এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : ফিলিপাইনে তাণ্ডব চালানোর পর রোববার হংকংয়ে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী টাইফুন মাংখুট। ঘণ্টায় ১৬০ মাইল (২৫৭ কিলোমিটার) বেগে শক্তিশালী ঝড়টি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হংকংয়ের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। ঝড়ের কারণে বিভিন্ন ভবনের জানালা ভেঙে পড়েছে, গাছপালা উপড়ে পড়েছে। বাতিল করা হয়েছে শত শত ফ্লাইট। হংকংয়ের পর মাংখুট এবার রোববার সন্ধ্যায় চীনের মূল ভূখণ্ডের গুয়াংডংতে আঘাত হেনেছে। সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেট টাইমস এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
শনিবার ফিলিপিন্সের উত্তরাঞ্চলে পাঁচ মাত্রার শক্তি নিয়ে আঘাত হানে। টাইফুন মাংখুটে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ফ্রান্সিস তোলেন্তিনো। তাদের মধ্যে ৩০ জন ফিলিপিন্সের প্রধান দ্বীপ লুজনের কর্দিলিয়ারা অঞ্চলে, ১০ জন নুয়েভো ভিজকাইয়া প্রদেশের আশপাশে ও বাকিরা ইলোকস সুর প্রদেশে নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। কর্দিলিয়ারা ও নুয়েভো ভিজকাইয়ায় নিহতদের অধিকাংশই ভূমিধসের শিকার হয়েছেন, অপরদিকে ইলোকস সুর প্রদেশে নিহত ব্যক্তি উপড়ে পড়া গাছের নিচে চাপা পড়েছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তের এ উপদেষ্টা।
রোববার দুপুরে মাংখুট হংকংয়ে আঘাত হানে। শহরের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে থাকে ঝড়ো বাতাস। প্লাবিত হয়ে পড়ে বিভিন্ন সড়ক। টাইফুন নিয়ে হংকংয়ের আবহাওয়া কর্তৃপক্ষ আগেই সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করে রেখেছিল। দেয়া হয়েছিল ১০ নম্বর সতর্ক সংকেত। সাধারণত দুপুরে হংকংয়ের রাস্তাগুলো জনাকীর্ণ থাকলেও এদিন আগে থেকেই সব ফাঁকা ছিল। গাড়ি চলাচলও খুব একটা দেখা যায়নি। মাংখুটকে কেন্দ্র করে হংকংয়ের বিমানবন্দরটি বন্ধ হয়ে যায়। বাতিল করা হয় ৫৪৩টি ফ্লাইট। দুর্ভোগে পড়েন প্রায় ১ লাখ ভ্রমণকারী।
টাইফুনটি ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার বাতাসের বেগে চীনে আঘাত হেনেছে। হংকং সীমান্তবর্তী চীনা মূল ভূখণ্ডের গুয়াংডং প্রদেশে আছড়ে পড়েছে মাংখুট। প্রদেশটিতে উচ্চগতির রেলসেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। অঞ্চলের আড়াইলাখ অধিবাসিকে সরিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। উপকূলবর্তী দুটি পারমাণবিক কেন্দ্রের কর্মীরা পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। মঙ্গলবার টাইফুনটি দুর্বল হয়ে একটি ক্রান্তীয় নিুচাপে পরিণত হতে পারে বলে পূর্বাভাসে ধারণা প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) টাইফুনটিকে চলতি বছর এ পর্যন্ত আঘাত হানা ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী বলে ঘোষণা করেছে। ঘূর্ণিঝড় মাংখুটের কারণে এশিয়ার তিন কোটি পাঁচ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়েছে জাতিসংঘের গ্লোবাল ডিজেস্টার অ্যালার্ট অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন সিস্টেম।