এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন সারা দেশে অভূতপূর্ব সাড়া ফেলেছে। বিশৃঙ্খল ট্রাফিক ব্যবস্থার বিপক্ষে এই প্রতিবাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে সারা দেশের মানুষ। সরকারও তাঁদের দাবিকে যৌক্তিক মনে করে সেগুলো একে একে পূরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর তাই শিক্ষার্থীদের ঘরে ফেরার আহ্বান জানিয়ে কাল নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করেছিলেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু সমালোচনার মুখে পড়ায় পোস্টটি ডিলিট করে কালই নতুন পোস্ট করেন এই অলরাউন্ডার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি খেলার জন্য বাংলাদেশ এখন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। সেখান থেকে এ আন্দোলনের ওপর চোখ রাখছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়েরা। অধিনায়ক সাকিব তাঁর আগের ফেসবুক পোস্টে বলেছিলেন, ‘তোমাদের দাবি কার্যকর হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিহত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা ছাড়াও নিরাপদ সড়ক আইন করতে আন্তরিকভাবে কাজ করছেন। এ অবস্থায় তোমাদের কাছে বিনীত অনুরোধ করব, ক্লাসে ফিরে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে। তোমরা যা করেছ, তা এ দেশে ইতিহাস হয়ে থাকবে। এ অর্জন সফল হবে তোমাদের পড়ার টেবিলে ফিরে যাওয়ার মাধ্যমে।’
কিন্তু সাকিবের এই পোস্টে প্রচুর নেতিবাচক মন্তব্য এসেছে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে তাঁর এই আহ্বান। বেশির ভাগ মানুষই তা দেখেছেন নেতিবাচক দৃষ্টিতে। সম্ভবত এ কারণেই পোস্টটি ডিলিট করেছেন জাতীয় দলের এই অধিনায়ক। এরপর নতুন পোস্টে সাকিব অনুরোধ করেছেন তাঁকে যেন ভুল না বোঝা হয়।
ভিডিও বার্তার ওপরে ক্যাপশনের জায়গায় বাংলা ও ইংরেজিতে কিছু কথা লিখেছেন সাকিব। এখানে তিনি অনুরোধ করেছেন, তাঁকে যেন ভুল না বোঝা হয়। সেটি হয়তো আগের ভিডি বার্তাটি নিয়ে সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে। সাকিব লিখেছেন, ‘আমার সকল ভক্তদের জানাচ্ছি যে আপনারা হয়তো আমার ব্যক্ত করা কথায় আমাকে ভুল বুঝছেন। দয়া করে আমাকে ভুল বুঝবেন না, আমারও আপনাদের সবার মতো পরিবার আছে, যাদের নিরাপত্তা আমার কাছেও অনেক বেশি মূল্যবান। আমি আপনাদেরই একজন, আমি সব সময় আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং কথা দিচ্ছি ভবিষ্যতেও থাকব। আমি শুধু বলতে চাই যে আপনাদের আন্দোলনকে একটি সঠিক ফলাফলে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমাদের সরকার কে সুযোগ দেওয়া উচিত, যেন সরকার খুব দ্রুত আপনাদের দাবি বাস্তবায়ন করতে পারে।’
এই লেখার নিচে এক ভিডিও বার্তায় সাকিব বলেন, ‘আমি তোমাদের এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি। আবারও তোমাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে এটাও বলতে চাই, এটা শুধু শিক্ষার্থীদের দাবি হওয়া উচিত নয়, এটা সকল মানুষের দাবি হওয়া উচিত। এ কারণেই সকল শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ দিতে চাই যে তোমরা আমাদের রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছ।’
এরপর সাকিব অবশ্য আগের কথাই বলেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়টি সম্পর্কে খুব ভালোভাবে অবগত আছেন। তিনি কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন এবং করছেন। যা বাস্তবায়ন হতে হয়তো একটু সময় লাগবে। আমাদের উচিত হবে সব শিক্ষার্থীকে এটা এখন বোঝানো যে তাঁদের ক্লাসে ফিরে যেতে। ঠিকমতো পড়াশোনায় আবার মনোনিবেশ করতে। এই দাবি যদি পূরণ না হয় এবং ভবিষ্যতে যদি আমাদের এই আন্দোলন আবার করতে হয় তোমরা আমাকে সব সময় পাশে পাবে, এই ওয়াদা আমি করছি।’