এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : ইন্দোনেশিয়ার একটি বিমান ওড়ার কিছুক্ষণ পর সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে। লায়ন এয়ারের বোয়িং-৭৩৭ এ বিমানে ১৮৯ জন যাত্রী ছিলেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে সব যাত্রী মারা গেছেন। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। সোমবার সকালে জাকার্তা বিমানবন্দর থেকে ওড়ার পর ওই উড়োজাহাজ নিখোঁজ হয় বলে জানান সরকারি কর্মকর্তারা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ২০ জনসহ ইন্দোনেশিয়া সরকারের ৪৩ জন কর্মকর্তা ছিলেন ওই বিমানে। সিএনএন জানিয়েছে, ৬টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এএফপি ও বিবিসি।
ইন্দোনেশিয়ার অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থার অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তা বামবাং সুরিয়ো সাংবাদিকদের লেন, ‘আমাদের মূল ধ্বংসাবশেষটি খুঁজে পাওয়া দরকার। এ পর্যন্ত যতগুলো দেহাংশ খুঁজে পাওয়া গেছে তার ভিত্তিতে আমার ধারণা কেউই বেঁচে নেই।’
উদ্ধারকারী সংস্থার মুখপাত্র ইউসুফ লতিফ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘উড়োজাহাজটি পানির ৩০ থেকে ৪০ মিটার গভীরে বিধ্বস্ত হয়। আমরা এর ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারে কাজ করছি।’ উদ্ধারকর্মীরা কিছু ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করেছে। তবে কেউ বেঁচে থাকার কোনো লক্ষণ পায়নি। পানি থেকে মৃতদেহের খণ্ডাংশ, যাত্রীদের পরিচয়পত্র, শিশুর জুতো ও গাড়ি চালানোর লাইসেন্সের মতো কিছু জিনিস পাওয়া গেছে।
সোমবার জাকার্তা থেকে সুমাত্রার পেংকাল পিনাং শহরে যাওয়ার জন্য উড্ডয়নের ১৩ মিনিটের মাথায় লায়ন এয়ারের ফ্লাইট জেটি-৬১০ এর সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। লায়ন এয়ারের উড়োজাহাজটি জাকার্তা থেকে রওনা হয় সকাল ৬টা ২০ মিনিটে। এক ঘণ্টার পর সেটি পেংকাল পিনাং শহরে পৌঁছানোর কথা ছিল। দু’জন পাইলট ও পাঁচজন কেবিন ক্রু মিলে
ফ্লাইট পরিচালনা করছিলেন। ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার প্রধান সুতোপো পুরো নাগরোহ টুইটে কয়েকটি ছবি পোস্ট করেছেন। এতে যাত্রীদের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জিনিস সমুদ্রে ভাসতে দেখা গেছে।
টুইটে নাগরোহর পোস্ট করা আরেকটি ভিডিওতে পানিতে উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ ও তেল ভাসতে দেখা গেছে।
এর আগে উড়োজাহাজটি নিখোঁজ হওয়ার পর এক সংবাদ সম্মেলনে বিমান সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, তিন শিশুসহ উড়োজাহাজটিতে ১৮২ জন যাত্রী ছিলেন। এ ছাড়া দু’জন পাইলট ও পাঁচজন কেবিন ক্রু ছিলেন। লায়ন এয়ার গ্র“পের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এডওয়ার্ড সাইরেইট সংবাদ সংস্থাকে বলেন, বোয়িং জেটটি মেরামতের জন্য সাময়িকভাবে নিচে নামানোর প্রয়োজন ছিল। তিনি বলেন, বালির দেনপাসারে এটি মেরামত করা হয়। এরপরই এটি উড়াল দেয় সমস্যার বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত না করেই। জাকার্তার প্রকৌশলীরা সোমবার ভোরে বিমানটির বিষয়ে নোট পেয়েছিলেন। উড্ডয়নের আগে তারা আরেকবার এটি মেরামত করেন। অবশ্য এটি উড়োজাহাজ উড্ডয়নের সাধারণ নিয়ম। ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী সুতোপো পারো নাগরোগো এক টুইট বার্তায় বলেন, উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ, মালপত্র সমুদ্রে ভাসতে দেখা গেছে।
সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ২০ মিনিটে জাকার্তা ছেড়ে যায় জেটি-৬১০ ফ্লাইটটি। এক ঘণ্টার মধ্যে পাংকাল পিনাংয়ের দেপাতি আমির বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল ফ্লাইটটির। তবে ওড়ার ১৩ মিনিটের মধ্যে কন্ট্রোল প্যানেলের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ফ্লাইটটির। শেষ মুহূর্তে পাইলটকে জাকার্তার সুকর্ন হাত্তা বিমানবন্দরে ফিরে আসতে বলা হয়। বিমানটিকে সর্বশেষ সাগর পাড়ি দিতে দেখা যায়। লায়ন এয়ার কর্তৃপক্ষ জানায়, পাইলট ও সৃহকারী পাইলট দু’জনই অভিজ্ঞ ছিলেন। এর আগে ১১ হাজার ঘণ্টা ওড়ার অভিজ্ঞতা ছিল তাদের।