এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : দুই দফা পিছিয়ে আগামীকাল রোববার রাজধানীতে সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। ঢাকা মহানগর পুলিশের অনুরোধে শনিবারের বদলে রোববার সমাবেশ করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। ওই দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে মৌখিক আশ্বাস পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। তবে, ডিএমপির পক্ষ থেকে স্পষ্ট কিছু জানানো হয়নি। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ রাজধানীতে ১৪ দলের কর্মী সমাবেশ হচ্ছে মহানগর নাট্যমঞ্চে। যদিও ১৪ দলের পক্ষ থেকে মাঝে নাগরিক সমাবেশ করার কথা জানানো হয়েছিল।
একই দিন সমাবেশ ডাকায় বিএনপিকে একদিন পিছিয়ে রোববার সমাবেশ করার পরামর্শ দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ। বিএনপির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা মানবজমিনকে জানান, আমাদের দলের পক্ষ থেকে প্রথমে ২৭শে সেপ্টেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চাইলে ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়- সেদিন কর্মদিবস থাকায় অনুমতি দেয়া যাবে না।
পরে তাদের পরামর্শে ২৯শে সেপ্টেম্বর শনিবার সরকারি ছুটির দিনে সমাবেশ করার জন্য অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়। তবে, একই দিনে রাজধানীতে সরকারি দলের বড় সভা থাকায় সংঘাতের আশঙ্কায় বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি ডিএমপি। বিএনপির প্রতিনিধি দলকে শনিবার সকালে ডিএমপির সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গিয়ে আগামীকাল রোববার সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ করার অনুমতি চাইতে বলা হয়।
বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম বলেন, আমরা দলের পক্ষ থেকে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। কিন্তু রোববার সমাবেশ করার অনুমতি চাওয়ার জন্য আজ শনিবার সকালে যেতে বলা হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আগামীকাল রোববার বিএনপিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হবে। সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দলের পক্ষ থেকে ২৭শে সেপ্টেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার জন্য ডিএমপিতে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেদিন কর্মদিবস হওয়ায় তারা সমাবেশের অনুমতি দেননি। ২৯শে সেপ্টেম্বর সরকারি ছুটির দিনে সমাবেশ করার আবেদন করতে বলা হয়। কিন্তু একই দিন আওয়ামী লীগের কর্মসূচি থাকায় হঠাৎ আমাদের জানিয়ে দেয়া হয় এদিন সমাবেশ করতে দেয়া হবে না। আবার আজ শনিবার সকালে অনুমতির জন্য যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল সকালে অনুমতির জন্য দেখা করবে। আশা করি কাল রোববার সমাবেশ করার জন্য আমরা অনুমতি পাব। আমরা সমাবেশের সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। ব্যাপক জনসমাগমের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এদিকে, রোববারের সমাবেশ থেকে বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে পরিষ্কার বার্তা দেবে বলে জানা গেছে। সমাবেশে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দলের চিন্তা ও অবস্থান পরিষ্কারভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করবে দলটি। সমাবেশ থেকে সরকারের প্রতি যেমন দাবি জানানো হবে তেমনি জাতীয় ঐক্যে আগ্রহী দলগুলোর জন্যও বার্তা থাকবে। ইতিমধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সমাবেশ থেকে আগামী দিনের করণীয় নিয়ে নীতি নির্ধারণী বার্তা দেয়া হবে। অন্যদিকে, বিএনপির ব্যানারে সমাবেশ আয়োজন করা হলেও ২০ দলীয় জোটের শরীক দলগুলোসহ জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত দলগুলোকেও আমন্ত্রণ জানানো হবে। এই লক্ষ্যে গত ২৫শে সেপ্টেম্বর যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি হিসেবে দলের ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্টের নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। অন্যদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ গত কয়েকদিন ধরে বলে আসছেন- সমাবেশের পর থেকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে কর্মসূচি দেয়া শুরু হবে। সমাবেশ থেকে আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রাম ও কর্মসূচির বিষয়ে পরিষ্কার বার্তা দেয়া হবে।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী মানবজমিনকে বলেন, সমাবেশে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ কয়েক দফা দাবি দাওয়া তুলে ধরা হবে। এই মুহূর্তে জাতির সামনে আমাদের কিছু বার্তা উত্থাপন করা দরকার। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের দাবি দাওয়া কি, বক্তব্য কি, এই মুহূর্তে কি করা উচিৎ সেগুলো আমরা সমাবেশে তুলে ধরব। একই সঙ্গে সরকারের কতটুকু শুভ বুদ্ধির উদয় হলো, তারা কি করতে চায় এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করব। এদিকে, সমাবেশ সফল করতে ঢাকা মহানগরী বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সমাবেশে ঢাকার আশপাশের এলাকার নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিতে পারেন। সূত্র : মানবজমিন ।