এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে সময়মতো নির্বাচন হবে। যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবেলার ক্ষমতা আওয়ামী লীগ ও সরকারের আছে। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে যারা সংশয় সৃষ্টি করতে চাচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশে যেন গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা না থাকে। আর ধারাবাহিকতা না থাকলে কিছু লোকের সুবিধা হবে। তাই তারা নির্বাচন নিয়ে সংশয় সৃষ্টি করতে চায়।’
সোমবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সম্প্রতি সৌদি আরব সফরের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি একথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কম হয়নি। কিন্তু সবকিছু মোকাবেলা করেই আমরা এগিয়ে যেতে পারছি, তার কারণ জনগণই আমাদের শক্তি। জনগণের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস আমার আছে। তাই আমার বিশ্বাস, সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে আমরা সক্ষম হব।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এখানে সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বাধীনভাবে।’ তিনি বলেন, ‘যে সময় তারা নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা দেবে, ঠিক সে সময়েই নির্বাচন হবে। আমি বিশ্বাস করি নির্বাচন সঠিক সময়ে এবং সুষ্ঠু হবে।’
প্রধানমন্ত্রী সৌদি বাদশাহ এবং সৌদি আরবে অবস্থিত দুই পবিত্র মসজিদের জিম্মাদার সালমান বিন আবদুল আজিজ আল-সৌদের আমন্ত্রণে ১৬ থেকে ১৯ অক্টোবর সৌদি আরবে ৪ দিনের সরকারি সফর করেন। সফরে সৌদি বাদশাহ এবং ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকসহ প্রধানমন্ত্রী মদিনা শরিফে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পবিত্র রওজা মোবারক জিয়ারত করেন এবং সফরসঙ্গীরা মক্কা শরিফে পবিত্র ওমরাহ পালন করেন। সফরকালে বিনিয়োগসংক্রান্ত দু’দেশের মধ্যে ৫টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই এ সফরের নানা দিক লিখিত তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর আগামী জাতীয় নির্বাচন, নির্বাচনকালীন সরকার, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন ও সংগঠনটির দাবি-দাওয়া, সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন শেখ হাসিনা।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে মন্ত্রিসভার আকার ছোট না হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বর্তমান মন্ত্রিসভায় ‘সব দলের’ প্রতিনিধিই আছেন। আর নির্বাচনকালীন সরকারের আকার ছোট করা হলে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ছোট না করলে কোনো অসুবিধা আছে কি? যুক্তরাজ্যের মতো যেসব দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র আছে, কোথাও নির্বাচনের সময় মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন আনা হয় না।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের বিষয়টি ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময় বিরোধী দলে থাকা বিএনপি নির্বাচনে আসতে রাজি হচ্ছিল না বলে তখন তাদের নির্বাচনকালীন সরকারে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তারা যে মন্ত্রণালয় চায়, সেই মন্ত্রণালয় দেয়া হবে বলেছিলাম। তারা যখন আসেনি, তখন বিভিন্ন দল নিয়ে ছোট মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছিল। আর এবারের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা (দশম সংসদ নির্বাচনে) মেজরিটি পাওয়া সত্ত্বেও প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলো থেকে মন্ত্রিসভা গঠন করেছি। এ মন্ত্রিসভায় জনগণের প্রতিনিধি যারা, তারা আছেন। যেহেতু সব দলের প্রতিনিধি আছে, জানি না এটাকে ছোট করার দরকার আছে কিনা। কাটছাঁট করার দরকার হবে কিনা। শেখ হাসিনা আরও বলেন, মন্ত্রিসভা ছোট করা হলে একজনকে কয়েকটা মন্ত্রণালয় চালাতে হবে। সে ক্ষেত্রে কোনো কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ দু-তিন মাসের জন্য থমকে যেতে পারে। এ বিষয়গুলোও ভাবতে হবে। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছি। যদি ডিমান্ড করে অপজিশন, তাহলে করব। আর না হলে কিছু করার নেই।
