এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : কোরীয় যুদ্ধের আগেও চালু ছিল দুই কোরিয়ার সড়ক ও রেল যোগাযোগ। ১৯৫০-৫৩ সাল পর্যন্ত তিন বছর পরই বন্ধ হয়ে যায় সেটা। এভাবে প্রায় ৭০ বছর বিচ্ছিন্ন থাকার পর উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে ফের চালু হচ্ছে সড়ক ও রেল যোগাযোগ। গত কয়েক মাসের আলোচনার পর সোমবারই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে দুই দেশের সরকার। কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এ পদক্ষেপকে অন্যতম মাইলফলক মনে করা হচ্ছে। এটা প্রায় সাত দশক ধরে বিভক্ত দেশ দুটিকে ফের এক সুতোয় বাঁধবে বলে আশা দুই দেশের মানুষের।
চলতি বছরের এপ্রিলে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ও দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের মধ্যে এক ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন এই দুই নেতা। সেই সঙ্গে রেল ও সড়ক যোগাযোগের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। গত মাসেই তৃতীয় শীর্ষ বৈঠক করেন কিম ও মুন। সম্পর্কোন্নয়নের ধারাবাহিকতায় সোমবার অসামরিকায়িত অঞ্চল পানমুনজামে বৈঠকে বসে দুই দেশের প্রতিনিধি দল। বৈঠকে রেল ও সড়ক যোগাযোগের চূড়ান্ত নথিপত্র বিনিময় হয়।
রয়টার্স জানিয়েছে, আগামী নভেম্বর বা ডিসেম্বরেই সড়ক ও রেল যোগাযোগের উদ্বোধন করা হবে বলে একমত হয়েছে দুই পক্ষ। চলতি মাসের শেষের দিকেই যৌথভাবে একটি ভূমি জরিপ চালানো হবে। আগে থেকেই সিউল থেকে পিয়ংইয়ং এবং চীন সীমান্তের সিনুইজুতে যাওয়ার জন্য একটি রেললাইন বিদ্যমান রয়েছে। কোরীয় যুদ্ধের অনেক আগে বিশ শতকের গোড়ার দিকে জাপান এটি নির্মাণ করে। এর সঙ্গে আরও নতুন প্রকল্প যুক্ত হবে।
ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণ থেকে সরে এসে অর্থনৈতিক খাতে মনোযোগ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন উত্তরের নেতা কিম জং উন। দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ধীরে ধীরে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ ও বৈদেশিক বাণিজ্যের দিকে ঝুঁকছে পিয়ংইয়ং। এ জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ওয়েবসাইটও চালু করেছে তারা। দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহ্যাপ সোমবার জানায়, সম্প্রতি সম্পূর্ণ নতুন ওই ওয়েবসাইটটি চালু করা হয়েছে। ‘ফরেন ট্রেড অব ডিপিআরকে’ নামে ওয়েবসাইটটিতে উত্তর কোরিয়ার বাণিজ্য নীতি, বাণিজ্যবিষয়ক আইন-কানুন, বিভিন্ন বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের নাম, বিনিয়োগ টার্গেট এবং বিভিন্ন পণ্যদ্রব্যের তালিকা দিয়ে সাজানো হয়েছে।