এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : ইন্দোনেশিয়ার লায়ন এয়ারলাইন্সের বিধ্বস্ত বিমানে নিহত ১৮৯ যাত্রীর মধ্যে একজন নন্দা প্রাতমা। বিয়ে উপলক্ষে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তিনি। গত ১১ই নভেম্বর নন্দা প্রাতমা এবং তার বাগদত্তা ইন্তান সিয়ারির বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিমান দুর্ঘটনায় প্রাতমার মৃত্যু সিয়ারির সব স্বপ্নের অবসান ঘটায়। তবে যেদিন বিয়ে হওয়ার কথা ছিল, সেদিন বিয়ের সাজে এই নারী একাই ফটোশুটে অংশ নেন।
এ বিষয়ে সিয়ারি বলেন, আমি প্রাতমার শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে চেয়েছি। সাদা গাউন এবং বিয়ের আংটি সহ তোলা তার এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, যদিও আমি শোকে মুহ্যমান, আমাকে এখনো তোমার জন্য হাসতে হচ্ছে। আমি শোকাহত হতে পারি না।
বরং আমাকে শক্ত হতে হবে। যেমনটা তুমি আমাকে সবসময় বলতে।
তিনি বলেন, বিমানে ওঠার আগে প্রাতমা আমাকে মজা করে বলেছিল, তার সময়মতো আসা উচিত হবে না। আগে তোমার ছবি তোলা উচিত এবং সেগুলো আমাকে পাঠানো উচিত। এর আগে এক পোস্টে সিয়ারি জানান, তিনি তার বাগদত্তা প্রাতমাকে ১৩ বছর ধরে চেনেন। প্রাতমা তার প্রথম ভালোবাসা বলেও অভিহিত করেন।
ফটোশ্যুট করে দেয়া সেই ফটোগ্রাফারও কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে ছবির পেছনের গল্প বলেন। তিনি বলেন, এই জুটি মাধ্যমিক স্কুল থেকে একে অন্যকে চেনেন। কীভাবে তারা বিয়ের পোশাক পছন্দ করেছিলেন এবং বিমান বিধ্বস্তের সপ্তাহখানেক আগে তারা কীভাবে ছবি তোলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিমান বিধ্বস্তের পরে প্রাতমাকে ৬ই নভেম্বর তার আঙুলের ছাপের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়। এর দু’দিন পর তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে তার বাগদত্তা ও তাদের ওয়েডিং প্ল্যানার শেলিয়া পেরিয়ানা তার প্রত্যাশার কথা সকলের সামনে তুলে ধরেন।
মজা করে প্রাতমা প্রেমিকা সিয়ারিকে বলেছিলেন, ১১ই নভেম্বর যদি আমি নাও আসতে পারি, তাহলেও তুমি আমার পছন্দ করা বিয়ের গাউনটা পরবে। সুন্দর করে মেকআপ করবে এবং সাদা গোলাপ সঙ্গে নিয়ে সুন্দর ছবি তুলে আমাকে পাঠাবে।
বাড়িতে ফেরার সময় প্রাতমা ওই বিমানে ওঠেন। আর সেটা ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিধ্বস্ত হয়।