এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : চার বছর অতিক্রম করে পাঁচে পা দিল ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকার। চার বছরে ভারতের অধিকাংশ রাজ্যে ‘মোদি সুনামি’ পরিলক্ষিত হয়েছে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মাত্র ৮টি রাজ্য মোদির বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালাইন্সের (এনডিএ) দখলে ছিল। ৪৮ মাসে বিজেপি ২৯ রাজ্যের মধ্যে ২০টির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। বিভিন্ন রাজ্যে জয়ের পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ নরেন্দ্র মোদি। এখন পর্যন্ত দেশে মোদির ক্যারিশমাকে টক্কর দেয়ার মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব চোখে পড়ছে না।
চার বছর পূর্তি উপলক্ষে টুইটারে মোদি বলেন, ভারতের উন্নয়নের পেছনে দেশের জনগণের অংশগ্রহণ রয়েছে। ভারতের ১২৫ কোটি জনগণ দেশকে বহু উচ্চতায় আসীন করেছে। কংগ্রেস শাসনের সমালোচনা করে মোদি বলেন, আমি ক্ষমতা গ্রহণের আগে ৪৮ বছর ধরে কংগ্রেস দেশ শাসন করেছে। ৪৮ বছরের গ্লানি সহ্য করতে হয়েছে বিজেপি সরকারকে। শনিবার কয়েক দফা টুইট করেন মোদি। তিনি আরেক টুইটে লেখেন, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির স্লোগান ছিল, ‘আবকি বার, মোদি সরকার’। ২০১৯ সালে তা সামান্য বদলে করা হয়েছে, ‘২০১৯ মে ফির মোদি সরকার’।
২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে বিজেপির পূর্ণ দখলে ছিল গুজরাট, রাজস্তান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্রিশগড় ও নাগাল্যান্ড। নির্বাচনে ‘মোদি সুনামি’ দেখে ভারত। বিজেপি ২৮১ আসন, জোট ৫৪ আসন মিলিয়ে ৩৩৬ আসনে জয় পায় এনডিএ। ক্ষমতার চার বছরে মোদি সুনামি অব্যাহত ছিল। তার দল ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে সরকার গঠন করে। কর্নাটকে দখল করলেও হাতছাড়া হয়ে যায়।
১৪৬০ দিন (চার বছর) মোদি ৬ মহাদেশের ৫৪ দেশ সফর করেছেন। ৩৬টি রাষ্ট্রীয় সফরে এসব দেশে গেছেন তিনি। সমালোচনা উঠেছে তা নিয়েও। বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী বিদেশের বিষয়ে যতটা উৎসাহী, দেশের বিষয়ে ততটা নন। এত বিদেশ সফর সত্ত্বেও নানা দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের প্রত্যাশিত উন্নতি হয়নি। ভারতের গণমাধ্যমগুলোয় বিদেশি সফরে বেশি পরিমাণে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, চার বছরে চীনের সঙ্গে ভারতের সাপে-নেউলে সম্পর্ক গেছে। ডোকলাম মালভূমি নিয়ে দু’দেশের মধ্যে গত বছরে উত্তেজনা চরমে ওঠে। একই ইস্যুতে ভুটানের পাশে দাঁড়ানোয় বরাবরের মতো দেশটির সঙ্গে মিত্রতা অটুট রয়েছে।
নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কেপি শর্মা ওলি ক্ষমতায় আসায় ভারতের কপালে চিন্তার ভাঁজ। কারণ চীনাপন্থী ওলি দিল্লিকে বাদ দিয়ে নেপালে বেইজিংয়ের প্রভাবকে প্রাধান্য দেবেন। এজন্য যোগাযোগসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে নেপালে বিনিয়োগ করার চেষ্টায় দৌড়ঝাঁপ করছে ভারত। প্রতিবেশী মিত্র বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকার ভারতের কাছ থেকে পূর্ণ রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থন পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী পদে বসার আগে থেকেই পাক প্রসঙ্গ নিয়ে কড়া নীতি আরোপ করেছিলেন মোদি। তার মন্ত্রিসভার মন্ত্রীরাও সর্বদাই অ্যাটাকিং মুডে থাকে পাকিস্তান প্রসঙ্গে। কিন্তু একবার সার্জিক্যাল স্ট্রাইক বাদ দিলে পাকিস্তান নিয়ে মোদি কোনো স্পষ্ট অবস্থানে আসতে পারেননি।