এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : প্রত্যাবাসনের পর রোহিঙ্গাদের বন্দিশিবিরে রাখা হলে তাদেরকে কোনো মানবিক সহায়তা দেবে না জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। সংস্থাটি হুশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ‘প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় যেসব রোহিঙ্গা মিয়ানমার ফিরে যাবে, তাদেরকে যদি বন্দিশিবিরে আটকে রাখা হয়, তাহলে তাদেরকে ব্যক্তিগত সহায়তা দেয়া হবে না।’ প্রত্যাবাসন শুরুর দুদিন আগে মঙ্গলবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে সংস্থাটি। এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্রও। কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মার্কিন কর্মকর্তারা একে অপরিপক্ব পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক ও কূটনৈতিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা। যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধি দল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির পরিদর্শন শেষে এ প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইনের পরিবেশ এখন নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ নয় বলে হুশিয়ারি দিয়ে আসছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ), অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা। এসব হুশিয়ারি সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হচ্ছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া। আন্তর্জাতিক কোনো পর্যবেক্ষক ছাড়াই চলতি বছরের অক্টোবর মাসেই এই প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে একমত হয় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুই হাজার রোহিঙ্গার প্রথম দলটির প্রত্যাবাসনে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমার বেশ কিছু ‘ট্রানজিট সেন্টার’ বা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করেছে। এগুলোকে ‘অস্থায়ী কেন্দ্র’ বলে দাবি করছে দেশটি। তবে রোহিঙ্গাদের অনেকের আশঙ্কা, তাদেরকে স্থায়ীভাবে রাখা হতে পারে কেন্দ্রগুলোতে। জাতিসংঘের সাম্প্রতিক রিপোর্ট মতে, এখনও যেসব রোহিঙ্গা রাখাইনে অবস্থান করছে, তাদের চলাচলের কোনো স্বাধীনতা নেই।
রোহিঙ্গা নির্যাতন ক্ষমার অযোগ্য- মাইক পেন্স : মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেছেন, রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ ক্ষমার অযোগ্য। এ নিয়ে মিয়ানমারের কোনো অজুহাতই মেনে নেয়া যায় না। বুধবার মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির সঙ্গে এক বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ওয়াশিংটনের অবস্থান তুলে ধরেন তিনি। সিঙ্গাপুরে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক এক সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠকে বসেন সু চি ও পেন্স। বৈঠকে মাইক পেন্স বলেন, রোহিঙ্গা সংকটে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে মিয়ানমারের অগ্রগতির ব্যাপারে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র।