এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য সব রাজনৈতিক দলের সম্মতিতে অস্থায়ী সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল। একই সঙ্গে নির্বাচনের আগে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেয়ার দাবি জানিয়েছে তারা। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তুলে ধরা হয়।
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল। সংবাদ সম্মেলনে প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি বদরুদ্দীন উমর বলেন, আওয়ামী লীগ একবার বিদায় হলে জীবনেও আর ফিরে আসতে পারবে না। যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে, এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হলেও আওয়ামী লীগের অবস্থা মালদ্বীপের চেয়ে কঠিন হবে।
তারা আরো বেশি বিপদের মধ্যে পড়বে। অস্থায়ী সরকারের ফর্মুলা কী হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বদরুদ্দীন উমর ১৯৯০ সালের মতো সরকার গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, ৯০ সালে কীভাবে হয়েছিল? সেটা কি সংবিধানে ছিল? জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন সংগঠনটির সম্পাদক ফয়জুল হাকিম। তিনি বলেন, দেশে আজ জনগণের সভা-সমাবেশ ও স্বাধীন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কার্যত কেড়ে নেয়া হয়েছে। সংবিধানে সভা-সমাবেশ করার স্বীকৃতি থাকলেও পুলিশের পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও সমাবেশ করা যায় না।
এমন কি ঘরে বসে কোনো বৈঠক করলেও পুলিশের হয়রানির শিকার হতে হয়। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করেছে। সভা সমাবেশ পুলিশি বাধা, এনকাউন্টার, ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুম সমাজে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশের বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে ঢাকাসহ সারা দেশে শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ বলে রাস্তায় নেমে আসে। ছাত্র-ছাত্রীদের প্রবল আন্দোলন ও জনগণের দাবি সত্ত্বেও সরকার নৌমন্ত্রীকে বহিষ্কার করেনি। নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন এবং সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সরকার যেভাবে দমন করেছে।
তা জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন ও নির্বাচন কমিশন সংস্কার করতে হবে এবং জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে বলে রাজনৈতিক দলগুলো দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার এই গণদাবিকে উপেক্ষা করে এক তরফা নির্বাচনের দিকে হাঁটছে। জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি বদরুদ্দিন উমরের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিমসহ নেতাকর্মীরা।