এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : চট্টগ্রাম বন্দরের আধুনিকায়নের প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
পৃথিবীর ব্যস্ততম সমুদ্র বন্দরগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ বন্দর চট্টগ্রামের অবস্থান ৭০তম। আর এই তালিকা বানানো হয়েছে কোন সমুদ্র বন্দরে কতটি কন্টেইনার পরিবহন করা হয়, সেই পরিসংখ্যান বিবেচনায় নিয়ে। বিবিসি বাংলা।
লন্ডন-ভিত্তিক সংস্থা ‘লয়েডস লিস্ট’ এ তালিকা প্রকাশ করেছে। এ তালিকা অনুযায়ী এর আগের বছরের তুলনায় চট্টগ্রাম এক ধাপ অগ্রগতি করেছে।
গত বেশ কয়েক বছর ধরে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার পরিবহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বাংলাদেশের এই প্রধান বন্দরের অবস্থানও আগের চেয়ে উপরে উঠে এসেছে।
লয়েডস-এর এই তালিকায় সবার উপরে রয়েছে চীনের সাংহাই বন্দর, আর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সিঙ্গাপুর।
চীনের সাংহাই বন্দর দিয়ে ২০১৭ সালে চার কোটি কন্টেইনার পরিবহন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে কন্টেইনার পরিবহনের সংখ্যা ছিল প্রায় ২৬ লাখ।
চট্টগ্রামের অবস্থা কতটা ভালো?
পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের সাংহাই কিংবা গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথে অবস্থানের কারণে সিঙ্গাপুর ব্যস্ততম সমুদ্র বন্দরের তালিকায় ওপরের দিকে থাকবে, বিশ্লেষকদের কাছে তা প্রত্যাশিতই ছিল।
তবে বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, চট্টগ্রামের অবস্থান হয়তো আরো ভালো হতে পারতো যদি এই বন্দর তার সম্ভাবনার সবটুকু কাজে লাগাতে পারতো।
তাঁরা বলছেন, তালিকায় চট্টগ্রামের ক্রম উন্নতির বিষয়টি অর্থ হচ্ছে বন্দরে ব্যস্ততা বেড়েছে। কিন্তু এ ব্যস্ততা বৃদ্ধির সাথে সাথে বন্দরের সক্ষমতাও বাড়াতে হবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক বলেন, বন্দর নিয়ে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেক। কিন্তু সেখান থেকে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে কন্টেইনার পরিবহনের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি যেমন প্রয়োজন, তেমনি সামগ্রিকভাবে বন্দরের আধুনিকায়নের প্রয়োজন রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের যে পরিমান কন্টেইনার পরিবহনের ক্ষমতা রয়েছে, তার অনেকটাই ব্যবহার করা যাচ্ছে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মিস্টার হক বলেন, “দেশের বাইরে থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের নাম শুনলে অনেকেই আতংকিত হন, কারণ এখান থেকে একটি জাহাজ ফিরে যেতে অনেক সময় লাগে।”
লয়েডস লিস্ট-এর মতে, এক দশক আগের তুলনায় বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ ভিড়তে অনেক বেশি সময় লাগছে। ফলে বন্দরে মালামাল খালাসে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হয়েছে।
তবে ফজলুল হক মনে করেন যে বন্দরের জন্য শুধুমাত্র নতুন যন্ত্রপাতি কিনলেই হবে না, বরং বন্দর পরিচালনার ক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গিতেও পরিবর্তন আনতে হবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে বের হয়ে পেশাদার দৃষ্টিভঙ্গিতে বন্দর পরিচালনা করা গেলে এ অবস্থার পরিবর্তন হবে।
বাংলাদেশে যত পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয় তার ৯০ শতাংশেরও বেশি চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে হয় বলে ব্যবসায়ীরা বলছেন।