এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : ভোটের দিন ভোট কক্ষের ভেতর ভিডিও বা স্থিরচিত্র ধারণ করা অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে। শুক্রবার নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে ‘ভোটকেন্দ্রে প্রবেশাধিকার, পোলিং এজেন্ট, পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। নির্বাচনকে সামনে রেখে গতকাল প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় দিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী, বগুড়া ও মেহেরপুর জেলার সরকারি কর্মকর্তারা অংশ নেন।
ভোটের দিনে একটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের কার কী ভূমিকা হবে, ভোট সুষ্ঠু করতে কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে- প্রশিক্ষকদের এ বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা দেন ইসির যুগ্ম সচিব (অর্থ ও প্রশাসন) কামরুল হাসান। তিনি বলেন, ভোট কক্ষে একজন ভোটার প্রবেশ করার পর প্রথমে তার পরিচয় নিশ্চিত হতে হবে। ভোটারের নাম সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের ভোটার তালিকায় থাকলে ব্যালট পেপারের মুড়িতে তার আঙুলের ছাপ রেখে ভোটারকে ব্যালট পেপার সরবরাহ করতে হবে। এরপর ভোটার ভোটগ্রহণের গোপন কক্ষে গিয়ে তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। গোপন কক্ষে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারাসহ অন্য কারোরই প্রবেশ অধিকার থাকবে না।
কেবল দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ভোটারকে সহায়তার জন্য ভোটার তার পছন্দের একজনকে সঙ্গে রাখতে পারবেন।
তিনি বলেন, কেউ জাল ভোট দিলে বা দেয়ার চেষ্টা করলে পিজাইডিং বা সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের প্রথম কাজ হচ্ছে তাকে নিবৃত্ত করা। এরপর তাৎক্ষণিকভাবে জাল ভোট প্রদানকারী ব্যক্তিকে দায়িত্বরত পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত (জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) ডেকে তার শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রশিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা এক স্থানে দীর্ঘক্ষণ থাকতে পারবেন না। পর্যবেক্ষকরা ভোট কেন্দ্রের গোপন কক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন না। প্রিজাইডিং অফিসাররা পর্যবেক্ষকদের সাক্ষাৎকার দিতে পারবেন না। ভোটকেন্দ্রে থাকা বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা যেন কোনো ভোটদান উপকরণে হাত দিতে না পারে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি দেয়ার জন্য পরামর্শ দেন কামরুল হাসান। ইসির এই যুগ্ম সচিব বলেন, পোলিং এজেন্টরা কোনো ভোটদান উপকরণে হাত দিবেন না। সবচেয়ে ভালো হয়, তাদের বসার জায়গা থেকে তারা যদি বেশি হাঁটাচলা না করেন। অন্যের ভোটদানে যেন কোনোভাবে তারা সমস্যা সৃষ্টি না করেন সেদিকে আপনারা খেয়াল রাখবেন। তারা যেন নিজ দলের হয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাতে না পারে, সেদিকেও কড়া নজর দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
ব্যালট পেপারে পোলিং এজেন্টরা যেন কোনোভাবে হাত দিতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখার নির্দেশনা দিয়ে কামরুল হাসান বলেন, পোলিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার ব্যতীত কেউ ব্যালট পেপারে হাত দিতে পারবেন না। পোলিং এজেন্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ব্যালট গণনার কাজ করতে চাইতে পারেন, কিন্তু কোনোভাবেই তাদের ব্যালটে হাত দিতে দেয়া যাবে না। এতে যেকোনো ধরনের সমস্যা হতে পারে। কেউ যেন ব্যালট পেপার চুরি করতে না পারে সেদিকেও সতর্কতা অবলম্বন করাতে বলেন তিনি। পোলিং এজেন্টরা ভোটকেন্দ্র থেকে বের হতে হলে অবশ্যই প্রিজাইডিং অফিসারের অনুমতি নিতে হবে বলে জানান নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফরহাদ হোসেন। একজন সরকারি কর্মকর্তার প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পোলিং এজেন্ট ভোটকেন্দ্র থেকে যে কোনো কারণে বাইরে বের হতে হলে তাকে প্রিজাইডিং অফিসারের অনুমতি নিয়ে যেতে হবে নইলে সে তাকে বের করে দেয়ার অভিযোগ করতে পারেন।