এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলামদের বিরুদ্ধে হত্যা, যৌন সহিংসতা ও জোরপূর্বক বিতাড়নসহ মানবতাবিরোধী অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জাতিগত নির্মূলের মুখে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এর পর এই নিপীড়ন নিয়ে এটিই কোনো পূর্ণাঙ্গ তদন্তের উদ্যোগ বলে বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে।
হেগভিত্তিক আইসিসির সদস্য না হলেও মিয়ানমারের মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্তের এখতিয়ার এ আদালতের রয়েছে বলে দুই সপ্তাহ আগে রুল জারি করেছিলেন বিচারকরা। কারণ বাংলাদেশ হচ্ছে আইসিসির সদস্য। এমন সিদ্ধান্ত আসার ধারাবাহিকতায় এ তদন্ত শুরু হল।
আদালতের কৌঁসুলি ফাতো বেনসুদা মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে যেভাবে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে, তাতে যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে প্রাথমিক তদন্তে হাত দিয়েছে তার দফতর।
বিবিসি লিখেছে, আইসিসির এ তদন্তের পথ ধরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর দমন অভিযানের পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পথ খুলতে পারে।
কৌঁসুলি ফাতো বেনসুদা দেখবেন যে মিয়ানমারের নিপীড়নের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের ন্যায্য প্রতিপন্ন করতে সেখানে যথেষ্ট প্রমাণ আছে কিনা।
তিনি বলেন, এ প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ এগিয়ে নিতে এবং রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে সরাসরি সম্পূর্ণ প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, বেশ কিছু অপরাধ মাথায় রেখে প্রাথমিক তদন্ত করা হবে। যার মধ্যে রয়েছে, বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ, মৌলিক অধিকার হরণ, হত্যা, যৌন নিপীড়ন, গুম, বসতবাড়ি ধ্বংস ও লুট। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতন ছাড়াও অন্যান্য অমানবিক অপরাধসহ অন্য কোনো অপরাধও রাখাইনের রোহিঙ্গাদের দুর্দশার কারণ কিনা তাও তিনি বিবেচনা করে দেখবেন।
আইসিসির এই প্রাথমিক তদন্তের পর একটি আনুষ্ঠানিক তদন্ত হবে। এর পরই অপরাধীদের অভিযুক্ত করা হবে।
এদিকে একই দিন জাতিসংঘের তদন্তকারীরা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এমন অপরাধ করেছে, যার গভীরতা মাপা কঠিন। কাজেই তাদের গণহত্যার জন্য বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।