এশিয়ান বাংলা, খুলনা : খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) নবনির্বাচিত মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপি মনোনীত ও নির্বাচিত ছয়জন কাউন্সিলর। নগরীর শেরেবাংলা রোডে বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীনের বাড়িতে বুধবার বিকেলে তারা খালেকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এদিকে এ ঘটনা নিয়ে বিএনপিতে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বিএনপি মনোনীত নির্বাচিত কাউন্সিলরদের এ ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনায় হতাশ হয়েছে বিএনপি। এ বিষয়ে তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
বুধবার বিকালে নগরীর শেরেবাংলা রোডের শেখ হেলালের বাড়িতে যান নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেসিসির নবনির্বাচিত মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, কেন্দ্রীয় নেতা এসএম কামাল হোসেন, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি শেখ জুয়েল, বিসিবির পরিচালক শেখ সোহেল, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ হেলাল ও তালুকদার খালেকের হাতে বিএনপির নির্বাচিত ছয় কাউন্সিলর ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় তারা মতবিনিময়ও করেন।
কাউন্সিলররা হলেন- ৬নং ওয়ার্ডের শেখ শামসুউদ্দিন আহমেদ প্রিন্স, ৭নং ওয়ার্ডের মো. সুলতান মাহমুদ পিন্টু, ১৬নং ওয়ার্ডের মো. আনিছুর রহমান বিশ্বাস (মহানগর যুবদলের সহসভাপতি, পদ স্থগিত), ১৭নং ওয়ার্ডের শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজ (মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক, বহিষ্কৃত), ২০নং ওয়ার্ডের শেখ মো. গাউসুল আযম (মহানগর বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক), ২৬নং ওয়ার্ডের মো. গোলাম মওলা শানু (ছাত্রশিবির নেতা)। আগামী দিনগুলো কেসিসি কীভাবে পরিচালিত হবে, সে বিষয়ে মতবিনিময়ে দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা হয়ে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার কাউন্সিলর শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স যুগান্তরকে বলেন, আওয়ামী লীগে যোগদানের কোনো ঘটনা ঘটেনি। শেখ হেলাল উদ্দিনের বাড়িতে নবনির্বাচিত মেয়র খালেক ছিলেন, তাই সেখানে তাকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। এরপর মিষ্টিমুখ করা হয়েছে। মো. আনিছুর রহমান বিশ্বাস বলেন, নবনির্বাচিত মেয়রকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে সবাই গিয়েছিলাম। আওয়ামী লীগে যোগদান করলে সাংবাদিকদের জানানো হবে। মো. গাউসুল আযম যুগান্তরকে বলেন, তার ওয়ার্ডে হেলাল উদ্দিনের বাসা। নির্বাচিত হওয়ার পর সব বাড়িতেই গণসংযোগ করেছি। সেভাবেই তার বাড়ি গিয়েছি। সেখানে অনেক কাউন্সিলর ছিলেন। অভিযোগ করে তিনি বলেন, মুসলিম লীগ থেকে আসা মহানগর বিএনপির দুয়েকজন নেতা তাদের ভালো চোখে দেখেন না। তারা আওয়ামী লীগে আমার যোগদান করার অপপ্রচার করছেন। তবে সময় এলেই সিদ্ধান্ত নেব।
মো. গোলাম মওলা শানু বলেন, ছাত্রশিবির, জামায়াত বা বিএনপি কোনো দলে আমার নাম নেই। আমি চারবার স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করেছি। আঞ্চলিক রাজনীতি করার কারণে বিভিন্ন মানুষ কুৎসা রটায়। নবনির্বাচিত মেয়রকে আমি শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছি। কোনো দলে যোগদান করার বিষয়ে আলোচনা হয়নি।
কেসিসি নির্বাচনে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজকে ৫ মে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। সুলতান মাহমুদ পিন্টুর মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে নগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফকরুল আলম যুগান্তরকে বলেন, তালুকদার খালেককে বিএনপি থেকে নির্বাচিত কয়েকজন কাউন্সিলরের ফুল দেয়ার ঘটনা সত্য। এ বিষয়টি হতাশাজনক। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কেসিসি মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টি জেনেছি। এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।