘চাটার দলের’ খাওয়ার কথা আসলে তার দেশের আপামর দুঃখী মানুষের প্রতি মমত্ববোধের এক প্রকাশ। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি নতুন দেশের লাখো সমস্যা নিয়ে বিব্রত এক নেতা দুনিয়ার সবার কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন এবং বিশ্বও সে ডাকে সাড়া দিয়েছিল। এক হিসাবে প্রায় ছয় বিলিয়ন ডলারের সাহায্য এসেছিল এ দেশের দুর্গত মানুষের জন্য, কিন্তু বাস্তবে তার চিহ্ন না দেখতে পাওয়ায় সব দিক থেকে প্রথমে গুঞ্জন, পরে প্রকাশ্য আলোচনা শুরু হলো। তখনই এক জনসভায় শেখ সাহেব বললেন, তিনি সবার নিকট থেকে ভিক্ষে করে আনেন আর চাটার দল তা খেয়ে যায়। এটা ছিল এক অসহায় নেতার আর্তনাদ। আসলে এই ধারা স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও নির্মূল হয়নি। যার ফলে বাংলাদেশকে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ওপরে স্থান দেয়া হয়েছিল। স্বাধীনতার ঊষালগ্নেই যদি এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যেত, তা হলে এই রোগ সমাজ ও ব্যক্তি জীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করতে পারত না। এখন এর বিস্তৃতি এবং কার্যকারিতা এমন সূক্ষ্ম স্তরে পৌঁছেছে যা দূর করতে হলে প্রয়োজন শক্তিশালী নৈতিক আন্দোলন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলেও সত্য, স্বাধীনতার পর থেকে সর্বস্তরের নেতাদের একাংশ তথাকথিত সেক্যুলারিজম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অবজ্ঞা এবং প্রতিরোধ করেছে। তাই আজ কেউ নৈতিকতার প্রশ্ন তুললেই তাকে অপাঙ্ক্তেয় বলে ফেলা হয়। অথচ খোদ সেক্যুলারিজমের স্বার্থ পশ্চিমা দেশগুলোতে নৈতিকতার চর্চা হয় জীবনের প্রতিটি স্তরে।
    বঙ্গবন্ধু কিন্তু নৈতিকতা বা ধার্মিকতাকে পরিহার করেননি, যা তার উত্তরসূরিদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। একবার শিক্ষাবিষয়ক আলোচনায় তিনি ড. এ আর মল্লিককে ডেকে পাঠান। তখন তিনি আমাদের এক ব্রিফিং দিচ্ছিলেন। ড. মল্লিক এক ফাইল নিয়ে এলে শেখ সাহেব এর বিষয় জানতে চাইলেন। ড. মল্লিক বললেন, এটা মাদরাসা শিক্ষা ও ইসলামিক একাডেমি বন্ধ করে দেয়ার প্রস্তাব। বঙ্গবন্ধু ফাইলটা নিয়ে ড. মল্লিককে জিজ্ঞেস করলেনÑ এ দেশে কয়টি মসজিদ আছে। তাকে ইতস্তত করতে দেখে বললেন, চার লাখ। এখানে যদি প্রতি শুক্রবার ১০০ জনের জামাত হয়, তাহলে এই এক স্বাক্ষরে তুই এ দেশের চার কোটি লোককে আমার শত্রু বানিয়ে দিলি। তিনি ফাইলটাতে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জন্য অনুমতি দিয়ে স্বাক্ষর করলেন। তিনি বললেন, প্রয়োজন হলে এর সংস্কার কর। তাই বলে জনগণের বিশ্বাস ও নৈতিকতাতে হাত দিবি না। তার সে নির্দেশ তার উত্তরসূরিরা ভুলে গেল এবং দেশের গরিষ্ঠ জনগণের কাছে বিশাল প্রশ্ন হয়ে রইল।
    একবার সম্ভবত কুমিল্লা বা ব্রাহ্মণবাড়িয়া গেছেন। কাজের ফাঁকে কৃষিজমির মধ্য দিয়ে হাঁটছিলেন। ভিড়ের মধ্য থেকে এসে এক মধ্য বয়সী মহিলা সাহায্যের জন্য হাত পাতলেন। শেখ সাহেব বিব্রত হলেন, কারণ তার পকেটে কোনো টাকা ছিল না। একজন তার হয়ে মহিলাকে সাহায্য করলেন। সেখানে একটা নোটের শেখ সাহেবের ছবির ওপর হাত দিয়ে মহিলা দোয়া করলেন। সে কথা শেখ সাহেব শুনতে পেয়েছিলেন কি না জানি না, তিনি স্মিত হেসে বললেনÑ ‘ওরা আমার ছবি ওখানে দিয়েছে।’ সে পরিদর্শনের সময় শেখ সাহেব কৃষি অফিসারকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন ফসল বৃদ্ধি এবং ডাইভারসিফিকেশন কোনো কার্যক্রম চলছে কি না। তিনি সজাগ ছিলেন এ অঞ্চল খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়।
    সচিবালয়ে যখন শেখ সাহেব বসতেন, তখন প্রতিদিনই কোনো-না-কোনো মজার ঘটনা ঘটত। একবার প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির এক বেঁটে খাটো কর্মকর্তা (যিনি পরবর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েছিলেন) বিনা অ্যাপয়েন্টমেন্টে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের জন্য চাপাচাপি শুরু করল। তখন শেখ সাহেবের পিআরও ছিলেন হাসেম সাহেব। তিনি তাকে বললেন, ‘একটু বসুন। এখনি একজন আসবেন সাক্ষাতের জন্য। তার পরে প্রধানমন্ত্রী অনুমতি দিলে আপনি দেখা করবেন।’ হাসেম সাহেব তার বাক্য শেষ করতে না করতেই শিক্ষক ভদ্রলোক যেন ¯িপ্রংয়ের মতো লাফিয়ে উঠে দ্রুত দরজা খুলে প্রধানমন্ত্রীর অফিস কামরায় ঢুকে পড়লেন। সবচেয়ে মজার ঘটনা তখনি ঘটল। পরের মিনিটেই আমরা দেখলাম, শেখ সাহেব আক্ষরিকভাবে তার ঘাড় ধরে ঠেলতে ঠেলতে কামরার বাইরে রেখে গেলেন। আমাদের দিকে তাকিয়ে শিক্ষক ভদ্রলোক তার শার্ট ঝাড়তে ঝাড়তে বললেন, ‘বঙ্গবন্ধু তো আমায় ভালোবাসেন, তাই।’ পরে হাসেম ভাই ব্যাপারটা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশ্লেষণ করতে গেলে শেখ সাহেব তাকে বলেন- ‘আমি তোমাদের কথোপকথন শুনেছিলাম। এরা কোনো এটিকেট, নিয়ম মানতে চায় না। তাহলে ভালো মানুষ পয়দা করবে কী করে।’ যদিও বলা হয় শেখ সাহেব এটিকেটের ধার ধারতেন না, সেটা পুরোপুরি সত্য নয়। যেখানে যে নিয়ম তা যদি গণবিরোধী না হয়, তা মানতে সবাইকে বলতেন। বিশেষ করে স্ট্রেটক্রাস্টে।

