এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গোমর ফাঁস করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা যতদিন বাঁচবেন ততদিন তিনি ক্ষমতায় থাকবেন। বিএনপির আর জনগণের কাছে যাওয়ার কোনো মুখ নেই। বিএনপির করুণ দশার একটাই কারণ, তাদের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা হত্যা-খুনের রাজনীতিতে জড়িত। তারেক রহমানের সব চিন্তা-চেতনা তার বাবার মতো খুনের রাজনীতি। খালেদা জিয়ার দুর্নীতি-হত্যার রাজনীতি জনগণ আর চায় না। জননেত্রী শেখ হাসিনা যতদিন জীবিত আছেন, ততদিন পর্যন্ত জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে ক্ষমতায় থাকবে, জননেত্রী শেখ হাসিনা ততদিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন।’
বুধবার গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চের কাজী বশির মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি বায়েজিদ আহম্মেদ খানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের পরিচালনায় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু, মহানগর দক্ষিণের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির, সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান আনিস, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান রানা, ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, সম্মেলনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাকসুদ রানা মিঠু প্রমুখ। মাহাবুবউল আলম হানিফ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘পাকিস্তানের নাগরিক’ উল্লেখ করে বলেন, ‘মির্জা ফখরুল বলেছেন, তারেক রহমান জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক। মিথ্যাচার করবেন না। তারেক রহমানের জন্ম হয়েছিল পাকিস্তানের করাচিতে। জন্মসূত্রে নাগরিক হলে তারেক রহমান পাকিস্তানের নাগরিক। বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’ তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব নিজে মিথ্যাচার করে অন্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলার অভিযোগ আনছেন, এজন্য তার প্রতি জাতির ধিক্কার ছাড়া আর কিছুই করার নেই।
বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেনের উদ্দেশে হানিফ বলেন, ‘মোশাররফ হোসেন সাহেব বললেন যে তারেক রহমানকে আইনি হত্যা করার চেষ্টা করছে সরকার। আইনি হত্যা বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন? আইনের মাধ্যমে সঠিক বিচার হলে তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তারেক রহমানের সর্বোচ্চ দণ্ড হতে পারে- এ ধারণা করছেন? তার মানে কি আপনারা নিজেরাও প্রমাণ করছেন যে তারেক রহমান একজন খুনি?’ বিএনপি এখন মিডিয়ার কল্যাণে বেঁচে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপির জনগণের কাছে যাওয়ার আর কোনো মুখ ও সাংগঠনিক শক্তি নেই। প্রতিদিন তারা সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অস্তিত্বকে জানান দিচ্ছে। বাংলাদেশের কোনো অপশক্তির শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করার ক্ষমতা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা যতদিন জীবিত আছেন, যতদিন কর্মক্ষম আছেন- ততদিন পর্যন্ত তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে। জননেত্রী শেখ হাসিনাই ততদিন বাংলার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকবেন। এ বাংলাদেশের কোনো অপশক্তির ক্ষমতা নেই তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করার।’
তিনি বলেন, অশুভ শক্তি বিদেশি মদদ নিয়ে আবারও অশুভ তৎপরতা চালানোর চক্রান্ত করতে পারে। দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থেকে এদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার আহ্বান জানান এ আওয়ামী লীগ নেতা।
সরকারের ওপর কোনো চাপ নেই দাবি করে হানিফ বলেন, সরকার জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আছে, আগামী নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আবারও ক্ষমতায় আসবে। এ দেশের জনগণ খালেদা জিয়া ও তার দুর্নীতিবাজ পুত্রের নেতৃত্বে হত্যা-সন্ত্রাসের রাজনীতি দেখতে চায় না। তাই ২০১৮ সাল নয়, ২০২৪ সালে নয়, ২০২৯ সালের পরে তাদের ক্ষমতায় আসার জন্য ভাবনা করতে হবে। এ সময় তিনি আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশে হানিফ বলেন, যে আদর্শ নিয়ে, যে চেতনা নিয়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, যে আদর্শ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু নিজের জীবন দিয়েছেন- আজকে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রতি পদে পদে আমাদের বাধার সম্মুখীন হতে হয়।
কারণ, আমাদের প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী শক্তি বসে আছে। তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী, ভাইদের অনুরোধ করব, আসুন নির্বাচনের আগে অশুভ শক্তির সব ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় নিয়ে আসি।’