এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : দুদেশের সরকারের উদ্যোগের পরও বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বাস্তবে কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব সলিল শেঠি বৃহস্পতিবার সকালে শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে গেলে তিনি একথা বলেন।
পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর এবং দুদেশের মন্ত্রী পর্যায়ের সফরের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু, বাস্তবে কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না।’
রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে গত বছরের ২৩ নভেম্বর সম্মতিপত্রে সই করে দুই দেশ।
বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চির পক্ষে তার দপ্তরের মন্ত্রী কিয়া তিন্ত সোয়ে এ বিষয়ে একটি সম্মতিপত্রে (অ্যারেঞ্জমেন্ট) সই করেন।
সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে পালিয়ে আসা চার লাখের মত রোহিঙ্গা গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে। আর গত ২৫ অগাস্ট রাখাইনে নতুন করে দমন অভিযান শুরুর পর আরও সোয়া ছয় লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে।
জাতিসংঘ ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ বলে আসছে। আর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই রোহিঙ্গা সঙ্কটকে এশিয়ার এ অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সমস্যা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন করার কথা উল্লেখ করে বলেন, এপর্যন্ত প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তার সরকার রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার বিষয়ে বিশেষ নজর রাখছে।
মিয়ানমারেই রোহিঙ্গা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে মন্তব্য করে সলিল শেঠি বলেন, রোহিঙ্গারা যেন নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সেজন্য তাদের কাজ অব্যাহত রেখেছে। “মিয়ানমারে যা হয়েছে তা, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অপরাধ।” শেঠি বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য বিশ্বজুড়ে জনমতের চাপ সৃষ্টি করতে হবে। মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান এসময় উপস্থিত ছিলেন।