    আলমগীর মহিউদ্দিন

    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Telegram Email
    এশিয়ান বাংলা

    Related Posts

    আইসিটি মন্ত্রণালয়ের বিসিসি এবং এটুআইসহ দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রকাশ করে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিল শিক্ষার্থীরা

    August 20, 2024

    জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পর্কে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের লেখা ও স্মৃতিচারণ

    May 30, 2021

    ইলিয়াস আলী কী ফিরবেন ?

    April 18, 2021

    Comments are closed.

    Demo
    Top Posts

    আইসিটি মন্ত্রণালয়ের বিসিসি এবং এটুআইসহ দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রকাশ করে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিল শিক্ষার্থীরা

    August 20, 202493

    সেনা হত্যার মাধ্যমে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে শেখ হাসিনা

    March 1, 202466

    দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার প্রতিবাদে লন্ডনে ইআরআইয়ের মানববন্ধন

    October 1, 202441

    বাংলাদেশ নতুন নির্বাচনের দাবীতে লন্ডনে ইআরআইয়ের মানব বন্ধন

    February 19, 202437
    Don't Miss

    রফিকুল টাওয়ার হ্যামলেটসের পাবলিক গভর্নর হিসেবে পুনঃনির্বাচিত

    By এশিয়ান বাংলাOctober 18, 20242

    স্টাফ রিপোর্টার  টাওয়ার হ্যামলেটসের জন্য ইস্ট লন্ডন ফাউন্ডেশন ট্রাস্টে (ইএলএফটি) তাদের পাবলিক গভর্নর হিসেবে রফিকুল…

    দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার প্রতিবাদে লন্ডনে ইআরআইয়ের মানববন্ধন

    October 1, 2024

    আইসিটি মন্ত্রণালয়ের বিসিসি এবং এটুআইসহ দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রকাশ করে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিল শিক্ষার্থীরা

    August 20, 2024

    করিডোর চুক্তি বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে ইআরআইয়ের বিক্ষোভ সমাবেশ

    July 9, 2024
    Stay In Touch
    • Facebook
    • Twitter
    • Pinterest
    • Instagram
    • YouTube
    • Vimeo

    Subscribe to Updates

    Get the latest creative news from SmartMag about art & design.

    Demo
    Facebook Twitter Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp TikTok
    © 2025 AsianBangla. Designed by AsianBangla.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Go to mobile version