এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : পূর্বাচলে জাতীয় ক্রীড়া কমপ্লেক্সের ৩৭.৪৯ একর জমি দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি)। সেখানে ‘শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কমপ্লেক্স’ নির্মাণ করবে বিসিবি। ব্যয় হবে কমপক্ষে ছয়শ’ কোটি টাকা। এ বছর ক্রিকেট কমপ্লেক্সের কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে।
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে এক নম্বর সেক্টরে ৩৭.৪৯ একর জমি রাখা হয়েছিল জাতীয় ক্রীড়া কমপ্লেক্সের জন্য। সেই সঙ্গে আরও ২২ একর জমি ছিল ক্রিকেট কমপ্লেক্সের জন্য। কিন্তু প্রকল্পের গাজীপুর প্রান্তে ক্রিকেট কমপ্লেক্সের জন্য নির্ধারিত ২২ একরে বনভূমি রয়েছে। পরিবেশবাদীরা বনভূমি রক্ষার জন্য উচ্চ আদালতে মামলা করেন। আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বনভূমি রক্ষা করে ওই জমিতে ক্রিকেট কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) সরে আসে। ফলে বিসিবি ক্রীড়া কমপ্লেক্সের জমির ওপর ক্রিকেট কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দাবি করে। বিসিবির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় প্রথমে ১৭ একর জমি দিতে চেয়েছিল। বাকি ২০.৪৯ একর জমিতে ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। সে মোতাবেক গত ১৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ক্রিকেট বোর্ড আপত্তি জানানোয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিষয়টি পুনরায় সারসংক্ষেপ পাঠানোর জন্য বলা হয়। গত ২৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক মোশাররফ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে এই অনুরোধ করা হয়। সে পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদারের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিসিবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান এমপি, যুব ও ক্রীড়া সচিব আছাদুল ইসলাম, যুগ্ম সচিব ওমর ফারুক, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মাসুদ করিমসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভা সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রণালয় পুরো ৩৭.৪৯ একর জমি বিসিবিকে বরাদ্দের ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ব্যাপারে সারসংক্ষেপ তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সেই সঙ্গে পূর্বাচল নতুন শহরে জাতীয় ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য পৃথক জমি বরাদ্দের ব্যাপারে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হবে।
সূত্র জানায়, সভায় দেশের বিভিন্ন ক্রিকেট স্টেডিয়াম ব্যবহারের যে চুক্তি বিসিবির সঙ্গে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের রয়েছে, তা নবায়ন করা হবে। প্রত্যেকটি স্টেডিয়ামের ব্যাপারে পৃথক চুক্তি হবে। ওই চুক্তিনামায় স্টেডিয়াম ব্যবহারের নীতিমালা, সংস্কার কাজের ব্যয়ভার কারা বহন করবে, তা বিস্তারিত উল্লেখ থাকবে। সেই সঙ্গে বিসিবির কাছে গেটমানিসহ ক্রীড়া পরিষদের অন্যান্য পাওনা মিটিয়ে দেয়ার ব্যাপারে সভায় আলোচনা হয়েছে।
সূত্র জানায়, জমি বরাদ্দ পাওয়ার পরপরই বিসিবি শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কমপ্লেক্সের কাজ শুরু করবে। কমপ্লেক্সে একটি ক্রিকেট স্টেডিয়াম, প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড, একাডেমির সঙ্গে পাঁচতারকা হোটেল নির্মাণ করা হবে। যার জন্য ব্যয় হবে কমপক্ষে ছয়শ’ কোটি টাকা। কমপ্লেক্সের নকশা তৈরি করা হয়েছে। নৌকার আদলে তৈরি হবে স্টেডিয়াম। প্রধানমন্ত্রী নকশা অনুমোদন করলেই বিসিবি চলতি বছর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবে। সভা শেষে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পূর্বাচলে ক্রিকেট কমপ্লেক্স নির্মাণ হবে, এটা চূড়ান্ত। কতটুকু জমি লাগবে কিংবা প্রয়োজনীয় ব্যাপারগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করে ঠিক করব। এতে কোনো সমস্যা হবে না। ক্রিকেট কমপ্লেক্স বিসিবিই নির্মাণ করবে।’