এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : তুরস্কের সৌদি কনসুলেটেই খুন হয়েছেন সৌদি সরকারের সমালোচক হিসেবে পরিচিত খ্যাতিমান সাংবাদিক জামাল খাসোগি। ইস্তাম্বুলের ওই দূতাবাসে প্রবেশের পরই তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ এখন তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের হাতে রয়েছে। তুর্কি ও মার্কিন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাদের হাতে এমন কয়েকটি অডিও এবং ভিডিও রেকর্ড আছে, যা দিয়ে খাসোগির হত্যা সহজেই প্রমাণ করা সম্ভব। অডিও-ভিডিও ক্লিপগুলো খুব ভয়ংকর বলেও জানিয়েছেন তারা। ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক খাসোগি হত্যাকাণ্ডে আঙ্কারা ও ওয়াশিংটনের সঙ্গে রিয়াদের সম্পর্ক তিক্ততায় পৌঁছেছে। পশ্চিমাদের সঙ্গেও সৌদি আরবের সম্পর্ক হুমকির মুখে পড়েছে। এমনকি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান পশ্চিমাবিশ্বে যে ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন, সেই চেষ্টাও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। ওয়াশিংটন পোস্ট, আলজাজিরা ও বিবিসি।
খাসোগিকে কনসুলেটেই হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মার্কিন রিপাবলিকান প্রভাবশালী সিনেটর এবং বিদেশ সম্পর্কবিষয়ক প্রধান বব কর্কার। তিনি বলেন, ‘তার নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে সৌদি আরবের গোয়েন্দারাই জড়িত। তাই তাদেরই এ বিষয়টি স্পষ্ট করতে হবে।’ এ হত্যাকাণ্ডে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘও। মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেছেন, তার নিখোঁজ নিয়ে আমাদের কাছে নিরপেক্ষ কোনো তথ্য নেই। তবে মহাসচিব এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি সব সময়ই সাংবাদিকদের নিরাপত্তাকে জোরালো সমর্থন দিয়ে আসছেন। ২ অক্টোবর খাসোগি তুর্কি বাগদত্তা হাতিস চেঙ্গিসকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনসুলেটে প্রবেশ করেন। তুরস্ক এবং খাসোগির বাগদত্তার দাবি, তাকে কনসুলেট ভবনের ভেতরে হত্যা করার পর লাশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমসেরও একই দাবি। রিয়াদ এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, কিছুক্ষণ পরই খাসোগি কনসুলেট থেকে বেরিয়ে যান। এরপর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান সৌদি সরকারকে তাদের দাবির পক্ষে প্রমাণ দেয়ার আহ্বান জানান। এর আগে তুরস্কের কয়েকটি গণমাধ্যম সিসিটিভি ক্যামেরার কিছু ফুটেজ প্রকাশ করে খাসোগিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করে। শুক্রবার তুরস্ক জানিয়েছে, তাদের হাতে কনসুলেটের ভেতরের কিছু ভিডিও এবং অডিও আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তুর্কি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে আলজাজিরা জানায়, অডিওতে কনসুলেটের ভেতরের কিছু কথাবার্তা শোনা যায়, যা থেকে খাসোগি সেখানে প্রবেশের পর কী ঘটেছিল, তা অনুমান করা সম্ভব। ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সেখানে আরবি ভাষায় কয়েকজনকে কথা বলতে শোনা যাচ্ছে। তাকে কীভাবে জিজ্ঞাসাবাদ, নির্যাতন এবং হত্যা করা হয়েছে, সেটা আপনি অডিওতে শুনতে পাবেন।’ ভিডিওতে নিখোঁজ হওয়ার দিন খাসোগি কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, তা দেখানো হয়েছে বলে জানায় ওয়াশিংটন পোস্ট।