এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : মানচিত্রে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনকে নিজের ভূখণ্ডের অংশ দেখিয়েছে মিয়ানমার। সম্প্রতি জনসংখ্যা বিষয়ক মন্ত্রণালয় দেশটির যে মানচিত্র প্রকাশ করেছে তাতে সেন্টমার্টিনকে মিয়ানমারের রঙে চিত্রিত করে তাদের দেশের ভূখণ্ড হিসেবে দেখানো হয়। এ ঘটনায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি লিখিত প্রতিবাদপত্রও দেয়া হয়। মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, রাষ্ট্রদূত বিষয়টি স্বীকার করে জানিয়েছেন, এটি ভুল হয়েছে। শনিবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমুদ্র বিষয়ক ইউনিটের প্রধান রিয়ার এডমিরাল এম খুরশেদ আলমের অফিসে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ইউ লুইন ও কে তলব করা হয়।
এ সময় তার কাছে প্রতিবাদলিপি তুলে দেয়া হয়। এক ঘণ্টার মতো রাষ্ট্রদূত সেখানে অবস্থান করে চলে যান। যাওয়ার সময় তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি।
এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও কোনো বক্তব্য দেয়া হয়নি। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রাষ্ট্রদূতের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কিসের ভিত্তিতে মিয়ানমার এ দাবি করলো? মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত আশ্বাস দেন তিনি এ বিষয়ে তার সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন।
১৯৩৭ সালে যখন মিয়ানমার স্বাধীন হয় তখন সেন্টমার্টিন ছিল বৃটিশ ভারতের অংশ। ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে তখন স্পষ্ট সীমানা টানা হয়েছিল। এরপর ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান বৃটিশদের থেকে স্বাধীনতা লাভ করলে সেন্টমার্টিন তৎকালীন পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। এরপর ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের মধ্য দিয়ে এ দ্বীপ বাংলাদেশের অংশে পরিণত হয়। এমনকি ১৯৭৪ সালে সেন্টমার্টিনকে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত দ্বীপপুঞ্জ মেনে নিয়েই মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৭ সালে যখন মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে থাকা বিরোধে বাংলাদেশ জয়ী হয় তখনো স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের অংশ। এ অবস্থায় মিয়ানমারের এ ধরনের প্রয়াসকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা সংকট থেকে চোখ সরাতেই মিয়ানমার নতুন করে এ দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করতে চাইছে বলে মনে করছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।