এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : একাদশ জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণের তারিখ তিন সপ্তাহ পেছানোর দাবি জানিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গতকাল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানান। নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সংসদ ভেঙে নির্বাচন আয়োজনে ইসি’র হস্তক্ষেপসহ সুনির্দিষ্ট ১১টি সুনির্দিষ্ট দাবি উত্থাপন করা হয়। নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে ব্যর্থ হলে অনাকাঙ্ক্ষিত যে কোনো পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশন পুরোপুরি দায়ী থাকবে বলে ইসিকে সতর্ক করা হয় ঐক্যফ্রন্টের তরফে। বৈঠক শেষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, সংসদ নির্বাচন পেছানো হবে কি না, বিষয়টি নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। ইসি আমাদের নির্বাচনে সাহায্য-সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তারা বলেছেন, নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু হবে। তারা ধৈর্য্য ধরে আমাদের কথা শুনেছেন।
আশা করি তারা সহযোগিতা দেবেন।
ড. কামাল বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংঘটিত সংঘর্ষের বিষয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, এটি সরকারি বাহিনীর উৎসাহী কাজ। এ ঘটনায় ইসি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন পেছানো হবে কি না, সে বিষয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, ইসি বলেছেন- তারা বিষয়টি বিবেচনা করবেন। ব্রিফিংয়ে ইসি’র বৈঠক নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেন ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন তিন সপ্তাহ পেছানোর দাবি করেছি। তারা বলেছেন, কমিশন বৈঠকে বসে তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন। সরকারের পক্ষ থেকে দলীয় পর্যায়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের তালিকা করা হয়েছে, পত্র-পত্রিকার এমন খবরে বিষয়টি আমরা ইসিকে জানিয়েছি। তারা বলেছে এমনটি হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা আমাদের দাবিগুলো তাদের জানিয়েছি। তারা সবই শুনেছেন। এখন তারা যদি তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পূর্ণভাবে পালন করেন, তবেই ?নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে। মির্জা ফখরুল ব্রিফিংয়ে বলেন, বিরোধী দলের নির্বাচনে টিকে থাকাটা ইসি ও নির্বাচনকালীন সরকারের আচরণের ওপর নির্ভর করছে।
আমরা ইভিএম ব্যবহার করতে না করেছি। ইসি বলেছে, তারা সিটি করপোরেশন এলাকায় সীমিত আকারে এসব ব্যবহার করবে। সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে ইসি বলেছেন, তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে। তবে প্রতি কেন্দ্রেই সেনা মোতায়েন করা যায় কি না, তা ইসি বিবেচনা করবেন। মির্জা ফখরুল বলেন, গণভবনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ চলছে। এটা সরকারি ভবন। এটা প্রধানমন্ত্রী পারেন কি না, সে বিষয়ে আমরা ইসি’র দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। ইসি বলেছেন, তারা এটি খতিয়ে দেখবেন। ফখরুল বলেন, বৈঠকে জনপ্রশাসনে রদবদল, বদলি ও গায়েবি মামলা প্রভৃতি বিষয়ে ইসি’র দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও পুলিশ প্রশাসনকে ইসি’র পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়টি তারা বিবেচনা করবেন বলেও জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল। মির্জা আলমগীর বলেন, গায়েবি মামলা ও হয়রানি বন্ধের বিষয়ে আমরা পুলিশকে নির্দেশনা দেয়ার দাবি করলে সিইসি বলেছেন, শুধু রাজনৈতিক কারণে যেন হয়রানি না করা হয় সে বিষয়ে তারা পদক্ষেপ নেবেন। বিএনপি’র এই নেতা বলেন, নির্বাচনী এজেন্টদের যাতে হয়রানি না করা হয়, সে বিষয়টি ইসি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কেন্দ্র থেকে নির্বাচনের খবরাখবর সমপ্রচার নিয়ে ইসি’র সঙ্গে কথা হয়েছে।
ইসি বলেছেন, সাংবাদিকরা নির্বাচন কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। কিন্তু কেন্দ্রের ভেতরে থেকে সরাসরি সমপ্রচার করতে পারবে না। ফখরুল বলেন, আমরা ইসিকে বলেছি, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তাকে ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। ইসি বলেছেন, তারা বিষয়টি দেখবেন। ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ইসি আমাদের সব কথা শুনেছেন। প্রতিবারই শোনেন। তবে তারা কতটা পালন করবেন, তা জনগণ দেখবে। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে ইসি’র অবস্থানের কথা জানতে চান ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। গতকাল গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, উচ্চ আদালতে সাজা স্থগিত না হলে দণ্ডপ্রাপ্তরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না মর্মে রিটার্নিং অফিসারদের নির্দেশনা দিয়েছেন ইসি। ইসি’র এমন নির্দেশনা দিয়েছেন কি-না জানতে চান মওদুদ। এ সময় ইসি’র পক্ষ থেকে এমন নির্দেশনার কথা অস্বীকার করা হয়।
