এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : ‘টেস্ট খেলুড়ে দেশ হতে আমরা ১৪১ বছর অপেক্ষা করেছি। আরও একটা দিনে কী আসে–যায়…দেখা হবে কাল।’
বৃষ্টির প্রকোপে প্রথম দিন ভেসে যাওয়ার পর আইরিশ ক্রিকেটার অ্যাসোসিয়েশন থেকে চমৎকার এই টুইট করা হয়েছিল। অপেক্ষাটা কালই ফুরিয়েছে, কাল ক্রিকেটের কুলীন দলে নাম লিখিয়েছে আয়ারল্যান্ড। কিন্তু দ্বিতীয় দিনে (কাগজে-কলমে তৃতীয়) এসে টেস্টের আসল রূপটাও দেখে ফেলেছে আইরিশরা। পাকিস্তানি পেসারদের তোপের মুখে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৩০ রানে অলআউট হয়েছে আয়ারল্যান্ড।
এমন হতাশার দিনেও একটি সান্ত্বনা খুঁজে নিতে পারে স্বাগতিক দল। পাকিস্তানের বিপক্ষে ফলোঅন এড়াতে না পারলেও লজ্জার একটি রেকর্ড ঠিকই এড়িয়েছে আয়ারল্যান্ড। অভিষেক টেস্টে সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ডটি শত বছরের পুরোনো। উনিশ শতকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকে প্রথম ইনিংসে ৮৪ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। শুরুটা যেমন হয়েছিল, তাতে সে রেকর্ড নতুন করেই লেখা হবে বলে মনে হচ্ছিল। আইরিশরা শুধু দক্ষিণ আফ্রিকা নয়, নিউজিল্যান্ডকেও (১১২) টপকেছে। অথচ সর্বনিম্ন স্কোরের রেকর্ড এড়াতে পারলেও সবচেয়ে বাজে শুরুর রেকর্ড করেছিল দলটি।
৯ উইকেটে ৩১০ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছিল পাকিস্তান। জবাবে প্রথম ওভারটা ভালোই কাটল আয়ারল্যান্ডের। প্রথম ৫ রানও এল ভালোভাবে। মোহাম্মদ আব্বাসের বলে এড জয়েস লাইন মিস করে এলবিডব্লু হতেই ঝামেলার শুরু। স্কোরবোর্ডে আর কোনো রান যোগ হওয়ার আগেই ড্রেসিংরুমমুখী হলেন ব্যালবার্নি ও পোর্টারফিল্ড। রেকর্ডটা হলো তখন। অভিষেক টেস্টে এত কম রানে অন্য কোনো দল প্রথম ৩ উইকেট হারায়নি। সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড যাদের, সেই দক্ষিণ আফ্রিকারও তৃতীয় উইকেট পড়েছিল ১০ রানে। আর নিউজিল্যান্ডে করেছিল ১৫ রান। এর ঠিক উল্টো দিকেই জিম্বাবুয়ে, ভারতীয় বোলাররা যখন প্রতিপক্ষের তৃতীয় ব্যাটসম্যানকে ড্রেসিংরুমের পথ দেখিয়েছেন, তার আগেই ১৮৬ রান তুলে ফেলেছিল জিম্বাবুয়ে। আয়ারল্যান্ড ১০ উইকেট হারিয়ে আজ সেটা করতে পারেনি।
অবশ্য দলীয় ৭ রানে যখন নিল ও’ব্রায়ান আব্বাসের তৃতীয় শিকার (তৃতীয় এলবিডব্লু) হলেন, তখন স্কোর পঞ্চাশ পেরোবে কি না, সে আলোচনাও হচ্ছিল। পল স্টারলিং ও কেভিন ও’ব্রায়ান মিলে প্রথমে টেস্টে সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়া আটকেছেন। কে জানে সেই স্বস্তিতেই কিনা, দলীয় ৩৬ রানে ফাহিম আশরাফের প্রথম ওভারেই বাজে এক শট খেলে বিদায় নিলেন স্টারলিং (১৭)। পরপর দুই বলে ২ উইকেট তুলে নিয়ে শাদাব খান যখন আয়ারল্যান্ডের স্কোরবোর্ডকে ৬১/৭-এ পরিণত করলেন, তখনো দক্ষিণ আফ্রিকার রেকর্ড আলোচনায়।
৭৩ রানে একমাত্র ভরসা কেভিনও (৪০) বিদায় নিলে আজ দ্বিতীয়বারের মতো নতুন বল হাতে নেওয়ার কথাই হয়তো ভাবতে শুরু করেছিলেন আব্বাস-আমিররা। কিন্তু নবম উইকেট জুটিটাই রাখল সবচেয়ে বড় অবদান। বয়েড র্যানকিন ও গ্যারি উইলসন এনে দিলেন মহামূল্যবান ৩৪ রান। ১০৭ রানে র্যানকিনের (১৭) বিদায়ের পরও হাল ছাড়েননি উইলসন। টিম মুরতাগকে নিয়ে ২৩ রানের জুটি গড়েছেন। শাদাব খানের বলে শর্ট লেগে মুরতাগ যখন ক্যাচ দিলেন অপর প্রান্তে ৩৩ রানে অপরাজিত উইলসন। ৪৪ রানে ৪ উইকেত পেয়েছেন আব্বাস, শাদাবের ৩ উইকেট এসেছে ৩১ রানের বিনিময়ে। মাত্র ২ উইকেট পেলেও ১০ ওভার বল করে মাত্র ৯ রান দিয়েছেন মোহাম্মদ আমির।