এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : রুশ যুদ্ধজাহাজ দিমিত্রি ডনস্কই ১৯০৫ সালে স্বর্ণসহ বহুমূল্য সম্পদ নিয়ে ডুবে গিয়েছিল বলে গুজব প্রচলিত আছে। জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছে উদ্ধারকারী অনেক প্রতিষ্ঠানের এমন দাবিও প্রায় প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু ১১৩ বছর পর সেই জাহাজের খোঁজ মিলেছে দক্ষিণ কোরিয়ার এক দ্বীপের উপকূলে। দক্ষিণ কোরীয় ফার্ম দ্য শিনিল গ্রুপ জাহাজটি খুঁজে বের করার দাবি করেছে। খবর বিবিসির।
১৮৮৫ সালে যাত্রা শুরু করে এ যুদ্ধজাহাজ। প্রশান্ত মহাসাগরে রওনা হওয়ার আগে ভূমধ্যসাগর এবং বাল্টিক সাগরে কাজ করেছে ডনস্কই। ডনস্কই যুদ্ধজাহাজ হলেও যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বরং এটি নিজের বহরের পেছনে পড়ে গিয়েছিল এবং জাপানিদের দ্বারা আক্রান্ত হয়। ১৯০৫ সালে রাশিয়া ও জাপানের মধ্যে ঐতিহাসিক সুশিমা যুদ্ধে জাপানের বিজয় উদযাপনের জন্য ক্রুরা জাহাজটি ফুটো করে দিয়েছিল। গুজব প্রচলিত আছে, ডনস্কই প্রশান্ত মহাসাগরে রুশ বহরের ক্রুদের বেতন এবং ডক ফি পরিশোধের জন্য জাহাজভর্তি স্বর্ণ বয়ে নিয়ে আসছিল। অনুমান করা হয়, আজকের দিনে সেই স্বর্ণের মূল্য হতে পারে বিলিয়ন ডলার। কিন্তু জাহাজে স্বর্ণ ছিল- এমন প্রমাণ আজও পাওয়া যায়ানি। বরং যুদ্ধজাহাজে করে স্বর্ণ আনার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গবেষক ও শিক্ষাবিদরা।
রাশিয়ার ফার ইস্টার্ন ফেডেরাল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর কিরিল কোলেসনিকেঙ্কো বলছেন, রাশিয়া কেন এত বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ জাহাজে করে পাঠাবে, যখন ট্রেনে বিনা ঝুঁকিতে সেটা পাঠানো যায়?
তবু গত শতকে বেশ কয়েকটি নামি জাপানি এবং দক্ষিণ কোরীয় প্রতিষ্ঠান স্বর্ণসমেত জাহাজ উদ্ধারের চেষ্টা করেছে। এর মধ্যে ২০০১ সালে কোরীয় এক প্রতিষ্ঠান জাহাজ খুঁজে বের করেছে দাবি করে। যদিও দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার কারণে তারা আর জাহাজ তুলতে পারেনি।
এখন শিনিল গ্রুপ বলছে, তারা ডনস্কইকে খুঁজে পেয়েছে এবং তারা উদ্ধার কাজের ফটো এবং ভিডিও ফুটেজ ইউটিউবে আপলোড করে চলেছে। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠান নিয়েও এখন প্রশ্ন উঠেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার একটি নিউজ ওয়েবসাইট বলছে, ওই প্রতিষ্ঠানটি মাত্র জুনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যদিও শিনিল গ্রুপ বলছে, তারা ১৯৫৭ সালে গঠিত শিনিল কর্পোরেশনের উত্তরাধিকারী। এর মূলধনও খুব কম, মাত্র ৬৭ হাজার পাউন্ড সমপরিমাণ অর্থ। সেই সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে সাগরের নিচে উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য অনুমতিও নেয়নি।