এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : এবার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার সামনেই পার্লামেন্টে লঙ্কাকাণ্ড বাধাল তার ইউনাইটেড পিপলস ফ্রিডম অ্যালায়েন্স (ইউপিএফএ) জোটের আইনপ্রণেতারা। প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতেই স্পিকারের চেয়ারে বসেন তারই দলের এমপিরা।
বরখাস্ত প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সের এমপিদের ওপর ছুড়ে মারে মরিচের গুঁড়া গোলা পানি। ছুড়ে মারেন পার্লামেন্টের চেয়ার-টেবিল, আর তাক ভাঙা বই।
শুধু তাই নয়, এতে মাথা ফেটে যায় কয়েকজন এমপির। পার্লামেন্টের জরুরি চিকিৎসা কেন্দ্রে তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়। শুক্রবার তৃতীয় দিনের অধিবেশনে নজিরবিহীন এ ঘটনা ঘটে।
এ দিন বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে অধিবেশন শুরু হয়। পার্লামেন্টে প্রবেশের সময় এমপিদের শরীর তল্লাশি করা হয়। কারণ আগের দিন বৃহস্পতিবার ছুরি নিয়ে প্রবেশ করেন বিক্রমাসিংহের ইউএনএফের দুই এমপি। এরপরই হট্টগোল শুরু করে সিরিসেনা ও রাজাপাকসের এমপিরা।
আগের দিনও একইভাবে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন ‘দুই প্রধানমন্ত্রী’র এমপিরা। আগের দিনের মতো দফায় দফায় মারামারি ও ঘুষাঘুষিও হয়। আহত এক এমপিকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
হট্টগোলে ২ ঘণ্টা দেরিতে শুরু হয় অধিবেশন। ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। ভরা পার্লামেন্টের পার্শ্ব দরজা দিয়ে প্রবেশ করেন স্পিকার জয়সুরিয়া। তাকে পাহারা দিয়ে প্রবেশ করেন ৩০ জন পুলিশ সদস্যও। হট্টগোলের মধ্যেই নিজের চেয়ারের দিকে এগিয়ে যান স্পিকার। কিন্তু ইতিমধ্যে স্পিকারের চেয়ার দখলে নেয় সিরিসেনা ও রাজাপাকসের দলের এমপিদের একটি দল।
এমপিদের দলটি তখন স্পিকার ও পুলিশের দিকে লক্ষ্য করে চেয়ার-টেবিল, বইপত্র ও মরিচের গুঁড়া গোলা পানি নিক্ষেপ করেন। মুহুর্মুহু আক্রমণ সত্ত্বেও পাল্টা কোনো আক্রমণ করেনি পুলিশ। বরং মাথার ওপর বালিশ ধরে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের চেষ্টা করেন তারা। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ চলার পর স্পিকারের চেয়ারের পাশে অস্থায়ী একটি বেঞ্চে বসে অধিবেশন শুরু করেন স্পিকার।
প্রতিপক্ষের আক্রমণ থেকে স্পিকারকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হন বিক্রমাসিংহে দলের এমপি মালিক সামারাবিক্রমা ও জামিনি জয়াবিক্রমাসহ কয়েকজন এমপি। মাথা ফেটে রক্ত ঝরতে দেখা যায় অনেকের। পার্লামেন্টেই চিকিৎসা দেয়া হয় তাদের। পুরো ঘটনাজুড়ে পার্লামেন্টে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা। অবিশ্বাস্য এ দৃশ্যগুলো তার চোখের সামনেই ঘটেছে কিন্তু কিছুই বলেননি তিনি।
বৃহস্পতিবার রাতের বৈঠকে প্রেসিডেন্টের দাবি অনুযায়ী নজিরবিহীন এ হট্টগোলের মাঝেও তৃতীয়বারের মতো আস্থা ভোট পরিচালনা করেন স্পিকার। এবারও নিজের পরাজয় টের পেয়ে চুপিসারে পার্লামেন্ট থেকে বের হয়ে যান রাজাপাকসে। তার বিরুদ্ধে বুধবার গৃহীত অনাস্থা প্রস্তাব ফের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পাস হয়।