এশিয়ান বাংলা স্পোর্টস : আনুষ্ঠানিক সভা ছিল না। ছিল বেশ কয়েকটি ইস্যু। বৃহস্পতিবার বিসিবিতে প্রথমে এশিয়া কাপের দল নিয়ে নির্বাচক ও অধিনায়কের সঙ্গে আলোচনা করেন পরিচালকরা। এরপর ক্রিকেটারদের বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়।
সাব্বির রহমান এর আগে অনৈতিক ও উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের জন্য দু’বার বড় ধরনের শাস্তি পেয়েছেন। তার সামনে আরও বড় একটি শাস্তি অপেক্ষা করছে। কমপক্ষে ছয় মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছেন তিনি।
আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আগামীকাল সকাল ১১টায় বিসিবির শৃঙ্খলা কমিটি সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেনকে ডেকেছে।
এদিকে সিরিজের সময় খেলোয়াড়দের ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বিসিবি। এছাড়া খেলোয়াড়দের জন্য একজন মনোবিদ ও একটি নির্দেশনা তৈরি করে তাদের সই নিয়ে রাখবে বোর্ড।
নাসির হোসেনের বিরুদ্ধে কয়েক মাস আগে এক মডেল প্রতারণার অভিযোগ তোলেন। নাসির ও ওই মডেলের কথোপকথন ভাইরাল হয়ে যায়। এতে বিসিবি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে। মোসাদ্দেকের সমস্যাটা পারিবারিক। তার স্ত্রী মোসাদ্দেকের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা করেছেন।
সাব্বিরের সমস্যাটাকেই বড় করে দেখছে বিসিবি। এর আগে দু’বার তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বাংলাদেশে সিরিজ চলাকালীন নিজের ফেসবুকে দুই সমর্থককে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন তিনি। এ ঘটনায় বিসিবি সাব্বিরকে তিন বছর নিষিদ্ধ করার চিন্তা করেছিল। বিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজার অনুরোধে শাস্তি কমে ছয় মাস হতে পারে।
এ নিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, ‘সাব্বিরকে ডিসিপ্লিনারি কমিটি ডেকেছে। এরপর তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। কাউকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হবে না। শুনানির পর যেটা হওয়া উচিত তেমন সিদ্ধান্তই নেবে বোর্ড।’
নাজমুল হাসান বলেন, ‘ব্যক্তিগত সমস্যা থাকতে পারে। সব কিছুর মধ্যে বিসিবিকে জড়ানো ঠিক হবে না। বিসিবির পক্ষে ঠিক করাও সম্ভব নয়। কেউ যদি বউকে ডিভোর্স দেয়, একাধিক বিয়ে করে, সেখানে আমাদের কিছু করার নেই। ক্রিকেটাররা এখন যুব সমাজের আদর্শ। তাদেরকে অনেকে অনুসরণ করে। এজন্য ক্রিকেটারদের ভালো মানুষ হতে হবে। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে যা করা দরকার তা করছি। যদি বারবার তারা করতে থাকে তখন কড়া সিদ্ধান্ত নিতেই হয়, সেটা নেবও। আবার কিছু জিনিস আছে, যা না জেনেও নিতে পারি না (সিদ্ধান্ত)। কেউ একজন অভিযোগ করতেই পারে। অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার আগেই যদি বিচার করি এবং পরে দেখা গেল আদালতে সেটা ঠিক না, তাহলে তো অন্যায় হয়ে গেল। কাজেই নিশ্চিত হয়েই আমরা সিদ্ধান্ত নেব। প্রমাণ হলে সে জাতীয় দলে খেলতে পারবে না।’
এদিকে ক্রিকেটারদের আচরণ শুদ্ধ করার জন্য একজন মনোবিদ নিয়োগের চেষ্টা করছে বিসিবি। নাজমুল হাসান বলেন, ‘একজন মনোবিদ আনার কথা ভাবা হচ্ছে। এছাড়া আরও কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ (কাল) একটি প্রস্তাব এসেছে সিরিজের সময় খেলোয়াড়রা ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করতে পারবে না। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে কিনা সেটা পরে জানানো হবে। দিকনির্দেশনা তৈরি করছি। তারা কি কি করতে পারবে এবং পারবে না- তার তালিকা করে প্রত্যেক প্লেয়ারকে দিয়ে সই করাব। তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হবে। তারা নিজেরা ভালো না হলে আমাদের কিছু করার নেই। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতেই হবে।’