এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় ‘আওয়ামী লীগের’ দ্বন্দ্বের জেরে হামলায় দলটির স্থানীয় দুই নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন; আহত হয়েছেন এক নেতা।
সোমবার বিকালে দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদে এই ঘটনা ঘটে বলে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় জানিয়েছেন।
নিহতরা হলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী শুকুর শেখ (৪২) এবং দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী দিহিদার।
আহত বাবলু শেখ দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন তাঁতী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক। তাকে প্রথমে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলামসহ দুইজনকে আটক করেছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) পংকজ চন্দ্র রায় বলেন, বিকালে দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফকির শহীদুল ইসলাম তার পরিষদে বসে ছিলেন।
চেয়ারম্যান ফকির শহীদুল ইসলামের লোকজনের বরাত দিয়ে এসপি বলেন, বোরকা পরিহিত তিন-চারজন চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে ঢুকে তার উপর হামলার চেষ্টা করে। এ সময় চেয়ারম্যানের সমর্থকরা ছুটে এসে তাদের ধরে ফেলে এবং ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে পাল্টা হামলা চালায়।
“হামলায় শুকুর শেখ ঘটনাস্থলে মারা যান। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান আনছার আলী দিহিদার।”
পুলিশ ঘটনার সত্যতা উদঘাটন করতে চেয়ারম্যান ফকির শহীদুল ইসলামসহ দুজনকে আটক করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে এসপি জানান।
ইউপি চেয়ারম্যান ফকির শহীদুল ইসলাম স্থানীয় রাজনৈতিক বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে এ হামলা করিয়েছেন বলে হামলায় আহতেএক নেতার দাবি।
হামলায় আহত দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন তাঁতী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক বাবলু শেখ সাংবাদিকদের বলেন, দৈবজ্ঞহাটি ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুলের সঙ্গে স্থানীয়ভাবে তাদের রাজনৈতিক বিরোধ রয়েছে। সেই বিরোধের জেরে সোমবার বিকালে চেয়ারম্যান ফকির শহীদুল ইসলামের অস্ত্রধারী ক্যাডাররা বাজার থেকে তাদের জোর করে ইউনিয়ন পরিষদে ধরে নিয়ে যায়।
“সেখানে নিয়ে আমাদের সবাইকে বোরকা পরায়। পরে আমাদের সবাইকে পরিষদ থেকে বাইরে নিয়ে এসে চেয়ারম্যান শহীদুল চিৎকার করে বলতে থাকে আমরা তাকে হত্যা করতে এসেছি। এসময় তার ক্যাডার বাহিনী ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়।”
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের চিকিৎসক শেখ রিয়াদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালে আসা সবার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের কোপের চিহ্ন রয়েছে।
“অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শুকুর শেখ নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্য দুজনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফকির শহীদুল ইসলাম নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।