প্রসঙ্গ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট : নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সাধুবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এ গাছের ছাল, ও গাছের বাকল দিয়ে তৈরি। দেশে রাজনৈতিক স্বাধীনতা আছে। এখানে বিচার বিভাগ স্বাধীন, গণমাধ্যম স্বাধীন। যে কেউ ইচ্ছে করলে রাজনীতি করতে পারেন। আমি নতুন জোটকে স্বাগত জানাই।’ তিনি বলেন, নতুন জোট সফল হলে অসুবিধা কোথায়? তবে একটু লক্ষ্য রাখা দরকার, কারা কারা এক হল। কোন চরিত্রের লোক তারা। এমনকি মেয়েদের প্রতি কার কী মন্তব্য। এখানে খুনি, দুর্নীতিবাজ, মানি লন্ডারিংকারী, স্বাধীনতাবিরোধী আছে, জাতির পিতার হত্যাকারীদের মদদদাতা আছে, এমনকি যারা বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে, দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, তারা এক জায়গায় হয়েছে।
ড. কামাল হোসেনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এত নীতিকথা বলেন, তিনি তো আমাদের সংবিধান প্রণেতা। ’৭২-এর সংবিধানটা তিনি প্রণয়ন করেছিলেন। সংবিধান প্রণেতা হয়ে ড. কামাল হোসেন ’৭২-এর সংবিধানের কোনো কোনো অনুচ্ছেদে এখন আপত্তি জানান কেন? তার হাতে সৃষ্টি, তিনি এখন আবার আপত্তি করেন কি কারণে? এটা কি তার গণতান্ত্রিক চিন্তা-ভাবনার ঐতিহ্য?’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যদি সংলাপে বসার জন্য সরকারকে চিঠি দেয় তাহলে কী করবেন জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চিঠি তো পাইনি, চিঠি পেলে দেখা যাবে। কিন্তু যারা আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে, সেই খুনিদের নেতৃত্বে, দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত তার (তারেক রহমান) নেতৃত্বে ড. কামাল হোসেনগং ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এখানে আমার তো কিছু বলার নেই। বাংলাদেশের মানুষই বিচার করবে। আর বাংলাদেশের মানুষ যদি তাদের চায়, চাইবে আমার কোনো আপত্তি নেই।’ নবগঠিত জোটের সাত দফা দাবি নিয়ে প্রশ্ন করলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগে ছিল চার দফা এখন হয়েছে সাত দফা। আরও দফা হয়ে কতদূর যায় তার জন্য অপেক্ষা করে আছি। তারপর আমি আমার বক্তব্য দেব।’
সংবাদ সম্মেলনে সরকারে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেটা প্রমাণ করার দরকার ছিল যে, আমি উন্নয়ন করতে পারি দেশের, সেটা আমি করেছি। এটুকু আমরা দাবি করতে পারি। আমরা দিন বদল করতে পেরেছি। যেটুকু বাকি আছে, আরেকবার ক্ষমতায় এলে সেটুকু আমরা করতে পারব, এ বিশ্বাস আমার আছে। অন্তত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। এটুকু করতে পারব, এ বিশ্বাস আমার আছে।’ আগামী নির্বাচনে অঙ্গীকার কী, এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশকে দেখতে চাই দারিদ্র্যমুক্ত। আমার লক্ষ্য, উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত থাকবে।’
আপনারা মামলা করুন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যা করার করবে : একজন নারী সাংবাদিককে নিয়ে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন অশালীন মন্তব্য করার প্রতিবাদে দেশের নারী সাংবাদিকরা কী ভূমিকা পালন করছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে একটা মামলায় জামিন নিয়েছে, আরও মামলা তো হতে পারে। আপনারা মামলা করুন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যা করার করবে।’
