এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : আগামী ২৩শে অক্টোবর সিলেট থেকে শুরু হবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের রাজনৈতিক কার্যক্রম। এমন ঘোষণার পর সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে আবেদন করে সিলেট বিএনপি’র উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। আবেদনের সময় পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া মৌখিকভাবে কাজ শুরু করার কথা বলেছেন বলে দাবি করেছেন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে থাকা সিলেট মহানগর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত সাদেক। তিনি আরো বলেন, তাদের আবেদনের কাগজটি পুলিশ কমিশনারের একটি শাখা গ্রহণও করে। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার এসএমপি’র কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাদেরকে ফোন করে বলেন, সিলেটে কোনো সমাবেশ করা যাবে না। তবে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার গোলাম কিবরিয়া জানান, তিনি বুধবার (১৭ই অক্টোবর) এমন কোনো কথা বলেননি। আর নিরাপত্তার স্বার্থে তাদেরকে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি।
সিলেট জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ জানান, সমাবেশের অনুমতির জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল গিয়ে দেখা করে এসএমপি কমিশনারের সঙ্গে। সেখানে সিলেট রেজিস্ট্রি ময়দানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের জন্য আবেদন করেন।
সে সময় ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মোক্তাদির, সাবেক এমপি দিলদার হোসেন সেলিম, কলিম উদ্দিন মিলন, সিলেট জেলা বিএনপি’র সভাপতি আবুল কাহের শামিম, সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ ও মহানগর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত সাদেক। এ সময় এসএমপি কমিশনারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পর আবেদনটি জমা দিয়ে রিসিভ কপি নিয়ে আসা হয়। কিন্তু গতকাল সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে ফোন করে বলা হয়, আগামী ২৩শে অক্টোবর কোনো ধরনের সমাবেশ করা যাবে না। ফলে সমাবেশের অনুমতি পায়নি বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মুহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব (গণমাধ্যম)। গতকাল দুপুরে আব্দুল ওয়াহাব জানান, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সমাবেশের অনুমতির জন্য পুলিশের কাছে এসেছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের অনুমতি দেয়া হয়নি।
সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত সাদেক বলেন, আগামী ২৩শে অক্টোবর সিলেটে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে আজ (গতকাল) সকালে ফোন করে সমাবেশ না করতে বলা হয়েছে। পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করার জন্য আমরা এ বিষয় নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা আশাবাদী পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি দেবে।’
তিনি আরো বলেন, আগামী ২৩শে অক্টোবর সিলেট রেজিস্ট্রি ময়দানে দুপুর ২টায় সমাবেশের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়। তাতে বলাও হয়েছিল শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করা হবে।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে কোতোয়ালি থানার ওসি মুহম্মদ সেলিম তাদেরকে ফোন করে সমাবেশ না করার কথা বলেছেন। বলেছেন সমাবেশের অনুমতি হয়নি। তবে তিনি কোনো কারণ জানাননি। কেন সমাবেশের অনুমতি দেয়া হলো না।
এসএমপি পুলিশের কোতোয়ালি থানার ওসি মুহম্মদ সেলিম মিয়া জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ঐক্যফ্র?ন্টের সভায় সি?লেটে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বুধবার রা?তে বিএনপি চেয়াপারসনের গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠ?কে আগামী ২৭শে অক্টোবর চট্টগ্রা?মে এবং ৩০শে অক্টোবর রাজশাহী?তে সমা?বেশ করার ঘোষণা দেয়া হ?য়।
জনসভার অনুমতি বাতিল করেছে পুলিশ: আ স ম রব
এদিকে, সিলেটে জনসভার অনুমতি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম উদ্যোক্তা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর গুলশানের হোটেল লেকশোরে বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকদের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
এ সময় আ স ম রব বলেন, আগামী ২৩শে অক্টোবর সিলেটে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভার অনুমতি নেয়া হয়েছিল। সে জনসভার অনুমতি পুলিশ বাতিল করেছে। কোনো একটা হলঘরে জনসভা করার অনুমতি চাওয়া হলে তা-ও দেয়া হয়নি। সিলেট থেকে কিছুক্ষণ আগে আমাকে সে খবর জানানো হয়েছে। আমরা আশা করব, আগামী নির্বাচনের আগে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির স্বার্থে ২৩ তারিখের পরে হলেও আমাদেরকে জনসভা করার অনুমতি দেয়া হবে। তা না দিলে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।