আনোয়ার পারভেজ তালুকদার : গত ৩-৪ মাসে বাংলাদেশে শতাধিক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অথচ প্রতিটি মানুষের ছিল বিচার পাওয়ার অধিকার। জাতি আজ জানতে চায়- কেন এই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। গোটা দেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করতে সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে মাদক নির্মূলের নামে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। এভাবে নির্বিচারে মানুষ হত্যা সবার জন্য রীতিমতো উদ্বেগ, ভয় ও বিপদের কারণ হতে পারে | দেশে মাদক বিস্তারের জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ। তাদের আমলেই সীমান্ত দিয়ে প্রতিবেশী দেশ থেকে মাদকের চালান ঢুকছে বাংলাদেশে। যারা মাদক আমদানি করে সারা দেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে ,তারা সবাই বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের লোক। আর সে কারণেই তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে। দেশে মাদক বিস্তারের জন্য দায়ী বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার । আওয়ামী লীগের শত শত নেতাকর্মীদের নাম গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হলেও এখন পর্যন্ত তাদেরকে আইনের আওতায় নেয়া হয়নি | মাদকবিরোধী অভিযানে কাদেরকে ধরা হচ্ছে? গডফাদারদের নয়, চুনোপুটিদের। মাদকবিরোধী অভিযানের নামে আইনশৃঙ্খলাব বাহিনী বাণিজ্য করছে বলে অভিযোগ ওঠেছেন | নিরীহ লোকদের ধরে হত্যা ও হত্যার ভয় দেখিয়ে ঈদের আগে রমরমা বাণিজ্য চলছে। এখন গ্রেফতার বাণিজ্যের পাশাপাশি হত্যা-বাণিজ্য চলছে। পুলিশ তাদের ইচ্ছা মতো সাধারণ মানুষদের বিশেষ করে কোথাও কোথাও বিএনপিসহ বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ধরে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করছে। দাবিকৃত টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে তাদেরকে ক্রসফায়ারে দিয়ে হত্যা করা হচ্ছে | মাদক অভিযানের নামে বিচার বহির্ভূত হত্যার যে হিড়িক চলছে এর গভীরে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হচ্ছে মাদক বিরোধীদের নির্মূল করতে যেয়ে টার্গেট করে বিরোধীদলের তরুণ নেতাকর্মীদের মিথ্যা অভিযোগে মেরে ফেলা হচ্ছে | নেত্রকোণায় কথিত ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সদস্য আমজাদ হোসেনকে। আমরা সেখানকার অনেকের সাথে কথা বলেছি, তারা বলেছেন যে আমজাদ অত্যন্ত ভালো ছেলে। মাদক কি ধুমপানেও সে জড়িত নয়। এই ক্রসফায়ার নিয়ে দেশের মানুষের মনে বিভিন্ন প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। এমন একটা সময় যখন নির্বাচন সামনে ও সরকারের শেষ বছর, এই সময় বর্তমান সরকার দেশে একটা যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন | দেশে কী কোনো আইন নেই? যদি মাদক ব্যবসায়ী হয়, যদি কোনো মাদক ব্যবহারকারী হয়, অথবা যেকোনো অন্যায়কারী হয় তাহলে এদেশে বিচারের ব্যবস্থা আছে, আইন আছে, আমাদের সংবিধান আছে। সেটাকে ভ্রুক্ষেপ করছে না এই সরকার। কোনো সভ্য দেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
এছাড়া রক্ষক যখন ভক্ষক………….
দেশে বিভিন্ন জায়গায় মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকায় নাম এসেছে পুলিশ কর্মকর্তা ও জন জনপ্রতিনিধির নাম। আইন যদি সবার জন্য সমান হয় তাহলে তাদেরকে ও ক্রসফায়ার দিয়ে মারা উচিৎ বলে আপনারা কি মনে করেন | এটি আপনাদের কাছে প্রশ্ন ? আমরা দেশের বিভিন্ন নিউসপেপার ও মিডিয়ায় এই নিউজ গুলি দেখতে পাচ্ছি |
আমরা মাদকবিরোধী অভিযান চাই। তবে এটা অরাজনৈতিক হতে হবে। মাদক বিরোধী অভিযানের নামে ক্রসফায়ার দিতে হবে এমনটি নয়। আমরা তাদের আইনের আওতায় এনে তাদেরকে বিচার করতে হবে। কিন্তু যে সব যুক্তি দাঁড় করা হচ্ছে সেগুলো কোনো সভ্য গণতান্ত্রিক দেশে যুক্তি বলে বিবেচিত হওয়ার কথা নয়। বন্ধ করতে হবে বাংলাদেশের ফ্যাসিজম | আমরা বেআইনি ক্রসফায়ারে হত্যা বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছি। সকল বিচার বহির্ভূত হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। একই সঙ্গে সকল দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংস্থা, গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজকে গুম-খুন-বিচার বহির্ভূত হত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
##Stop Bangladesh Fascism##