তখন ব্যারিস্টার মওদুদ ইসি’র উদ্দেশে বলেন, তাহলে ইসি’র উচিত এ খবরের প্রতিবাদ গণমাধ্যমে পাঠানো। বৈঠকে ইসি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, সংবিধান এবং আইন প্রদত্ত ক্ষমতা নৈতিকভাবে ব্যবহার করে একটা নির্বাচনে সব পক্ষের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার চেষ্টা নির্বাচন কমিশনের দিক থেকে একেবারেই দেখা যাচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনের সব পদক্ষেপ মূল বিরোধী দলীয় জোট, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতি অসহযোগিতামূলক এবং সরকারি দলের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট। কিছুদিন আগে হওয়া সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিরোধী দলের প্রতি নির্বাচন কমিশনের অসহযোগিতার জাজ্বল্যমান উদাহরণ। আমরা হতাশ হয়ে দেখছি নির্বাচন কমিশন সেই ধারাবাহিকতা চালিয়ে যাচ্ছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যৌক্তিক দাবি উপেক্ষা করে একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত হয়েছে অতি কম সময় হাতে রেখে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের অবশ্য পালনীয় কর্তব্য ছিল এই নির্বাচনের সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা, কিন্তু কমিশন সেটা করেনি। পূর্ববর্তী এই রেওয়াজ ভাঙার প্রতিবাদ জানাই আমরা। ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বলেন, গত মঙ্গলবার নির্বাচনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের আচরণবিধি মেনে চলাতে কঠোর হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের এই চিঠিটি এমন সময়ে দেয়া হলো যখন রাজধানীতে বিএনপি অফিসের সামনে জড়ো হওয়া নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গ করার অভিযোগ করা যায়, অপরপক্ষে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নানাভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে (নিজেদের মধ্যে মারামারিতে দুইজনের মৃত্যুসহ) দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের কাজ শেষ করেছে। এই ঘটনাটিও খুব স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে, নিরপেক্ষতার যে ন্যূনতম প্রত্যাশিত মান আছে, নির্বাচন কমিশন সেটার চাইতে অনেক দূরে।
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে ১১টি লিখিত দাবি উত্থাপন করে ঐক্যফ্রন্ট। প্রথম দাবিতে নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তিত তফসিলও প্রত্যাখ্যান করা হয়। নির্বাচন এক মাস পিছিয়ে দেয়ার দাবিতে অটল থাকার কথা জানান ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে নির্বাচন হলে সেটা বিদ্যমান আইন এবং সংবিধানের সঙ্গে কোনো রকম সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি করে না। উপরন্তু সেই ক্ষেত্রে স্কুলগুলোর বার্ষিক পরীক্ষা নির্বিঘ্নে শেষ করা, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীরা মুক্ত হয়ে নির্বাচনী কাজে যুক্ত হওয়া, বড়দিনের ছুটি কাটিয়ে দেশের খিষ্টান সম্প্রদায়ের নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ এবং বিদেশি পর্যবেক্ষকদের দেশে আসার ক্ষেত্রে সহজ পথ তৈরি হয়। বৈঠকে যুক্তি দেয়া হয়, ইসি কর্তৃক ঘোষিত বর্তমান তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত হয়েছে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার নির্ধারিত ৯০ দিন শেষ হবার এক মাস পূর্বে।
অথচ পূর্ববর্তী কয়েকটি নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত হয়েছিল এমন- ১৯৯৬ সালে নির্ধারিত ৯০ দিন সময় শেষ হবার ১৩ দিন আগে, ২০০১ সালে ১২ দিন আগে, ২০১৪ সালে ২০ দিন আগে। আমরা এটাও মনে রাখবো ২০০৮ সালে তৎকালীন ৪ দলীয় জোটের নির্বাচনে অশংগ্রহণের স্বার্থে তফসিল দুই দফা পেছানো হয়েছিল। ইভিএম প্রসঙ্গে লিখিত দাবিতে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা জানান, বিদ্যমান প্রেক্ষাপটে একাদশ সংসদ নির্বাচনে একটি কেন্দ্রেও ইভিএম ব্যবহার করা যাবে না। সেনা মোতায়েনের বিষয়ে ঐক্যফ্রন্টের দাবি, নির্বাচনের দিন দেশের সবগুলো কেন্দ্রে বিচারিক এবং গ্রেপ্তারের ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং নির্বাচনী এলাকায় টহলের দায়িত্ব দিতে হবে। নির্বাচনকালীন প্রশাসন দলীয়করণমুক্ত করার দাবি জানিয়ে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বলেন, নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন সময়ে যেসব রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় ছিলো সেই সরকারের অতি সুবিধাভোগী অথবা অতি ক্ষতিগ্রস্ত কোনো কর্মকর্তা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বা প্রশাসনে প্রভাব বিস্তারকারী কোনো দায়িত্বে থাকতে পারবেন না। খুব দ্রুত আমরা দেখতে চাই নির্বাচন কমিশন সরকারি প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করার মাধ্যমে নির্বাচনের লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি করছে।
