এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে। তার চিকিৎসার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে গঠিত মেডিকেল বোর্ড যে ব্যবস্থাপত্র দিয়েছে সে অনুযায়ীই তিনি ওষুধ খাচ্ছেন।
তিনি এখন যেসব ওষুধ খাচ্ছেন সেগুলোর মধ্যে আছে- ফ্লেক্সি-১০০ মিলিগ্রাম (তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার ওষুধ), সার্জেল-২০ মিলিগ্রাম (গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যার ওষুধ), মায়ালাক্স-৫০ (বয়সজনিত রোগের ওষুধ) এবং ব্যথা নিরাময়ের আরও একটি ওষুধ তিনি গ্রহণ করছেন।
বুধবার বিকালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের চিকিৎসক ডা. মাহমুদ হাসান শুভ এসব তথ্য জানান।
ডা. শুভ বলেন, প্রয়োজন হলে নিশ্চয়ই আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। বিশেষজ্ঞ মেডিকেল বোর্ড যে ধরনের পরামর্শ দেবে সে অনুযায়ীই তার চিকিৎসা চলবে। তবে রক্ত পরীক্ষা এবং এক্স-রে রিপোর্ট পাওয়ার পর মেডিকেল বোর্ড এখনও নতুন কোনো পরীক্ষার নির্দেশনা দেয়নি। বিশেষজ্ঞ মেডিকেল বোর্ড যে ব্যবস্থাপত্র দিয়েছে তা খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা দেখেছেন। ওই ব্যবস্থাপত্রের প্রতি তাদের আস্থার কথা জানানোর পরই খালেদা জিয়া সেসব ওষুধ খাওয়া শুরু করেন।
বিশেষজ্ঞ মেডিকেল বোর্ডের সভাপতি ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. শামসুজ্জামান শাহীন যুগান্তরকে জানান, আমরা প্রায় দুই সপ্তাহ আগে খালেদা জিয়াকে দেখেছি। তখন তার যে অবস্থা দেখেছিলাম সে অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্র দিয়েছি। তখন রক্ত পরীক্ষা ও এক্স-রে করার সুপারিশ করেছিলাম।
তিনি বলেন, পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর সে অনুযায়ী সুপারিশ করেছি এবং প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। এরপর সরকার বা কারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আর কোনো সাড়া পাইনি। তাই আমার পক্ষে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে কিছু বলা একেবারেই সম্ভব না। তবে সরকার বা কারা কর্তৃপক্ষ যদি আমাকে ডাকে তবে খালেদা জিয়াকে দেখে সে অনুযায়ী শারীরিক অবস্থার মূল্যায়ন করতে পারব।
ডা. শামসুজ্জামান শাহীন বলেন, আমরা খালেদা জিয়াকে দেখার পর যে ধরনের রোগের কথা অনুমান করেছিলাম, পরীক্ষায় সে ধরনের রোগই ধরা পড়েছে। তিনি রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অস্টিও আর্থ্রাইটিস ও লাম্বারে ব্যথায় ভুগছেন।
তার সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা যেসব ওষুধ দিয়েছেন, সেসব খেয়ে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। তবে বয়সজনিত কারণে তার উন্নতি সেভাবে চোখে পড়ছে না।
বাসা থেকে পুলিশ প্রত্যাহার : কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বুধবার বিকালে খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসা ‘ফিরোজার’ সামনে থেকে তাদের প্রত্যাহার করা হয় বলে জানান চেয়ারপারসনের প্রেস উইং শামসুদ্দিন দিদার।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) প্রটেকশন বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) এনামুল হক মিঠু যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জানাবেন উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান এবং উপ-কমিশনার (প্রটেকশন) হামিদা পারভীন।
বুধবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হামিদা পারভীনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেন, ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে কথা বলা ছাড়া এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারব না। তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি।
চেয়ারপারসনের প্রেস উইং শামসুদ্দিন দিদার জানান, দীর্ঘদিন ধরে এএসআই জাফরের নেতৃত্বে তিনজন কনস্টেবলসহ চারজন পুলিশ সদস্য চেয়ারপারসনের বাসার সামনে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।