এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : জনবিস্ফোরণে দগ্ধ ভারত ও চীনের উল্টো পথে হাঁটছে দক্ষিণ কোরিয়া। ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ে উদ্বিগ্ন দেশটির সরকার।
জন্মহার কমার জন্য সরকারের একটি কমিটি দীর্ঘ কাজের সময়কেই দায়ী করেছে। বলা হচ্ছে যে, স্বামী-স্ত্রীর দিনের বেশিরভাগ সময় কর্মস্থলে কেটে যাওয়ার কারণে তাদের স্বাভাবিক মেলামেশা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আর সেটাই বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে সন্তান উৎপাদনে। অন্য একটি মত বলছে, যেহেতু দায়িত্বশীল মা-বাবা হিসেবে তারা সন্তানকে ঠিকভাবে সময় দিতে পারবেন না, তাই তারা পরিবার বাড়াতে আগ্রহী নন। তারা সন্তানদের প্রতি অবিচার করতে চান না।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির ক্রমহ্রাসমান এ সমস্যার সমাধানে কর্মীদের সাপ্তাহিক কাজের সময় কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার। সপ্তাহে ৬৮ ঘণ্টার পরিবর্তে এখন থেকে দেশটির চাকরিজীবীরা ৫২ ঘণ্টা কাজ করবেন। স্বাস্থ্যের প্রতি দৃষ্টি দেয়া, অবসাদ কাটানো এবং জন্মহার বৃদ্ধির জন্য এ নিয়ম জারি করেছে সরকার। বিশ্বের কম জন্মহারের দেশগুলোর মধ্যও ওপরের দিকে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। সরকার বলছে, অফিসে কাজের সময় কমানোর ফলে পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটানোর সুযোগ পাবেন পুরুষ ও নারীরা। ফলে জন্মহার বাড়বে বলে ধারণা করছেন দেশের নীতিনির্ধারকরা। ২০১৬ সালে কোরীয়রা গড়ে ২ হাজার ৬৯ ঘণ্টা কাজ করেছেন। দেশের প্রেসিডেন্ট মুন জ্যা ইন বলেন, আমরা নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হব। মা-বাবার সন্তানদের আরও সময় দেয়া প্রয়োজন। মুন প্রশাসন কাজের সময় কমানোর সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও বেশি কর্মী নিয়োগ করতে আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ৮০ ভাগ সংস্থাই বাড়তি কর্মী নিয়োগে নারাজ। এর আগেও প্রেসিডেন্ট মুন বলেছিলেন, অতিরিক্ত কাজের সময় থাকা কখনোই উচিত নয়। সুখী জীবন-যাপনের ক্ষেত্রে টানা কাজের সময় বড় বাধা। বিশ্রামের সুযোগ মেলে না। অর্গানাইজেশন অব ইকোনমিক কর্পোরেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইডিসি)-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়া ছাড়াও মেক্সিকো এবং কোস্টারিকায় দীর্ঘ সময় কাজ করতে হয়।