এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা বা এনআরসি থেকে যাদের নাম বাদপড়াদের বাংলাদেশে ‘ডিপোর্ট’ করার হুমকি দিয়েছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। এই প্রথমবারের মতো স্পষ্টভাবে তারা এ ঘোষণা দিয়েছে। বিজেপির অত্যন্ত প্রভাবশালী সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে এনআরসি বিষয়ক এক আলোচনা সভায় তাদের এই নীতির কথা অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, এখানে আমাদের পরিকল্পনা হল থ্রিডি অর্থাৎ ডিটেক্ট, ডিলিট ও ডিপোর্ট। প্রথম ধাপে অবৈধ বিদেশিদের শনাক্তের (ডিটেক্ট) কাজ চলছে। পরবর্তীকালে সরকারি সুযোগ-সুবিধা না দেয়ার (ডিলিট) প্রক্রিয়া শুরু হবে। সবশেষে তাদের ডিপোর্ট করা হবে। বিবিসির খবর। এর আগে বিজেপির শীর্ষ স্তরের কোনো নেতাই এত স্পষ্টভাবে এনআরসি থেকে বাদপড়া লোকজনকে বাংলাদেশে পাঠানোর কথা বলেননি। ওই একই আলোচনা সভায় হাজির ছিলেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালও। তিনি মন্তব্য করেন, অবৈধ বিদেশিদের খুঁজতে আসামের পর এবার সারা ভারতেই এনআরসি প্রক্রিয়া চালু করা উচিত। রাম মাধব যখন ডিপোর্ট করার কথা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী সোনোয়ালসহ বিজেপির শীর্ষ নেতারা তুমুল করতালিতে সেই মন্তব্যকে স্বাগত জানান।
রাম মাধব বলেন, বাংলাদেশ নিজেরাই তো লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে সেদেশের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালাচ্ছে। সৌদি আরবও সে দেশে থাকা অবৈধ পাকিস্তানি, বাংলাদেশি বা ভারতীয়দের মাঝে মাঝে ফেরত পাঠায়। কাজেই ডিপোর্ট করার মধ্যে অন্যায় কিছু নেই। রাম মাধব বিজেপির নিছক একজন সাধারণ সম্পাদক মাত্র নন। তিনি দলের কাশ্মীরনীতি থেকে শুরু করে উত্তর-পূর্ব ভারতের নীতি, সবই তিনি দেখাশোনো করেন। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ বা আরএসএসের সঙ্গে বিজেপির প্রধান সেতুও তিনি।
বিজেপির পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রেও দলের বাংলাদেশ বিষয়ক নীতি ও কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় রাম মাধবের নির্দেশে।
বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের বা এইচটি ইমাম, জাতীয় পার্টির প্রেসিডেন্ট এইচএম এরশাদ কিংবা জাকের পার্টির নেতা আমির ফয়সল মুজাদ্দেদি- দিল্লিতে যে-ই সফর করুক না কেন, রাম মাধবের সঙ্গে তারা দেখা করবেন বলে ধরে নেয়া যায়। দিল্লিতে রাম মাধব ‘ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন’ নামে যে থিঙ্কট্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত, বাংলাদেশের নেতা-মন্ত্রী-নীতিনির্ধারকরাও সেখানে নিয়মিত বিভিন্ন আলোচনা সভা বা সেমিনারে যোগ দিয়ে থাকেন। উল্লেখ্য, ভারতে জুলাই মাসের শেষে আসামের জাতীয় নাগরিক তালিকার (এনআরসি) যে দ্বিতীয় খসড়া প্রকাশিত হয়েছে, তাতে রাজ্যের প্রায় ৪০ লাখ বাসিন্দা বাদ পড়েছেন।