পাশাপাশি হয়রানিমূলক মামলায় পূর্বে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের মুক্তি দেয়া এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো গ্রেপ্তার যাতে আর না হয় সেটা নির্বাচন কমিশনকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে দাবি করেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব থেকে বাদ দিয়ে রিটার্নিং এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে নির্ধারণ করার দাবি জানানো হয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে। আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসার এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেয়ার দাবিও জানানো হয়। ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বলেন, পুলিশ প্রশাসনে এবং র্যাবে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের নির্বাচনকালীন সময়ে দায়িত্ব পালনে বিরত রাখতে হবে। নিয়মিত বাহিনীর বাইরে আর কোনো সংস্থা যেন নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখার স্বার্থে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। তবে এই অজুহাতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের কোনোভাবে হয়রানি করা যাবে না। জাতীয় নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার দিন থেকে ভোট গ্রহণের দিন পর্যন্ত দেশের সকল বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে।
প্রচারণার ক্ষেত্রে নির্বাচনকালীন সময়ে সরকারি বেতার এবং টেলিভিশনে দলগুলোর জন্য সময় বরাদ্দের ক্ষেত্রে সমতা নিশ্চিত করার দাবি জানায় ঐক্যফ্রন্ট। সর্বশেষ দাবিতে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বলেন, সংসদ বহাল রেখে কোনোভাবেই নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হতে পারে না। সংসদ ভেঙে দেয়া নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার নয়, কিন্তু একটা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যে সাংবিধানিক দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপরে ন্যস্ত আছে তার পূর্বশর্ত হিসেবে নির্বাচন কমিশনের উচিত প্রধানমন্ত্রীর কাছে নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেবার আহ্বান জানানো।
ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বলেন, একটা অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কমিশনের ওপর ন্যস্ত সাংবিধানিক এবং আইনি ক্ষমতার প্রয়োগ জনগণ দেখতে চায়। কমিশন সেই ক্ষমতা প্রয়োগ না করলে জনমনে এই ধারণা পোক্ত হবে যে, নির্বাচন কমিশন তার পূর্বের ধারা বজায় রেখে সরকারি দলের আজ্ঞাবহ হয়েই থাকবে। নির্বাচনে আসার বিষয়ে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বৈঠকে বলেন, ভীষণ প্রতিকূল পরিস্থিতিতে, নির্বাচনের জন্য ন্যূনতম পরিবেশ অনুপস্থিত থাকার পরও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট দেশের গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জন্য নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে দেয়ার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। সেটা যদি না করা হয় তবে যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশন পুরোপুরি দায়ী থাকবে।
জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে নির্বাচন কমিশন তার ওপর অর্পিত সাংবিধানিক দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে বলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আশা করে। প্রসঙ্গত, নির্বাচনের তারিখ তিন সপ্তাহ পেছানোর মূল দাবি নিয়ে গতকাল ইসির সঙ্গে বৈঠক করে ঐক্যফ্রন্ট। এতে এই জোটের ১৪ নেতা অংশ নেন। বেলা সাড়ে তিনটায় ইসি কার্যালয়ে ওই বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে সিইসি কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে বৈঠকে তিন নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিব উপস্থিত ছিলেন। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, মওদুদ আহমেদ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, মোকাব্বির খান, জেএসডির আবদুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, এস এম আকরাম, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মো. মনসুর আহমদ বৈঠকে অংশ নেন।