এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় সরকারের মধ্যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। গতকাল বুধবার বিকালে পুরানা পল্টনে ফ্রন্টের নতুন কেন্দ্রীয় কার্যালয় উদ্বোধনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। ড. কামাল বলেন, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির মতো এবারও একটি যেন-তেন নির্বাচন করার পরিকল্পনা ছিল সরকারের। কিন্তু যখনই আমরা নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম তখন তাদের মধ্যে অস্থিরতা শুরু হলো।
তিনি বলেন, এখন দেশে কোনো সংসদই নেই। যাদের সংসদ সদস্য বলা হচ্ছে তারা সবাই অনির্বাচিত। তারা স্বঘোষিত সংসদ সদস্য। এটাকে কোনো নির্বাচিত সংসদ বলা যায় না।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে দেশের মালিকানা জনগণের হাতে নেই। তাই দেশের মালিকানা পুনরুদ্ধার করতে জনগণকেই মাঠে থাকতে হবে। নির্বাচনের দিন বা তার আগে পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনগণকে আরও সক্রিয় থাকতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো অপচেষ্টা চালানো হলে তা মোকাবিলা করতে হবে। জনগণ সক্রিয় থাকলে ৩০শে ডিসেম্বর একটি ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটবে। ভোটকেন্দ্র পাহারা দেয়ার জন্য দেশবাশীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে ড. কামাল বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে গণতন্ত্রহীন অবস্থায় আছি। এই ঘটতি পূরণের জন্য আমরা এবার শত প্রতিকূলতার মধ্যেও নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ১০ বছর পর একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এই জন্য নির্বাচনের দিন দেশবাসীকে একটা দিন ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে হবে।
ভোটের দিন সকাল সকাল কেন্দ্রে গিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হবে। আশপাশের সবাইকে নিয়ে ভোট দিতে যেতে হবে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যেন তাদের মালিকানা ফিরে পায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। ড. কামাল বলেন, নির্বাচনে গণমাধ্যমের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোথাও কোনো সমস্যা হলে সেটা গণমাধ্যম সবাইকে জানিয়ে দেয়। আপনারা এই নির্বাচনেও সেটা করবেন। পুলিশের ব্যাপারে আপনারা বিশেষভাবে খেয়াল রাখবেন। সাংবাদিকদের পাহারাদারের ভূমিকায় থাকতে হবে। যখনই কোথাও আইন লঙ্ঘন হবে সঙ্গে সঙ্গে আপনারা দেশবাসীকে জানাবেন। তিনি বলেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। মানুষ দেশের মালিক। সেই মালিকানাটা প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত। এ সময় তিনি আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার ঘোষণা নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির কাজ এখনো চলছে। ৮ই ডিসেম্বরের তারিখের মধ্যে এটা প্রকাশ করা হবে।
বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার হবে অভিন্ন। আলাদা কোনো ইশতেহার হবে না। কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, ডাকসু’র সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ, গণফোম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসিন মন্টু, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবীবুর রহমান তালুকদার বীরপ্রতীক, বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।