এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে কুমিল্লার দুটি মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছে হাই কোর্ট; তবে নড়াইলের মামলাটিতে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
এই তিনটি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিনের আবেদনে সোমবার আদেশের দিন ঠিক ছিল বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাই কোর্ট বেঞ্চে।
আদালত কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নাশকতার দুটি ঘটনায় হত্যা ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলা দুটিতে খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছে।
নড়াইলের মানহানির মামলাটিতে জেলার আদালতে খালেদার জামিনের আবেদন রয়েছে। সেখানে কী হয়েছে, তা জানতে চেয়ে যথাযথ উত্তর না পেয়ে আবেদনটি ‘নট প্লেজড (উপস্থাপিত হয়নি)’ বলে রেখে দিয়েছে হাই কোর্ট।
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়া ওই মামলাটিতে আপিল করে জামিন নিলেও বিচারাধীন কয়েকটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোয় তার মুক্তি আটকে আছে।
কুমিল্লা ও নড়াইলের তিনটি বাদে আরও দুটি মামলায় জামিন চেয়ে খালেদা জিয়া হাই কোর্টে আবেদন করেছেন। সেগুলো এখনও শুনানিতে আসেনি।
কুমিল্লার হত্যা মামলাটি অবরোধের মধ্যে ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুর এলাকায় একটি নৈশকোচে পেট্রোল বোমা হামলায় আট যাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনায় করা হয়। চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান পরদিন খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে মামলা করেন।
কুমিল্লার বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলাটিও নাশকতা নিয়ে। অবরোধের মধ্যে ওই বছরের ২৫ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রামে একটি কভার্ড ভ্যানে অগ্নিসংযোগ ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। পরে ওই দিনই চৌদ্দগ্রাম থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে নাশকতার অভিযোগে মামলা হয়।
২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। তাতে খালেদা জিয়াসহ ৩২ জনকে আসামি করা হয়।
নড়াইলের আদালতে খালেদার বিরুদ্ধে মানহানির মামলাটি দায়ের করা হয় শহীদদের সংখ্যা নিয়ে ‘বিরূপ মন্তব্য’ করার অভিযোগে।
নড়াইল জেলা পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও নড়াগাতি থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হান ফারুকী ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর এ মামলা দায়ের করেন।
এই মামলা তিনটিতে গত ২০ মে হাই কোর্টে জামিনের আবেদন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। রোববার তার শুনানি শেষ হয়েছিল।
মামলাগুলোর শুনানিতে খালেদার আইনজীবীরা বলেন, এগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। বয়স্ক নারী হিসেবে তাকে জামিন না দেওয়ার আইনগত কোনো বাধা নেই।
অন্যদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিচারিক আদালতে জামিনের আবেদনের সুরাহা হওয়ার আগে উচ্চ আদালতে চলে আসা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
কুমিল্লার দুটি মামলায় খালেদার আইনজীবীরা গত ২২ এপ্রিল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করলে বিচারক শুনানির জন্য ৭ জুন তারিখ রাখেন।
শুনানির তারিখ এগিয়ে আনার জন্য আবেদন করা হলে ১৪ মে তা খারিজ করেন বিচারক। এর মধ্যে হাই কোর্টে আবেদন করা হয়।