এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা’ মোকাবেলা করার মতো যথেষ্ট মজবুত অর্থব্যবস্থা রয়েছে তুরস্কের। তিনি বলেন, তুরস্কের অর্থনীতির ওপর আরো আঘাত আসবে। তবে সেসব মোকাবেলা করার মতো মানসিকতা আমাদের রয়েছে।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তুরস্কের অর্থনীতির ধারা মজবুত, নিরেট ও সুরক্ষিত। এটি সুরক্ষিতই থাকবে। রাজধানী আঙ্কারার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে বিভিন্ন দেশে নিয়োজিত তুর্কি রাষ্ট্রদূতদের উদ্দেশ্যে দেয়া বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
গত সপ্তাহে হঠাৎ করেই তুরস্কের বিরুদ্ধে ‘বাণিজ্যযুদ্ধ’ শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। তুরস্ক থেকে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্য আমদানির ওপর ২০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কারোপ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন। এই ঘটনার পর স্মরণকালের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়ছে তুরস্ক। দেশটির মুদ্রা লিরার মান কমেছে রেকর্ড সংখ্যক।
এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সোমাবারই বেশ কিছু নতুন পরিকল্পনা ঘোষণা করেছ দেশটির কেন্দ্রিয় ব্যাংক। তবে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, শীঘ্রেই লিরার মান স্থিতিশীল হবে। এই প্রথম এ বিষয়ে সরাসরি কথা বললেন রজব তাইয়েব এরদোগান। সোমবার তিনি বলেন, ‘আরো অনেক দিকের মতো তুরস্ক অর্থনৈতিক দিক থেকেও অবরোধের মধ্যে পড়েছে।’
২০১৬ সালে তুরস্কের আজিয়ান প্রদেশ থেকে সন্ত্রাসবাদে অভিযুক্ত থাকার দায়ে মার্কিন যাজক অ্যান্ড্রু ক্রেইগ ব্রানসন আটক হওয়ার পর দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। কুর্দিপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠি পিকেকে ও তুরস্কে অভ্যুত্থান চেষ্টার(২০১৬) সাথে জড়িত গুলেনপন্থীদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে তাকে আটক করে তুরস্ক। অপরাধ সংঘটনেরদায়ে তার ১৫ বছরের কারাদণ্ড চাইছে সরকারি কৌশুলিরা। মামলাটি এখনো বিচারধীন।
তবে এরও কিছু আগ থেকে ক্রমশ শীতল হতে শুরু করে ওয়াশিংটন ও আঙ্কারার মধ্যকার সম্পর্ক। যুক্তরাষ্ট্রের পরই ন্যাটো জোটের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ সেনাবাহিনীর দেশ তুরস্ক পশ্চিমা দেশগুলোর পাশাপাশি রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে চাইলে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয় বলে মনে করা হচ্ছে। তুরস্কের ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার সময়ও গণতন্ত্রের পক্ষে পশ্চিমাদের জোরালো অবস্থান দেখা যায়নি। যে সব কারণে তুরস্কের কর্মকর্তারা প্রায়শই পশ্চিমা সরকারগুলোর সমালোচনা করে আসছে। যদিও দীর্ঘ ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশ দুটি পরস্পরের সাথে ঘনিষ্ঠ মিত্রতা বজায় রেখে চলেছে।