এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : আমেরিকা আবিস্কারের খবর জানিয়ে নিজ দেশের রাজা-রানিকে চিঠি লিখেছিলেন ক্রিস্টোফার কলম্বাস। এই চিঠির গুরুত্ব অনুধাবন করে ঐতিহাসিক দলিল হিসাবে রাখা হয়েছিল স্পেনের বার্সেলোনার একটি জাদুঘরে। কিন্তু হঠাৎ করেই চিঠিটি লা-পাত্তা হয়ে যাওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন ঐতিহাসিকরা। এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত কর্মকর্তার পাঁচশ বছর আগে লেখা চিঠিটি উদ্ধার করে স্পেনের কাছে ফেরত দিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে স্পেনের রাষ্ট্রদূত পেদ্রো মোরেনেসের কাছে চিঠিটি হস্তান্তর করা হয়।
বিবিসি জানায়, আমেরিকা আবিষ্কারের পর ১৪৯৩ সালে রাজা ফার্দিনান্দ ও রানি ইসাবেলাকে এই চিঠি পাঠানো হয়েছিল। তাতে তিনি রাজা ফার্দিনান্দ ও রানি ইসাবেলাকে নতুন একটি বিশ্ব আবিষ্কারের কথা বলেন।
স্প্যানিশ ভাষায় লেখা চিঠিটি রাজা ফার্দিনান্দ ও ইসাবেলা রোমে পাঠিয়ে লাতিন ভাষায় রূপান্তর করিয়ে নিয়েছিলেন। এরপর হাতে লিখে এর অসংখ্য কপি করা হয়। কলম্বাসের নতুন মহাদেশ আবিষ্কারের খবর ছড়িয়ে দিতে এই কপিগুলো বিলি করা হয় ইউরোপের রাজা ও রানিদের মধ্যে।
লাতিন ভাষার এ চিঠিরই একটি কপি সংরক্ষিত ছিল স্পেনের বার্সেলোনার ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব কাতালোনিয়ায়। কিন্তু এক দশক আগে জানা যায়, সেখানে আসল চিঠিটি নেই, রয়েছে জাল একটি চিঠি।
তখন স্পেন ও যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টির তদন্তে নামে। ২০১২ সালে তদন্তকারী নিশ্চিত হয় আসল চিঠিটি হারানো গেছে বার্সেলোনা থেকে। চুরির পর আসল চিঠিটি বিক্রি করে দেয়া হয় ২০০৫ সালের নভেম্বরে।
২০১৩ সালের মার্চে যখন চিঠিটি পুনরায় হাতবদল হয় নয় লাখ ইউরোতে, ওই সময় ঘটনাটি নজরে আসে তদন্তকারীদের। এরপর চিঠির ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তারা। ওই ব্যক্তি জানতেন না, এই চিঠিটি বার্সেলোনা থেকে চুরি হয়েছিল। এটি যে কলম্বাসের সেই ঐতিহাসিক চিঠিই, তা নিশ্চিত হওয়ার পর তা উদ্ধার করে স্পেনের কাছে ফিরিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি ডেভিড ওয়েসিস বলেন, ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ এ চিঠিটি এর প্রকৃত দাবিদার স্পেনকে ফেরত দিতে পেরে আমরা খুবই সম্মানিত বোধ করছি।
অন্যদিকে পেদ্রো মোরেনেস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও স্পেন যে আত্মার বন্ধনে আবদ্ধ, এ চিঠি হস্তান্তর তার বড় প্রমাণ।