এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : সামুদ্রিক নিরাপত্তাব্যবস্থা আরো মজবুত করতে শ্রীলঙ্কাকে তিন কোটি ৯০ লাখ ডলার দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ এ ঘোষণা দেয়। মূলত ভারত মহাসাগরের বিভিন্ন দ্বীপে চীন যে শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলছে তার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবেই যুক্তরাষ্ট্র এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
কলম্বোর যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশী সামরিক সহায়তা তহবিল হিসেবে এ অর্থের জোগান দেবে। তবে এখনো এটা কংগ্রেসের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে। তারা জানায়, আমরা এ ব্যাপারে শ্রীলঙ্কার সরকারের সাথে আলোচনা করব। বঙ্গোপসাগরীয় এলাকায় কিভাবে আমরা তাদের সহায়তা করতে পারি এবং সেখানে মানবিক সাহায্য ও দুর্যোগ-পরবর্তী সময়ে সহায়তার বিষয়টি প্রাধান্য পাবে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনও শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন বন্দর ও অন্যান্য স্থাপনায় বড় আকারের বিনিয়োগ করেছে। বেইজিং তার স্বপ্নের প্রকল্প ‘বেল্ট ও রুট’ বাস্তবায়নে এসব পরিকল্পনা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহেই শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক ঘোষণায় জানায়, তারা চীনের পক্ষ থেকে ১০০ কোটি ডলার ঋণ নিশ্চিত করেছে। এর ফলে দ্বীপরাষ্ট্রের সাথে বেইজিংয়ের সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হবে।
শ্রীলঙ্কার তামিল বিদ্রোহীদের সাথে লড়াইয়ের সময় শ্রীলঙ্কা সরকারের কাছে অস্ত্র বিক্রি করা বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ২০০৯ সালে লড়াইটি সমাপ্ত হয়। সে সময় যুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়েন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মহিন্দ্র রাজাপাক্ষে। সে সময়কার কয়েকজন সেনা কর্মকর্তাকে ভিসা দিতে অস্বীকার করে যুক্তরাষ্ট্র।
ইন্দো প্রশান্ত অঞ্চলে অবাধ, উন্মুক্ত ও আইনভিত্তিক শাসন নিশ্চিত করতে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য ৩০ কোটি ডলারের একটি তহবিল গঠন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শ্রীলঙ্কাকে তারই একটি অংশ দেয়া হচ্ছে। এদিকে চীনও শ্রীলঙ্কায় তাদের আর্থিক সাহায্য এবং ঋণদানের বিষয়গুলো অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। শ্রীলঙ্কার বিশাল ঋণের ব্যাপারে সতর্কতা থাকার পরও চীন এ ঘোষণা দেয়।
গত বছর ১৪০ কোটি ডলারের একটি প্রকল্পে চীনের দেয়া অর্থ পরিশোধের সামর্থ্য না থাকায় কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি বন্দর ৯৯ বছরের জন্য চীনের কাছে লিজে দিয়ে দেয়। হাম্বানটোটা নামের ওই বন্দরটির অবস্থান ছিল বিশ্বের পূর্ব পশ্চিমে ব্যস্ততম বাণিজ্যিক রুটের পাশে।