এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : বাহরাইনে দুই লাখের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক বিপাকে। যাদের অধিকাংশের বৈধ কাগজপত্র নেই। গত আগস্ট থেকে দেশটির চারটি প্রদেশ থেকে তিনশ’র বেশি অবৈধ বাংলাদেশিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বাহরাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোমিনুর রহমান এর আগে বাহরাইনের সংবাদ সংস্থা জিডিএনকে বলছেন, তিনি সরকারের চলমান ক্র্যাকডাউনকে সমর্থন করেন। কারণ অবৈধ বাসিন্দা প্রতিরোধ, বিশেষ করে জুয়ার আস্তানা নস্যাত করতে এধরনের অভিযানের দরকার আছে। গত ১০ই সেপ্টেম্বর গালফ ডিজিটাল নিউজ জিডিএন এই খবর দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৪ঠা আগস্টে মুহাররাক এলাকায় অভিযোগমতে বাহরাইনি ইমাম শেখ আবদুল জলিল হামদ বাংলাদেশি মুয়াজ্জিনের হাতে নৃশংসভাবে নিহত হওয়ার ঘটনার পরে সারা দেশে অবৈধ অভিবাসী বিরোধী অভিযান আরো তীব্রতা পেয়েছে।
বাহরাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের লেবার কন্সাল শেখ তাহিদুল ইসলাম বাহরাইনের সংবাদ সংস্থা জিডিএনকে বলছেন, সমগ্র বাহরাইন জুড়ে পুলিশি অভিযান চলছে। এবং আমরা বুঝতে পারি, বেশ কিছু অবৈধ বাংলাদেশি শ্রমিক গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাদরকে বিতাড়নের জন্য অন্তরীণ করা হয়েছে।
তাদের পাসপোর্ট নেই। সে কারণে আমরা তাদের আউট পাস সরবরাহ করছি। গত তিন সপ্তাহে গড়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষগুলোর কাছ থেকে ৬০ থেকে ৭০টি আউট পাস সরবরাহের অনুরোধ পেয়েছি।
জিডিএন জানায়, বাহরাইনের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর রেইডের মুখে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রতিদিন গড়ে ৬০টিরও বেশি আউট পাস বিতরণ করছে।
জিডিএন গত ২১শে আগস্ট রিপোর্ট করেছিল যে, বাহরাইন ইতিহাসের বৃহত্তম অবৈধ অভিবাসী শ্রমিক বিরোধী অভিযান চালাতে যাচ্ছে। সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা অবৈধ অভিবাসন সংক্রান্ত সমস্যা বিশেষ করে অপরাধ দমন করতে বদ্ধপরিকর।
জিডিএন উল্লেখ করে যে, তথাকথিত ফ্রি-ভিসা বাজারের ওপর এটা সর্বশেষ ক্র্যাকডাউনটির অংশ। সারা দেশ থেকে শত শত অবৈধ অভিবাসী বিতাড়নে এটাই ‘সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে বেশি তীব্র’ অভিযান। এর লক্ষ্য অবৈধ শ্রমিক এবং সংশ্লিষ্ট অপরাধের ব্যাপক সমস্যা হ্রাস করা।
বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রমিক কনসুল শেখ তাহিদুল ইসলাম জিডিএনকে বলেন, ‘বাহরাইনের সব জায়গায় পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে এবং আমরা বুঝতে পেরেছি যে অনেক অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।’
‘আমরা এই লোকদের বাংলাদেশে পাঠাতে আউট-পাসের অনুরোধ পেয়েছি। বিভিন্ন কারণে তাদের কাছে পাসপোর্ট বা সিপিআর নেই।
‘গত তিন সপ্তাহে গড়ে আমরা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রায় ৬০ থেকে ৭০টি অনুরোধ পেয়েছি। যাদের ব্যক্তিগত কোনো ডকুমেন্ট নেই, যারা বিতাড়নের জন্য অন্তরীণ থাকতে চায় না, তারাই আউট পাস নিচ্ছেন।
মি. ইসলাম বলেন যে দূতাবাসে ????‘নমনীয় ওয়ার্ক পারমিটের’ (ফ্লেক্সিবেল ওয়ার্ক পারমিট) জন্য আবেদনকারীদের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত বছরের জুলাই মাসে চালু করা হয়েছিল, নমনীয় ওয়ার্ক পারমিট। এটি পুনর্নবীকরণযোগ্য। দুই বছরের রেসিডেন্সি পারমিট ১১৬৯ টাকায় এটা মিলছে। বর্তমানে এরকম পারমিটের জন্য ১০ হাজার দরখাস্ত প্রক্রিয়াধীন আছে।
‘ফ্লেক্সি পারমিটের জন্য অ্যাপ্লিকেশনের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে,’ মন্তব্য করেন মি. ইসলাম।
জিডিএন জানায়, বাহরাইনে বসবাসরত আনুমানিক ৬০ হাজার অবৈধ প্রবাসী রয়েছে। বাহরাইনে দু’লাখেরও বেশি শ্রমিকের মধ্যে বাংলাদেশিরা দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রবাসী সমপ্রদায়, যাদের বেশির ভাগই অননুমোদিত শ্রেণির অন্তর্গত। কারণ তারা আবাসনের আইন লঙ্ঘন করেছে।