হাইকোর্ট থেকে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের আগাম জামিন পাওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন একটা মামলা হয়, তখন ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়। ওয়ারেন্ট ইস্যুর সঙ্গে সঙ্গে এখানে কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর ছিল। বিষয়টি যখন বিচার বিভাগের, সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তো গিয়ে হামলা করতে পারে না। এছাড়া তিনি সেখানে আগাম জামিন চেয়েছেন। কোর্ট তাকে আগাম জামিন দিয়েছেন। তা-ও পাঁচ মাসের।’
নারী সাংবাদিক নিয়ে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের মন্তব্যের প্রতিবাদ করতে সাংবাদিকদের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি প্রকাশ্যে একজন নারী সাংবাদিককে এমন একটা জঘন্য কথা বললেন, যা সারা বাংলাদেশ কেন, সারা বিশ্ব দেখেছে, কীভাবে তিনি একজন নারী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এ কথা বললেন। এখন কোর্ট যেখানে তাকে জামিন দিয়েছেন, সেখানে আমার কিছু বলার নেই। সেক্ষেত্রে আমি বলব, আমাদের নারী সাংবাদিক যারা আছেন, তারাই বা কী করছেন? একজন (ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন) নারীর বিরুদ্ধে বলেছেন, আরও তো মামলা হতে পারে।
যাদের খুঁটিতে জোর নেই, তারাই পরগাছার মতো ছুটে বেড়ায় : সরকারের বিরুদ্ধে বিদেশে নালিশ না করে জনগণের কাছে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচন ঠেকানোর জন্য কম চেষ্টা করেনি। বিদেশি বন্ধু নিয়ে এসেও চেষ্টা করেছিল। কিন্তু নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি।’ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের কথা বলা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের খুঁটিতে জোর নেই, মাটিতে যাদের শেকড় নেই, তারা পরগাছার মতো এখানে-সেখানে ছুটে বেড়ায়।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের এত উন্নয়ন হচ্ছে, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হচ্ছে, অথচ এরা কোনো উন্নয়ন দেখে না। তারা বিদেশিদের কাছে গিয়ে শুধু নালিশই করে বেড়াচ্ছে। প্রতিটি জায়গায় দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার কাজ করছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা এখানে হাজার হাজার কথা বলে যাচ্ছে, টকশোয় কথা বলে যাচ্ছে, তারপরও বলে তারা না কি কথা বলতে পারে না। তাদের এ ধরনের নেতিবাচক কথায় বিদেশিরা প্ররোচিত হচ্ছে। বিদেশিদের দিয়ে কথা বলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেই তারা কথা বলছে।’
মানুষের শান্তিতে বসবাসের জন্য যা যা দরকার সবই করব : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষকে কেউ জ্বালিয়ে-পুডিয়ে মারবে- এমন ঘটনা প্রতিরোধে যা যা করা দরকার সবই করব। মানুষ যেন শান্তিতে বসবাস করতে পারেন, নিরাপদে বসবাস করতে পারেন, সেজন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপই নেব। যতক্ষণ বেঁচে আছি, দেশের মানুষের শান্তিতে বসবাসের জন্য যা যা করা দরকার সবই করব। তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সিলেটের মাজার থেকে নির্বাচনী প্রচারণায় নামবে, এটা খুবই ভালো কথা, তারা নির্বাচনে আসছে। তবে এর বাইরে কেউ যদি আবার অগ্নিসন্ত্রাস করতে চায়, বোমাবাজি করতে চায়, তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার তা তো করবই। বাংলাদেশের জনগণও রুখে দাঁড়াবে। আমি জনগণের প্রতি সেই আহ্বান জানাব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের (নাশকতা) ষড়যন্ত্র হলে জনগণ যেন রুখে দাঁড়ায়। তাহলে আর কেউ কিছু করতে পারবে না। জনগণের ক্ষমতায়নে আমি বিশ্বাস করি। কারণ এ দেশে জঙ্গিবাদ সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছিল। আজ দেশে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। এক্ষেত্রে গোয়েন্দা বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা সংস্থাগুলো সচেতন ছিল, সব রকমের ব্যবস্থা তারা নিয়েছে। সেই সঙ্গে দেশের মানুষও সচেতন ছিল। জনগণ সচেতন ছিল বলেই সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে জঙ্গিবাদ ও নাশকতা মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে।
