এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আপত্তির মধ্যেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রস্তুতির কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকাকে জানালো মিয়ানমার। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত লুইন উ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে উপস্থিত গণমাধ্যমকে তাদের প্রস্তুতির কথা জানান। বলেন, প্রথম ধাপে ২২৬০ জন রোহিঙ্গা যাবে। এর মধ্যে প্রথম দিনে (১৫ই নভেম্বর) ১৫০ জন বাস্তুচ্যুতকে গ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রত্যাবাসনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।
রাষ্ট্রদূত জানান, ১৫ থেকে ৩০শে নভেম্বর পর্যন্ত কোনো রকম বিরতি ছাড়াই প্রতিদিন ১৫০ জন করে বাস্তুচ্যুত নারী-পুরুষ শিশু (পরিবারভিত্তিক) গ্রহণ করবে মিয়ানমার। তাদেরকে বোট বা নৌকায় করে নিয়ে যাওয়া হবে। ওই বাস্তুচ্যুতদের সীমান্ত লাগোয়া লাফেনো ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হবে। প্রত্যাবাসন সকালে হবে না বিকালে হবে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি নির্ভর করবে সাগরের অবস্থার ওপর।
সাধারণত জোয়ার-ভাটার হিসাব করেই মাঝিরা সাগর পথে চলাচল করে। তার আলোকেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হওয়ার আগে মিয়ানমার রাষ্ট্রদূত প্রত্যাবাসনের বিস্তারিত চূড়ান্ত করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অনু বিভাগের মহাপরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেন। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দূতাবাসের রাজনৈতিক শাখার দুজন কর্মকর্তাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে প্রত্যাবাসনের খুঁটিনাটি চূড়ান্ত হয়েছে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত লিউন উ বলেন, আজকের আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। আমি খুশি, আমরা প্রত্যাবাসন শুরু করতে যাচ্ছি। উল্লেখ্য, মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ এবং পুনর্বাসনমন্ত্রী উইন মিয়াত আয়ে গত রোববার ইয়াংগুনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রত্যাবাসন তথা বাস্তুচ্যুতদের গ্রহণে মিয়ানমার পুরোপুরি প্রস্তুত জানিয়ে বলেন, কোনো কারণে যদি এখন প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু না হয় অথবা এটা যদি দেরি হয়, তাহলে এর জন্য বাংলাদেশ দায়ী থাকবে। ওই মন্ত্রী বলেন, আমরা ট্রানজিট ক্যাম্প প্রস্তুত রেখেছি। সেখানে ফিরে আসা বাস্তুচ্যুতদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য এবং কাপড়-চোপড় রাখা হয়েছে। তাদের জন্য নগদ অর্থ রাখা হয়েছে। তাদের বাড়ি-ঘর তৈরির জন্য ৪২ স্থান চিহ্নিত করে রেখেছি। বাস্তুচ্যুতরা তাদের সুবিধা অনুযায়ী ওইসব স্থানের যে কোনো জায়গায় বাড়ি তৈরি করতে পারবে।