এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : বর্তমান সরকারের মেয়াদে কোটা সংস্কারের সুরাহা হচ্ছে না। কারণ নতুন করে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের জন্য গঠিত কমিটির মেয়াদ ৯০ কার্য দিবস (চার মাস) বাড়ানো হয়েছে। সরকারের মেয়াদও চার মাস নেই। তাই এ সরকারের আমলে কোটা সংস্কার হচ্ছে না এটা অনেকটা নিশ্চিত। এর আগে গত ২রা জুলাই কোটা সংস্কারের জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের ছয় দিনের মাথায় মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে ওই কমিটি একটি সভা করে।
সেই সভায় বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রথম সভা শেষে বলা হয়, মূলত এই কমিটির কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই কর্মপন্থার প্রথম ধাপ হচ্ছে- কোটা সংক্রান্ত দেশে-বিদেশে যে তথ্য রয়েছে বা আমাদের বিভিন্ন সময়ে গঠিত কমিশন বা কমিটির যে প্রতিবেদন রয়েছে তা যত দ্রুত সংগ্রহ করা। এরপর আর কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সহসাই এই কমিটি আবারো বৈঠকে বসতে পারে। সেখানে সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এরপর কয়েকটি বৈঠক করে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হবে। তবে যে প্রস্তাবনাই তৈরি করা হোক না কেন তা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নির্দেশনার সঙ্গে সমন্বয় রেখেই করা হবে। এর আগে কোটা সংস্কারে গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি থেকে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবিগুলো হলো- কোটা সংস্কার করে ৫৬ থেকে ১০ শতাংশে কমিয়ে আনা, কোটা প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া, চাকরি নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা না নেয়া এবং চাকরি ক্ষেত্রে সবার জন্য অভিন্ন কাট মার্ক ও বয়সসীমা নির্ধারণ করা।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষিত কোটা ৫৬ শতাংশ। বাকি ৪৪ শতাংশ নেয়া হয় মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে। বিসিএসে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩০, জেলা কোটায় ১০, নারী কোটায় ১০ ও উপজাতি কোটায় ৫ শতাংশ চাকরি সংরক্ষণ করা আছে। এ ৫৫ শতাংশ কোটায় পূরণযোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে ১ শতাংশ পদে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগের বিধান রয়েছে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলা আন্দোলনের এক পর্যায়ে কোটাই থাকবে না বলে সংসদে এক ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে অবশ্য সংসদেই তিনি বলেছেন, আদালতের নির্দেশনা থাকায় মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সুযোগ নেই। সরকারি তরফে এখন পর্যন্ত কোটা সংস্কার নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় আন্দোলনকারীরা আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন। আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে ক্লাস বর্জন কর্মসূচি চলছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে।