এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির কারণে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আভিগদর লিবারম্যান পদত্যাগ করেছেন। তার পদত্যাগের পরপরই লিবারম্যানের দল ইসরাইল বেইতেনুও ক্ষমতাসীন জোট থেকে সরে যায়। এতে বেকায়দায় পড়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
আগাম নির্বাচন ঠেকাতে সরকারের অন্য অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনাও শুরু করেছেন লিকুদ পার্টির এ শীর্ষ নেতা। রোববার জোট সরকারের আরেক শরিক দল কুলানু পার্টির নেতা অর্থমন্ত্রী মোশে কালনের সঙ্গেও বৈঠক করেন নেতানিয়াহু। সরকার বাঁচাতে একে নেতানিয়াহুর শেষচেষ্টা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। খবর বিবিসির।
গত সপ্তাহে তিনদিনের সংঘর্ষের পর হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির জেরে বুধবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিবারম্যানের পদত্যাগের পরই লিকুদ নেতৃত্বাধীন জোট সরকারে বিবাদ ?শুরু হয়। লিবারম্যানের দল ইসরাইল বেইতেনুও ক্ষমতাসীনদের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়। ১২০ আসনের পার্লামেন্টে দলটির পাঁচ এমপি রয়েছে।
এতে ইসরাইলি পার্লামেন্ট নেসেটে ক্ষমতাসীনদের অবস্থান ১ ভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতায় নেমে আসে।
জোটের ঐক্য ঠিক রাখতে নেতানিয়াহু শুক্রবার শরিক দল হাবাইয়িত হায়েহুদির নেতা নাফতালি বেনেতের সঙ্গে বৈঠক করেন। বেনেত সেখানে নিজেই প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ চেয়ে বসলে আলোচনা ভেস্তে যায়। হাবাইয়িত হায়েহুদির এ নেতা পরে তাকে মন্ত্রী না বানালে তার দলও ক্ষমতাসীন জোট ছাড়বে বলে হুশিয়ারি দেন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী হতে পারলে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করারও প্রতিশ্র“তি আছে বেনেতের। তিনি বলেন, ‘হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসরাইল আবারও জিততে শুরু করবে।’ বেনেত এর মধ্যেই আগাম নির্বাচন দিতে আহ্বান জানিয়েছেন, নেতানিয়াহু তাতে কান দেননি। কালনও নতুন নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
পার্লামেন্টে দলটির আট এমপি রয়েছে। পার্লামেন্টে কুলানু পার্টির রয়েছে ১০ জন এমপি।
এ দু’জন তাদের দল নিয়ে সরে গেলে নেতানিয়াহুকে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের পথেই হাঁটতে হবে, অনুমান বিশ্লেষকদের। স্বাভাবিকভাবে ২০১৯ সালের নভেম্বরে নির্বাচন হওয়ার কথা। দুর্নীতির বেশ কয়েকটি অভিযোগ ঘিরে এমনিতেই ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। নির্বাচন হলে তা তাকে আরও সমস্যায় ফেলতে পারে বলেও ধারণা অনেকের।
ইসরাইলিদের মধ্যে নেতানিয়াহু ও লিকুদ পার্টির জনপ্রিয়তা এখনও বেশি বলে জানাচ্ছে কয়েকটি জরিপ। কিন্তু আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালু থাকায় দেশটিতে একক কোনো দলের পক্ষে সরকার গঠন বেশ কঠিন। নেতানিয়াহু এ নিয়ে চারটি নির্বাচনে জিতেছেন।
আগামী বছরের জুন পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকলে তিনি ইসরাইলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন-গুরিয়নকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে বেশিদিন দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকার গৌরব অর্জন করবেন।