এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ ক্রয়চুক্তি চূড়ান্ত। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ডিঙিয়ে ইরানের তেল কেনারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লি। বারবার সতর্ক করার যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থবিরোধী পদক্ষেপ নেয়ায় ভারতকে হুমকি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বললেন, ঠেলায় পড়লে রাশিয়ার এস-৪০০ আর ইরানের তেল নয়াদিল্লির কোনো কাজেই আসবে না। সেই সঙ্গে ইঙ্গিত দিলেন, আগামী নভেম্বরের পরে তেহরান থেকে তেল কিনলেই আরোপ করা হবে নিষেধাজ্ঞা।
এনডিটিভি জানায়, এস-৪০০ কেনার জন্য ভারতকে যে শিগগিরই মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কোপে পড়তেই হচ্ছে, বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের ইঙ্গিত আর শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিদার ন্যুয়ার্টের মন্তব্য সেই আশঙ্কাকে জোরালো করল। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেন, ‘সিদ্ধান্তটা ভারতকেই নিতে হবে।’ পরদিনই ন্যুয়ার্ট বলেন, ‘ভারত তো সহযোগিতা করছে না।’
ফলে মাসখানেক আগে অস্ত্রশস্ত্র, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি বেচার জন্য চুক্তি (ক্যাটসা) করে ভারতকে সবচেয়ে কাছের দেশগুলোর তালিকায় আনলেও ইরানের তেল ও রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা কেনার দায়ে দিল্লির বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারির ভাবনা-চিন্তাটা যে ওয়াশিংটনের মাথায় রয়েছে, তা ফের স্পষ্ট হয়ে গেল। ক্যাটসার অন্যতম শর্ত ছিল, রুশ এস-৪০০ কিনলে এবং নভেম্বরের ৪ তারিখের পর ইরানের তেল কিনলে জারি হবে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। রুশ এস-৪০০ কেনার দায়ে ইতিমধ্যেই ভারতের প্রতিবেশী চীনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ওয়াশিংটন। তার পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনা শুরু হয়, এবার ভারতের বিরুদ্ধেও এমন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারি হবে কি না।
এ দিন ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ন্যুয়ার্ট বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান আমরা খুব স্পষ্টভাবেই সব দেশকে জানিয়ে দিয়েছি। কোনো দেশ রুশ এস-৪০০ কিনুক আর ইরান থেকে কেউ তেল কিনুক ৪ নভেম্বরের পর এটা আমরা চাইছি না। গত সেপ্টেম্বরে দিল্লিতে গিয়ে ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকের সময় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে তার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। আমরা শুনেছি, ভারত নভেম্বরেও ইরানের তেল কিনবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বলতে পারি, ভারত সহযোগিতা করছে না। আমরা খুব কড়া নজর রাখছি।’
গত সোমবার কেন্দ্রীয় তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান জানান, দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব তেল শোধনাগার নভেম্বরেও তেল পাওয়ার জন্য অর্ডার পাঠিয়েছে ইরানে। ন্যুয়ার্ট জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে সব দেশের সঙ্গেই আমেরিকা আলোচনা করেছে। এখনও কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছে। কারণ, যেভাবেই হোক ইরানের কাছ থেকে তেল কেনাটা বন্ধ করতে হবে।