এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : মালয়েশিয়ার সাবেক ফার্স্টলেডি রোসমাহ মানসুর। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের স্ত্রী। নাজিবের বিরুদ্ধে অজস্র দুর্নীতির অভিযোগ। বহুল আলোচিত রাষ্ট্রীয় তহবিল ওয়ানএমডিবি থেকে প্রায় ৭০ কোটি ডলার নিজের পকেটে পুরেছেন। এই দুর্নীতির কারণেই নির্বাচনে গোহারা হেরেছেন। ৩২টি ভিন্ন ভিন্ন অভিযোগের আসামি হিসেবে এখন জেল খাটছেন। নাজিবপত্নী রোসমাহ’র বিরুদ্ধেও অভিযোগ কম নয়। ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতিতে স্বামীর সহযোগী ছিলেন তিনি। দুর্নীতি করে রাষ্ট্রীয় সম্পদ থেকে কোটি কোটি ডলার লোপাট করেছেন। কাঁড়ি কাঁড়ি ডলার উড়িয়েছেন দামি দামি বিলাসী সামগ্রী আর গহনাগাটিতে। সেই সঙ্গে বিদেশি ব্যাংকে গচ্ছিত রেখেছেন অঢেল অর্থ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে গেছেন তিনি। পুলিশি অনুসন্ধান শেষে মুদ্রাপাচারসহ ১৭টি অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার এই আকাশসমান দুর্নীতির খবরে চোখ কপালে উঠেছে মালয়বাসীর। বিস্ময়ভরে সবাই বলছেন, নাজিবপত্নী ফার্স্টলেডি না ডাকাত লেডি!
বিবিসি জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার লোপাট নিয়ে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলোর তদন্তের পর বৃহস্পতিবার রোসমাহের বিরুদ্ধে ১৭টি অভিযোগ আনা হয়। এদিন তদন্ত কর্মকর্তারা এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ কমিশনে জমা দিয়েছেন। আগের দিন বুধবার তাকে গ্রেফতার করা হয়। জেলখানায় এক রাত কাটানোর পর বৃহস্পতিবার সকালে তাকে কুয়ালালামপুরের আদালতে নেয়া হয়। সেখানেই আইনজীবীরা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো পড়ে শোনান। সব অভিযোগেই নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন রোসমাহ।
অভিযোগ অস্বীকার করলেও রোসমাহের বিরুদ্ধে গত কয়েক মাসের তদন্তে উঠে এসেছে রোমহর্ষক সব দুর্নীতির তথ্য। গত মে মাসে নাজিবের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার সংবলিত কয়েকশ’ হাতব্যাগ জব্দ করে। পাওয়া যায় ২৮৪ বাক্সভর্তি হাতব্যাগ ও ৭২ ব্যাগভর্তি নগদ অর্থ। যার মোট আর্থিক মূল্য ২৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২ হাজার ২৩৮ কোটি ৭ লাখ টাকা। পুলিশ আরও জানিয়েছেন, জব্দ করা সম্পদের মধ্যে ১২ হাজার পিস গয়না, বিভিন্ন ব্যাগে প্রায় তিন কোটি ডলারের সমমূল্যের ২৬টি দেশের মুদ্রা, ৪২৩টি ঘড়ি এবং ২৩৪ জোড়া সানগ্লাস। এ ছাড়া নামিদামি নকশাকারদের তৈরি খুব দামি ও শৌখিন জিনিস রয়েছে। ফার্স্টলেডি হলেও ডাকাত লেডির মতোই সম্পদ জড়ো করেছেন রোসমাহ।