এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : এখনও সরকার গঠন করেন নি পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান। কিন্তু তাকে কঠিন চাপে রাখার কৌশল নির্ধারণে একত্রিত হচ্ছেন পাকিস্তানের বড় ও পুরনো দুটি রাজনৈতিক দল। এজন্য শিগগিরই বৈঠকে বসছে সদ্য ক্ষমতা হারানো নওয়াজ শরীফের পাকিস্তান পিপলস পার্টি-নওয়াজ (পিএমএলএন) ও বিলাওয়াল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। তাদের মধ্যে বিরোধী একটি জোটও গড়ে উঠতে পারে। তবে বিভিন্ন টিভির খবর অনুযায়ী, পিপিপি নেতা সৈয়দ খুরশিদ শাহ রোববারই রাজধানী ইসলামাবাদে পিএমএলএন সভাপতি শাহবাজ শরীফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। শনিবার দিনভর পাকিস্তানের ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার হয়েছে ইমরান খান নেতৃত্বাধীন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে কে কে আসতে পারেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় কারা জায়গা পেতে পারেন তা নিয়ে। তবে পিটিআইয়ের সূত্রগুলো অনলাইন ডনকে বলেছেন, এখনও দল তার হিসাব নিকাশ নিয়ে কাজ করছে। এরই মধ্যে বানিগালায়ার বাসায় যে আলোচনা হয়েছে সেখানে কারো নাম আলোচনায় আসে নি। পিটিআইয়ের নেতা শাফকাত মেহমুদ বলেছেন, বানিগালায় যে বৈঠক হয়েছে সেটা কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক ছিল না। এটা ছিল সাধারণ একটি বৈঠক। সেখানে আলোচনা হয়েছে নতুন সরকার গঠনের পর কি কি সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে সেই সরকার তা নিয়ে। কোনো মুখ্যমন্ত্রী বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নাম সেখানে উচ্চারিত হয় নি। ওদিকে খবর ছড়িয়ে পড়েছে শাফকাত মেহমুদকে তার দল জাতীয় পরিষদের স্পিকার হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে। কিন্তু তিনি এ রিপোর্টকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত যে ফল ঘোষণা করেছে তাতে ইমরান খানের পিটিআই পেয়েছে ১১৫ আসন। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে তার আরো লাগবে ১২টি আসন। অন্যদিকে পিএমএলএন পেয়েছে ৬৪ আসন এবং পিপিপি পেয়েছে ৪৩ আসন।
পিটিআইয়ের যেসব নেতা একাধিক আসনে জিতেছেন সেখান থেকে একটি রেখে বাকিগুলো ছেড়ে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে ইমরান খান জিতেছেন ৫টি আসনে। ফলে তাকে ছেড়ে দিতে হবে চারটি আসন। তাক্সিলার গোলাম সারোয়ার খান জিতেছেন দুটি আসন। তিনি পরাজিত করেছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী খানকে। তাকেও একটি আসন ছেড়ে দিতে হবে।
ওদিকে নির্বাচনের ফল যদিও পিপিপি ও পিএমএলএন প্রত্যখ্যান করেছে তবুও দুটি দলের ভিতরকার সূত্র বলেছেন, মুক্তাহিদা মজলিশে আমল (এমএমএ) আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় পরিষদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান বর্জন করতে। কিন্তু ওই সূত্র বলেছেন, তারা এমএমএ’র এই আহ্বানকে সমর্থন করেন না। পিএমএলএনের একজন সিনিয়র নেতা বলেছেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। পার্লামেন্টে আমরা কঠিন বিরোধী অবস্থানে ভূমিকা রাখবো। অন্যদিকে পিপিপির এক সিনিয়র নেতা বলেছেন, তারা এখনও কৌশল চূড়ান্ত করে নি। শনিবার পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি একটি কমিটি গঠন করেছেন। এর কাজ হবে নির্বাচন পরবর্তী প্রেক্ষাপট নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া। এ দলের এক সূত্র বলেছেন, ওই কমিটিতে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি, সৈয়দ খুরশিদ শাহ, শেরি রেহমান, ফরহাতুল্লাহ বাবর, কমর জামান কাইরা, রাজা পারভেজ ও সৈয়দ নাভিদ কমর।