পথচারীরা সচেতন হয়নি : প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্ররা আন্দোলন করল। কিন্তু এ আন্দোলন হওয়ার পরও তো মানুষ সচেতন হয়নি। এখনও গাড়ি চললে ফাঁকফোকর দিয়ে লোকজন বের হচ্ছে। দেখা গেল ফুটপাত আছে, আন্ডারপাস আছে, ফুটওভারব্রিজ আছে; কিন্তু স্কুলের ছোট ছোট বাচ্চাকে নিয়ে মায়েরা গাড়ির সামনে দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন।
তিনি বলেন, সাংবাদিকদের কাছে অনুরোধ করব সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলো খুঁজে বের করুন। ঢাকায় দুই স্কুলছাত্র নিহতের ঘটনায় বাসচালকের দোষ ছিল, সেটা স্বীকার করি। বাস তাদের ওপর উঠে যায়। কিন্তু অন্য যেসব দুর্ঘটনা হচ্ছে তারা ফুটপাতে ছিল কিনা, রাস্তায় ছিল কিনা এগুলো দেখতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেকে ড্রাইভারকে দোষ দেন। নেতাদের পিটুনি দিলেই কী চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়ে লোক দৌড়ানো বন্ধ হয়ে যাবে? যারা আন্দোলন করল, তারাই দেখি রাস্তা দিয়ে পার হচ্ছে, চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছে। অথচ কাছেই ফুটওভারব্রিজ। তারা আর বয়স্ক না, ইয়াং।
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে আরও বলেন, সড়ক আইন পাস করেছি। সবকিছু করেছি। চাইলেই তো হঠাৎ করে যানবাহন বন্ধ করে দেয়া যাবে না। যান্ত্রিক ব্যাপার, থামাতে গেলেও তো সময় লাগে। যারা রাস্তা পার হচ্ছেন তাড়াহুড়ো না করে আমাদের উচিত হাতে একটু সময় নিয়ে বের হওয়া। আপনারা এ বিষয়টি তুলে ধরেন।
বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগের নবধারা সূচিত হবে : সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সাম্প্রতিক সৌদি আরব সফরকে অত্যন্ত সফল আখ্যায়িত করে বলেছেন, এ সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগের নবধারা সূচিত হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার এ সফর দু’দেশের সম্পর্ক বৃদ্ধি বিশেষত বাংলাদেশের স্বার্থরক্ষায় সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে বলে আমার দৃঢ়বিশ্বাস।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সৌদি আরবে ইতঃপূর্বে উচ্চপর্যায়ের সফরগুলোতে সে দেশের শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়টি প্রাধান্য পেত; কিন্তু এবারের সফরে গতানুগতিক ধারার বাইরে অভিন্ন অর্থনৈতিক স্বার্থরক্ষায় কার্যকর অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা, মুসলিম বিশ্বে স্থিতিশীলতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতামূলক তৎপরতা বৃদ্ধি, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনা হয়।’
তিনি বলেন, ‘দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের শুরুতেই বাদশাহ আমাকে স্বাগত জানান। তিনি সৌদি আরবকে আমার দ্বিতীয় বাড়ি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন এখানে আপনি সব সময়ের জন্য স্বাগত।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাদশাহ বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। একপর্যায়ে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ও দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা রক্ষায় আগামীতে আমাদের সরকারের ধারাবাহিকতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।’ শেখ হাসিনা বলেন, তিনি এ সময় সৌদি আরবের বাদশাহকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে তিনি তা সাদরে গ্রহণ করেন এবং নিকট ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ ব্যক্ত করেন।