এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : বাংলাদেশে গার্মেন্ট শিল্পের নিরাপত্তার মান উন্নত করতে কাজ করছে অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি। তবে আগামী ৩০ শে নভেম্বর তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে নির্দেশনা রয়েছে হাইকোর্টের। যদি সেই নির্দেশমতো অ্যাকর্ডের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় তাহলে তা হবে বৈশ্বিক ফ্যাশন বিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি হুঁশিয়ারি। এতে তারা কিছু কারখানা থেকে পোশাক নেয়া বন্ধ করে দিতে পারেন। ডিসেম্বরে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি নির্বাচনকে সামনে রেখে একে তৈরি পোশাক খাতের জন্য একটি হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বাংলাদেশে অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটির উপ পরিচালক জোরিস ওল্ডেনজাইয়েল বলেছেন, বাংলাদেশে অ্যাকর্ডের একটি লিয়াজোঁ অফিস বন্ধ করে দেয়ার পরিণাম হবে উল্লেখযোগ্য। এর প্রভাব হবে তাৎক্ষণিক ও ধ্বংসাত্মক। ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ট্রাজেডির পর বাংলাদেশের গার্মেন্ট খাতে কাজ করছে অ্যাকর্ড।
৫ বছরের জন্য এই খাতের নিরাপত্তার জন্য আইনগত বাধ্যবাধকতায় স্বাক্ষর করে বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান জারা মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ইন্ডিটেক্স এবং এইচঅ্যান্ডএম সহ কমপক্ষে ২০০ প্রতিষ্ঠান।
নিরাপত্তার মান ঠিকঠাক করতে এবং অ্যাকর্ডের কাছ থেকে কাজ বুঝে নেয়ার জন্য একটি জাতীয় রেগুলেটরি বোর্ড গঠনে সহায়তার জন্য তাদের অ্যাকর্ডের কাজের মেয়াদ বাড়াতে সম্মত হয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু হাইকোট তাদেরকে ৩০ শে নভেম্বরের মধ্যে সব বন্ধ করে দিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জোরিস ওল্ডেনজাইয়েল বলেছেন, অ্যাকর্ডকে অপরিণত অবস্থায় বন্ধ করে দেয়ার মানে হবে অনিরাপদ পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের ফেলে দেয়া। আর নিরাপদ শিল্প থেকে পোশাক কেনার ক্ষেত্রে ব্রান্ডগুলোর সক্ষমতা তাতে হবে বিপন্ন।
উল্লেখ্য, শ্রমিকদের কম বেতন হওয়ার কারণে চীনের পর গার্মেন্ট শিল্পে বাংলাদেশ হলো বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ বাজার। এখানে ৪০০০ কারখানায় কাজ করেন প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক। এ শিল্প বছরে ৩০০০ কোটি ডলারের বেশি পণ্য রপ্তানি করে। তার বেশির ভাগই যায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে। মোট যে পরিমাণ পোশাক কেনে ফ্যাশন গ্রুপ এসপ্রিট তার মধ্যে এক তৃতীয়াংশই যায় বাংলাদেশ থেকে। তারা তাদের এসব কারখানার কাছে এরই মধ্যে লিখিত চিঠি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ঢাকায় অ্যাকর্ডের অফিস বন্ধ করে দেয়ার ফলে বস্ত্র শিল্পে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট হবে।
উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত বাংলাদেশে দুই হাজারের বেশি কারখানা পরিদর্শন করেছে অ্যাকর্ড। অবকাঠামো ও অগ্নিঝুঁকির বিষয়ে দেড় লাখ পরিকল্পনা গ্রহণে সহায়তা করেছে। এসব সমস্যার মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগের দিকে দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। এখনও অনেক সমস্যা রয়ে গেছে। একটি কারখানা মালিকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ঢাকায় অ্যাকর্ডের অফিস বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। মামলা করা ওই গার্মেন্ট মালিক তার কারখানার নিরাপত্তা নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ আছে। তিনি এমন দাবি করেছিলেন। এ জন্য তাকে অ্যাকর্ডের সঙ্গে কাজ করা থেকে বিরত রাখা হয়।