এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : আট মাস পর ইসরাইলের সামরিক কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন ১৬ বছরের ফিলিস্তিনি কিশোরী আহেদ তামিমি। গত বছর তার বাড়ির সামনে ইসরায়েলি এক সৈন্যের গালে সপাটে চড় বসিয়ে দেন। এরপর গ্রেফতার হন ইসরাইলী বাহিনীর হাতে। গ্রেফতারের পর সামরিক আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে সে, কিন্তু ফিলিস্তিনিদের কাছে সে এখন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে উঠেছে। খবর বিবিসির।
মাত্র ১৬ বছর বয়সেইে আহেদ তামিমি বারোবার অভিযুক্ত হয়েছেন, এর মধ্যে চারবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়াতে তার চড় মারার সেই ফুটেজ ভাইরাল হয়ে ঘুরছে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ঐ বিক্ষোভের সময় ইসরায়েলি সৈন্যদের সাথে আহেদ তামিমির ধাক্কাধাক্কি হচ্ছে। এক পর্যায়ে ঐ কিশোরী সপাটে চড় বসিয়ে দেয় এক সৈন্যের গালে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ঐ চড়ে ঐ সেনা সদস্যের ভ্রু কেটে গেছে। আহেদ তামিমির বিরুদ্ধে বিনা প্ররোচণায় সহিংসতা এবং দায়িত্ব পালনে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। সামরিক আদালতে সে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে।
ইসরায়েলে এ ধরণের অপরাধে, একজন প্রাপ্তবয়স্কের ১০ বছরের সাজা হতে পারে। কিন্তু আইনজীবীরা বলছেন, কম বয়সের কারণে হয়তো লঘু সাজা হতে পারে এই কিশোরীর। তাই মাত্র আট মাস কারাগারে কাটিয়েই মুক্তি পেল আহেদ তামিমি।
একটি চড় মেরে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের নতুন এক প্রতীক হয়ে উঠেছে ১৬ বছরের আহেদ তামিমি। ফিলিস্তিনিদের মধ্যে আলোচনা-বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে সে।
ইসরায়েলের সৈন্যের গালে সপাটে চড় মারার পর সেদেশের বাম-ঘেঁষা দৈনিক হারেতজ লিখেছে, ইসরায়েল যদি আহেদ তামিমির বিচার নিয়ে বাড়াবাড়ি করে, তাহলে এই কিশোরী হয়তো “ফিলিস্তিনি জোয়ান আর্ক হয়ে উঠবে।”
অন্যদিকে দক্ষিণ-পন্থী ইসরায়েলিরা সেনাবাহিনীকে আক্রমণ করে লিখছে, কেন তারা ঐ ফিলিস্তিনি কিশোরীর মুখে পাল্টা চড় মারলো না।
ঘটনাটি ঘটে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে। অধিকৃত পশ্চিম তীরের নাবি সালেহ নামের একটি গ্রামে। বছরের পর বছর ধরে এই গ্রামের লোকজন প্রতি সপ্তাহে একদিন ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে।
এই ধরণের দুঃসাহসিক কাজ এই কিশোরী আগেও করেছে।
দু বছর আগে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টার সময় সে ইসরায়েলি সৈন্যের হাত কামড়ে দিয়েছিলো। তারও আগে ২০১২ সালে ইসরায়েলি সৈন্যদের সাহসের সাথে মোকাবেলার জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তায়েব এরদোগান তাকে আমন্ত্রণ করে নিয়ে গিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন। আহেদ তামিমির বয়স তখন ছিল মাত্র ১১ বছর।