আমারদেশ লাইভ এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : পাকিস্তানের কর্মকর্তারা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্ষুদ্র কিন্তু কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ মাছ ধরার বন্দর গোয়াদরকে একটি শুল্কমুক্ত বন্দর ও মুক্ত বাণিজ্যিক অঞ্চল বা পাকিস্তানের দুবাইয়ে পরিণত করার স্বপ্ন দেখছেন। ইরানের কাছে পারস্য উপসাগরের মুখে আরব সাগরতীরে অবস্থিত গোয়াদর বন্দরটি উচ্চাভিলাসী চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) প্রকল্পের অংশ হিসেবে একটি আঞ্চলিক বাণিজ্যিক, শিল্প ও জাহাজ চলাচলের কেন্দ্রে পরিণত করা হচ্ছে।
করিডোরটি তৈরির লক্ষ্য হচ্ছে পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য ও তার বাইরের অঞ্চলের সাথে চীনের সংক্ষিপ্ত ও আরো নিরাপদ বাণিজ্যপথ নিশ্চিত করা এবং সেই সাথে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন। বর্তমানে পাকিস্তান উপকূলের ধুলাময় ‘পরবর্তী দুবাই’এর মূল দুবাইয়ের সাথে কেবল মিল এর পানির স্বল্পতা।
স্থানীয় সাংবাদিক সাজিদ বালুচ বলেন, কারণ গত তিন বছর ধরে এখানে বৃষ্টি হয় না। বেলুচিস্তান প্রাদেশিক সরকারের অধীনে গোয়াদর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাথে কর্মরত আব্দুর রহিম বলেন, গোয়াদরের তৃষ্ণায় আবহাওয়া পরিবর্তন ভূমিকা পালন করছে। তিনি বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এখানে বৃষ্টি হচ্ছে না, অথচ এখানে প্রত্যেক মওসুমেই প্রায়ই বৃষ্টিপাত হতো। এ কারণে এখানে মিষ্টি পানির অভাব দেখা দিয়েছে।
এর কাছে অবস্থিত আকরা কাউর জলাধারটি দুই বছর আগেই শুকিয়ে গেছে। তাই এখন অনেক দূরবর্তী উৎস থেকেই এখানে পানি আনতে হবে। কেউ কেউ দূষিত পানি আনছেন। এতে হেপাটাইটিসের মতো পানিবাহিত রোগ দেখা দিচ্ছে। আব্দুর রহিম বলেন, গোয়াদরের মাটির নিচ থেকে পানি তোলার কোনো সুযোগ নেই। কারণ সেখানকার ভূগর্ভের সব পানিই লোনা।
প্রসার ঘটছে দ্রুত
আরব সাগরের মধ্যে ঢুকে যাওয়া হাতুড়ি আকৃতির উপদ্বীপটির প্রকল্পের প্রথম ধাপটি শেষ হওয়ার পর জনসংখ্যা হবে এক লাখ। কিন্তু উন্নয়ন কাজ চলতে থাকবে এবং এ জনসংখ্যা বেড়ে ২০২০ সালে দাঁড়াবে পাঁচ লাখ। উপদ্বীপটির এক পাশে চীনের নির্মিত গভীর সমুদ্র বন্দর অন্য পাশে পোতাশ্রয়।
বন্দরটি চালু হওয়ার আগে অঞ্চলটির বাসিন্দাদের প্রধান আয়ের উৎস ছিল মাছ ধরা। অনেকেই বলছেন, সরকারের এই উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে তাদের ভাগ্যের খুব বেশি পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না তারা। রসুল বক্স নামে এক জেলে জানান, সড়ক পথে দুই ঘণ্টা দূরত্বে মিরানি বাঁধ থেকে তাদের জন্য খাবার পানি আসে। যদিও পানিবাহী ট্যাংকারগুলো মাসে এক বা দুই বারের বেশি আসে না। নিয়মিতই তাদের সুপেয় পানির অভাব থাকে বলে জানান তিনি।
পানি সরবরাহ বৃদ্ধির উদ্যোগ : চীনা বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় সমুদ্রের পানি পানযোগ্য করতে গোয়াদর বন্দরে ইতোমধ্যেই দু’টি প্ল্যান্ট তৈরি করা হয়েছে। বড়টিতে প্রতিদিন চার লাখ এবং ছোটটিতে দুই লাখ গ্যালন পানি বিশুদ্ধ করা হয়। বিদ্যুৎ সরবরাহের স্বল্পতার কারণে দু’টি প্রকল্পই জেনারেটরনির্ভর।