এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : আবদুর রাজ্জাকের চূড়ায় ওঠার দিনে ব্যাটিংয়ে উজ্জ্বল এনামুল হক ও ইমরুল কায়েস। উত্তরাঞ্চলকে দুই সেশনে গুটিয়ে দেয়া দক্ষিণাঞ্চলকে দৃঢ় ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছেন এ দুই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান। এনামুল হক জুনিয়রকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিবার পাঁচ উইকেট নেয়ার রেকর্ড গড়েছেন বাঁ-হাতি স্পিনার রাজ্জাক। তার দারুণ বোলিংয়ের পর অপরাজিত দুই ফিফটিতে দলকে দারুণ শুরু এনে দিয়েছেন এনামুল ও ইমরুল। মঙ্গলবার বিসিএলের ষষ্ঠ ও শেষ রাউন্ডের প্রথমদিনের খেলা শেষে দক্ষিণাঞ্চলের সংগ্রহ এক উইকেটে ১১৫ রান। এনামুল ৫২ ও ইমরুল ৫১ রানে ব্যাট করছেন। অবিচ্ছিন্ন দ্বিতীয় উইকেটে দু’জন গড়েছেন ৯৩ রানের জুটি। প্রথম ইনিংসে উত্তরাঞ্চলকে ১৮৭ রানে গুটিয়ে দেয়া দক্ষিণাঞ্চল ৭২ রানে পিছিয়ে।
টাইফয়েডের জন্য উত্তরাঞ্চল দলে নেই আগের ম্যাচের জয়ের নায়ক ইয়াসিন আরাফাত। সেই ম্যাচে তার সমান সাত উইকেট নেয়া আরেক পেসার ছিটকে গেছেন কুঁচকির চোটে। তাদের অভাব অনুভব করেছে জহুরুল ইসলামের দল। শফিউল ইসলাম দ্রুত ভাঙেন দক্ষিণাঞ্চলের উদ্বোধনী জুটি। এলবিডবুর ফাঁদে ফেলেন একটি করে ছক্কা-চার হাঁকানো সৌম্য সরকারকে।
বাকি সময় আর কোনো সাফল্য নেই। দারুণ ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নেন এনামুল ও ইমরুল। দু’জনের ব্যাটিংয়ের শুরুটা হয় দু’রকম। নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন এনামুল। শুরু থেকেই শট খেলেছিলেন ইমরুল। ইমরুলের যখন ৪৪ রান তখন এনামুলের ৩২। চার-ছক্কা হাঁকিয়ে তিনি আগে পৌঁছেন ফিফটিতে। খানিক পর ৫০ পেয়ে যান ইমরুলও। ৭৯ বলে খেলা এনামুলের ৫২ রানের ইনিংসে তিনটি চারের পাশে ছক্কা দুটি। সমান বলে ৫১ রান করতে সাতটি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান ইমরুল।
এর আগে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি উত্তরাঞ্চলের। চার বছর পর বিসিএলে খেলতে নেমে নিজের দ্বিতীয় ওভারেই ছোবল দেন মাশরাফি মুর্তজা। ফিরিয়ে দেন জুনায়েদ সিদ্দিকীকে। প্রথম ঘণ্টায় সাত ওভারের স্পেলে ব্যাটসম্যানদের ভোগান মাশরাফি। ছোট রানআপেও নতুন বলে যথারীতি ভীতি ছড়ান অভিজ্ঞ এই পেসার।
শুরুতে এলোমেলো বোলিং করা কামরুল ইসলাম রাব্বির জায়গায় বোলিংয়ে এসে নিজের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট পান সাকলাইন সজীব।
বাঁ-হাতি এই স্পিনারের লাফিয়ে ওঠা বলে পুল করতে গিয়ে মিড-অনে রাব্বির হাতে ধরা পড়েন মিজানুর। ১৯তম ওভারে আক্রমণে আসেন
রাজ্জাক। বোলিংয়ে দেরিতে এলেও সাফল্য পেতে দেরি হয়নি তার। জহুরুল ইসলামকে বোল্ড করে মেডেন উইকেট দিয়ে শুরু। পরের ওভারে এলবিডবুর ফাঁদে ফেলেন ধীমান ঘোষকে।
দুই বাঁ-হাতি স্পিনার রাজ্জাক ও সাকলাইনের দারুণ বোলিংয়ে ৭৬ রানে পাঁচ উইকেট হারায় উত্তরাঞ্চল। আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তারা। দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন রাজ্জাক। ছক্কা হাঁকিয়ে রানের খাতা খোলা আরিফুল হককে বোল্ড করেন তিনি। এক প্রান্তে আগলে রাখা নাজমুল হোসেন শান্ত ৫০ স্পর্শ করেন রাব্বির বলে চারে। এই তরুণ টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান পরের বলেই কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরে যান। এরপর দলকে প্রায় একাই টানেন সোহরাওয়ার্দী শুভ। তাকে খানিকটা সহায়তা করেন ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান শফিউল ইসলাম। দশম উইকেটে দু’জন গড়েন ৪২ রানের জুটি। প্রথম ইনিংসে এটাই উত্তরাঞ্চলের সেরা জুটি।
মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ানো এই জুটি ভাঙেন এক প্রান্তে টানা ২০.৩ ওভারের স্পেল করা রাজ্জাক। শফিউলকে ফিরিয়ে নেন নিজের পঞ্চম উইকেট। এই উইকেট নিয়ে এনামুল হক জুনিয়রকে পিছনে ফেলেন তিনি। নিজের করে নেন বাংলাদেশের বোলার হিসেবে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশিবার পাঁচ উইকেট নেয়ার রেকর্ড। ৫৩ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের সেরা বোলার রাজ্জাক। এ নিয়ে ৩৩ বার পাঁচ উইকেট নিলেন তিনি। এনামুল হক জুনিয়র নিয়েছেন ৩২ বার। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।