এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও ভোটাধিকার রক্ষায় জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার ডাক দিতে যাচ্ছেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। ২২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐক্য প্রক্রিয়ার ব্যানারে আহূত সমাবেশ থেকে এ ডাক দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। কোনো কারণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি না মিললে বিকল্প হিসেবে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনও ঠিক করে রাখা হবে। শাসক দল আওয়ামী লীগ, তাদের শরিক দলগুলো এবং জামায়াতে ইসলামী বাদে দেশে সক্রিয় ডান-বাম-প্রগতিশীল প্রায় সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে সবাবেশে।
বুধবার ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব ফরোয়ার্ড পার্টির চেয়ারম্যান আ ব ম মোস্তফা আমিন, আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ ছাড়াও বৈঠকে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা আ ও ম শফিকউল্লাহ, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোস্তাক হোসেন প্রমুখ অংশ নেন। বৈঠকে ২২ সেপ্টেম্বরের সমাবেশ সফল করা, সমাবেশ থেকে কী ঘোষণা দেয়া হবে, সমাবেশে কাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে- এসব বিষয় চূড়ান্ত করাসহ দেশের সবশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন ঐক্য প্রক্রিয়া ও গণফোরাম নেতারা।
জানতে চাইলে ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তফা আমিন বুধবার বলেন, দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। অথচ নির্বাচন না হলে গণতন্ত্র কখনোই প্রতিষ্ঠিত হবে না। আমরা আরও একটি ৫ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন চাই না। দেশের মানুষও আর এ ধরনের নির্বাচন চায় না। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ। নির্বাচন হতে হবে সব দলের অংশগ্রহণে। পুনর্গঠন করতে হবে নির্বাচন কমিশন। এসব দাবিতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি। ২২ সেপ্টেম্বরের সমাবেশ সেই উদ্যোগের প্রথম ধাপ। আশা করি সরকার আমাদের এ উদ্যোগে বাধা হবে না।
সেপ্টেম্বরে সারা দেশে সভা-সমাবেশ করবে যুক্তফ্রন্ট : অগণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলাসহ জনগণের সম্মিলিত শক্তিকে কাজে লাগাতে সেপ্টেম্বরজুড়ে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গণসংযোগ, জনসভা ও সভা-সমাবেশ করবে যুক্তফ্রন্ট। বুধবার জোটের চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে তার বারিধারার বাসভবন ‘মায়া-বি’তে যুক্তফ্রন্টের অনির্ধারিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে বক্তব্য রাখেন- জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন ও বিকল্পধারার সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, যুক্তফ্রন্টের মূল উদ্দেশ্য হল জনমত গঠন এবং অগণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে জনগণের সম্মিলিত শক্তিকে আরও জোরদার করা, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করাসহ অত্যাচার এবং গণতন্ত্রবিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে জাতীয় চেতনা সৃষ্টি, জনগণকে ভবিষ্যতে ইতিবাচক রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ করা। এ মতাদর্শে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের যুক্তফ্রন্টে স্বাগত জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী ছাত্রদের বিরুদ্ধে সরকার যে নির্যাতন করেছে যুক্তফ্রন্ট তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বৈঠকে।