এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল নিয়ে ভারতে পৌঁছেছেন। নয়াদিল্লিতে রাশিয়া-ভারত সম্মেলনে যোগ দিতে দু’দিনের সফরে দিল্লি গেছেন তিনি। ভারতে পুতিনের পা পড়তেই কেঁপে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবারের এ সম্মেলনে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে ৫০০ কোটি ডলারের অস্ত্র বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর হচ্ছে। এ চুক্তির বিষয়ে আগেই ভারতকে নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি নিয়ে দুশ্চিন্তায় নয়াদিল্লি। এ সম্মেলনে সামরিক, মহাকাশ ও জ্বালানি খাতসহ ২০টি দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে দু’দেশ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পুতিন দিল্লিতে অবতরণ করেন। এরপর ৭, লোক কল্যাণ মার্গ রোডে প্রধানমন্ত্রী মোদির বাসভবনে গিয়ে তার সঙ্গে সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎ করেন। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ হায়দ্রাবাদ হাউসে দু’দেশের কূটনৈতিক পর্যায়ে বৈঠক হবে। আন্তর্জাতিক কিছু বিষয়সহ মহাকাশ গবেষণা, বিদু্যুৎ উৎপাদনসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা হবে। বেলা সাড়ে ৩টা নাগাদ ভারত-রাশিয়া বাণিজ্য সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন পুতিন।
গত বছরের সম্মেলনের পর এ পর্যন্ত চারবার সাক্ষাৎ করেছেন মোদি ও পুতিন। তার এবারের ভারত সফরের সবচেয়ে বড় দিক হল রাশিয়ার সঙ্গে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা পরিকাঠামো ট্রায়াম্ফ কেনার চুক্তি স্বাক্ষর করছে ভারত। প্রায় ৫০০ কোটি ডলারের ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তির পর ভারতের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এ নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিতে পারে ট্রাম্প প্রশাসন। সেই ঝুঁকি নিয়েও রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করছে ভারত। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র আইন করেছে, যেসব দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনবে, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। সম্প্রতি রাশিয়ার কাছ থেকে যুদ্ধবিমান কিনে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তোপে পড়েছে চীন।
টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, প্রতিরক্ষা ছাড়াও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মহাকাশ ও জ্বালানি খাত গুরুত্ব পাবে। ২০২২ সালে ভারত চাঁদে মানুষ পাঠাতে চায় বলে ঘোষণা দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ মিশন বাস্তবায়নে পুতিনের সর্বাত্মক সহায়তা কামনা করছে বিজেপি সরকার। রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র যাতে নাখোশ না হয়, সে জন্য কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। এ নিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে আলোচনা করেছেন ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আইনের ২৩১ ধারায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের মূল ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে এস-৪০০ রয়েছে। আইন অনুসারে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কোনো দেশকে বিশেষ ছাড় দিতে পারেন। যদি তা যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি না হয়। মুখপাত্র আরও বলেন, ছাড়ের সুযোগ কম।