এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : এই গ্রামে কোনো পুরুষের প্রয়োজন নেই। গ্রামের নারীরাই পরিচালনা করছেন সবকিছু। গ্রামে প্রবেশদ্বারও পাহারা দেয় নারীরা। কোনো পুরুষকে সেখানে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না।
সিরিয়ার উত্তর-পূর্ব এলাকার জিনওয়ার গ্রাম। কয়েকশ নারী এই গ্রামে বসবাস করছেন। আইএসের হামলায় বিধ্বস্ত চারপাশের গ্রাম। মাঝখানের এই গ্রামটি রক্ষা করেছেন নারীরা।
জিনওয়ার গ্রামের এক নারী জয়নব গাবরী বলেন, আমাদের জীবনে কোনো পুরুষের প্রয়োজন নেই। আমরা বেশ ভালো আছি। যেসব নারী নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান, তাদের জন্য এটা আদর্শ জায়গা।
কিন্তু এই গ্রামের নারীরা কেন পুরুষ থেকে দূরে থাকছেন? কেন তারা গ্রামে পুরুষ প্রবেশ করতে দেন না?
জিনওয়ার গ্রামে যেসব নারী রয়েছে তাদের প্রত্যেকের জীবনে ঘটে গেছে নির্মম বাস্তবতা। কেউ আইএসের হাতে দীর্ঘদিন যৌনদাসী হয়ে বর্বরোচিত অত্যাচারের মুখোমুখি হয়েছেন। কারো স্বামী খুন হয়েছেন। কেউ কেউ স্বামী-সন্তান দুটোই হারিয়েছেন। কেউ ধর্ষণের শিকার হয়ে সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েছেন।
এমন নির্মম বাস্তবতা নিয়ে বেঁচে থাকা নারীরা এখন নিজেরাই নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান। নিজের কষ্টকে শক্তিতে রূপান্তর করছেন তারা।
জিনওয়ার গ্রামে ঢোকার পথে বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে পাহারা দেন কয়েকজন নারী। গ্রামে সন্ত্রাসীরা যেন হামলা না করতে পারে সে জন্য সতর্ক তারা।
গ্রামের নারীরা কৃষিকাজ থেকে স্কুলে পড়ানো সব কাজে পারদর্শী। স্থানীয় নারী ও আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্যে গ্রামটি তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি ঘরের দেয়ালে দেয়ালে নারী শক্তির নানা কাহিনি আঁকা হয়েছে। শরণার্থী হয়ে অন্য দেশে না পালিয়ে বরং সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করে টিকে থাকতে প্রতিজ্ঞ এই গ্রামের নারীরা।
জিনওয়ার গ্রামে স্বামীহারা এক নারী আমিরা। তিনি বলেন, আমরা নিজেরাই কৃষিকাজ করি। ফসল ফলাই। সেই ফসল রফতানিও করি। আবার সন্তান পালনও করি। পুরুষবিহীন এই ছোট গ্রামই এখন ‘শান্তির রাজধানী’ তৈরি হয়েছে। সূত্র: বিবিসি।